বেঙ্গল বিজনেস কাউন্সিলের উদ্যোগে আয়োজিত বার্ষিক বিতর্ক প্রতিযোগিতা
জ্ঞানের পরিধি বিস্তারে বিতর্কের ভূমিকা যে কতখানি গুরুত্বপূর্ণ, তা আমাদের সকলেরই জানা। যে কোনও বিষয়ের পক্ষে বিপক্ষে ধারণা যুক্তিসঙ্গতভাবে উপস্থাপনের অনন্য মাধ্যম হল বিতর্ক। পাঠ্যপুস্তক ছাড়াও বাইরের বিশাল জগৎ সম্পর্কে জানার জন্য সৃষ্টিশীল বিতর্ক প্রতিযোগিতার যথেষ্ট প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তাই ১২ অগস্ট ’২৩, কলকাতার ঐতিহাসিক আলিপুর জেল মিউজিয়াম অডিটোরিয়ামে বেঙ্গল বিজনেস কাউন্সিল বার্ষিক বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল। আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের চিন্তা ও মতাদর্শকে আদর্শ মেনে মূল অনুষ্ঠানের গতির কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছিল। এই বিতর্ক প্রতিযোগিতার মূল বিষয় ছিল ‘বাঙালি ব্যবসায়ীদের হাত ধরেই বাংলায় অর্থনৈতিক নবজাগরণের আগমন ঘটবে’।
অনুষ্ঠানের মূল বিষয়ের উপর প্রাসঙ্গিকতা রেখে বহু বিশিষ্টজনেরা এই বিতর্ক প্রতিযোগিতায় তাঁদের বক্তব্য রেখেছিলেন। মূল বিষয়ের সমর্থনে উপযুক্ত যুক্তির মাধ্যমে বক্তব্য রেখেছিলেন সুবীর ঘোষ, দীপান্বিতা গুপ্তা এবং শুভদীপ রায়। এই গুণীজনেরা তাঁদের নিজ নিজ বক্তব্যের মাধ্যমে বাংলার অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবনের সম্ভাবনাকে তুলে ধরে বেশ জোরালো যুক্তি উপস্থাপন করেছেন। অন্য দিকে এই বক্তব্যের বিপরীতে মূল্যবান দৃষ্টিভঙ্গি পেশ করে যুক্তি দিয়েছেন ইন্দ্রজিৎ লাহিড়ী, রীতি জানা, এবং দেবতোষ চট্টোপাধ্যায়।
এই বিতর্ক অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা দায়িত্বে ছিলেন কলকাতার একজন প্রখ্যাত আইনজীবী এবং হাইকোর্ট ও কাউন্সিলের আইন উপদেষ্টা সৌরভ চন্দর। ডেভিল ইউ চকলেটস- ডেমাস চকলেট থেকে বিতর্কের আহ্বায়ক হিসেবে ছিলেন মহুয়া দত্ত। বিচারকমণ্ডলীদের মধ্যে ছিলেন কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের অধ্যাপক সুমনা ঘোষ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শর্মিষ্ঠা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অ্যাডামাস ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক তনুশ্রী দত্ত। এই বিতর্ক অনুষ্ঠানের বিষয়ের সমর্থনে যুক্তি দিয়ে শ্রেষ্ঠ বক্তা হিসেবে দীপান্বিতা গুপ্তা নির্বাচিত হন। এবং বিষয়ের বিপরীতে বক্তব্য রেখে সেরা বক্তার পুরস্কার পান রীতি জানা।
বেঙ্গল বিজনেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অভিষেক আড্ডি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী এবং বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন রাজ্যের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যবসায়ীদের এই ধরনের বিতর্ক সভার মতো প্ল্যাটফর্ম প্রদান করা উচিৎ।
বেঙ্গল বিজনেস কাউন্সিলের প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক শুভাশিস দত্ত এই সংগঠনের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। এর সঙ্গেই তিনি বলেন, এমন অর্থপূর্ণ ব্যবসায়িক আলোচনার সুবিধার্থে ভবিষ্যতেও এই ধরনের অনুষ্ঠান আরও হওয়া প্রয়োজন।
বেঙ্গল বিজনেস কাউন্সিলের উদ্যোগে বার্ষিক বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বহু বিশিষ্ট ব্যবসায়ীদের উপস্থিতি দেখা গিয়েছে। এছাড়াও এই অনুষ্ঠানে উদ্যোক্তা, বুদ্ধিজীবী এবং সাংবাদিক—সহ অনেকেই নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রেখেছেন। বেঙ্গল বিজনেস কাউন্সিলের এই অনুষ্ঠানটি বাংলার অর্থনৈতিক পরিসরের অগ্রগতিতে বিশেষ অবদান রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।