—ফাইল চিত্র।
লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে সাধারণ যাত্রীদের জন্য বাংলা এবং বিহারে অমৃত ভারত ট্রেনের সূচনা হলেও ভোটের আগে আর নতুন কোনও রুটে ওই ট্রেন আর পাচ্ছে না রাজ্য। আপাতত, ওই দুই ট্রেন কেমন সাড়া পাচ্ছে এবং ট্রেন চালানোর ক্ষেত্রে সুবিধা-অসুবিধা খতিয়ে দেখে পরের দিকের ট্রেনগুলির উৎপাদন শুরু করা হবে বলে রেল সূত্রের খবর।
রাজ্যে আগামী ৭ জানুয়ারি মালদহ থেকে ওই ট্রেনের বাণিজ্যিক পরিষেবা শুরু হচ্ছে বলে রেল সূত্রের খবর। সে দিন মালদহ থেকে সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে ট্রেনটি ছেড়ে মঙ্গলবার ভোর ৩টে নাগাদ বেঙ্গালুরু পৌঁছবে। সেখান থেকে ওই দিনই দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে ট্রেনটি ছেড়ে ফিরতি পথে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় ট্রেনটি মালদহ পৌঁছবে।
রেলের দাবি, নতুন ট্রেনের সংরক্ষিত কামরার টিকিট অনলাইনে খুলে দেওয়ার পরে এর মধ্যেই তা অপেক্ষমান তালিকায় পৌঁছে গিয়েছে। আপাতত বাইশ কামরার অমৃত ভারত ট্রেন আপাতত সম্পূর্ণ ‘নন-এসি’ ট্রেন হলেও ভবিষ্যতে আয় বাড়াতে ওই ট্রেনেও চাহিদা অনুযায়ী বাতানুকূল স্লিপার কামরা জুড়ে দেওয়া হতে পারে বলে খবর। নতুন ট্রেনের ভাড়ার হার সাধারণ এক্সপ্রেস ট্রেনের থেকে সামান্য বেশি। ওই ট্রেনে সাধারণ শ্রেণিতে ৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত সাধারণ শ্রেণির ভাড়া ১৮৪ টাকা। একই দূরত্বে স্লিপার শ্রেণির ভাড়া ৩১২ টাকা। হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত দূরত্বের ক্ষেত্রে সাধারণ শ্রেণির ভাড়া ৩১৪ টাকা। স্লিপার শ্রেণিতে ওই ভাড়া ৫২৮ টাকা।
ট্রেনের রং এবং ইঞ্জিনের আদলে অনেকটা বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মতো দেখতে হলেও যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের নিরিখে লম্বা সফরে নতুন ট্রেনে যাত্রীদের বেশ কিছু অসুবিধার মুখে পড়তে হতে পারে। তার মধ্যে খাবার এবং পানীয় জল অন্যতম। দীর্ঘ পথে যাত্রীদের পাড়ি দিতে হলেও নতুন ট্রেনে কোনও প্যান্ট্রি কামরা নেই। এর আগে রেল মূলত পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা মাথায় রেখে সম্পূর্ণ অসংরক্ষিত কামরার ট্রেন অন্ত্যোদয় এক্সপ্রেস চালু করেছিল। ওই ট্রেনে পানীয় জলের ব্যবস্থা থাকলেও অমৃত ভারত এক্সপ্রেসে তাও নেই। তবে ট্রেনের ভিতরে, মোবাইল চার্জার, মালপত্র রাখার আধুনিক তাক, ভাঁজ করা যায় এমন স্ন্যাক টেবিল, জলের বোতল রাখার জায়গা, কামরার ভিতরে হাঁটার জায়গায় রেডিয়াম মার্কের মতো একাধিক সুবিধা রয়েছে। ঝাঁকুনি কমাতে কাপলিংয়ের নকশায় বদল এনে সেমি পার্মানেন্ট কাপলার বসানো হয়েছে। বাথরুমে জলের অপচয় রোধে আধুনিক কল এবং জৈব শৌচালয় বসানো হয়েছে।
এ দিন দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক আদিত্য চৌধুরী বলেন, ‘‘নতুন ট্রেনে একবারে ১৮০০ যাত্রী সফর করার সুযোগ পাবেন। এই ট্রেনের সংখ্যা ভবিষ্যতে বাড়বে। কম ভাড়ায় অনেক যাত্রী সফরের সুবিধা পাবেন।’’ এ দিন প্রধানমন্ত্রীর অযোধ্যায় রেলের একাধিক প্রকল্প এবং ট্রেন উদ্বোধনের অনুষ্ঠানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ওই উন্মাদনা ছড়িয়ে দিতে প্রস্তুতির খামতি রাখেনি রেল। অতীতে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের ধাঁচেই অমৃত ভারত ট্রেনের উদ্বোধনকে এ দিন উৎসবের চেহারা দেওয়া হয়। দুপুর সওয়া ১২ টা নাগাদ ট্রেন মালদহ থেকে ছাড়ার পরে যে সব স্টেশনে থেমেছে সেখানেই কেন্দ্রের শাসক দলের পক্ষ থেকে ট্রেনকে আড়ম্বরের সঙ্গে নতুন ট্রেনকে স্বাগত জানানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল।