অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র।
দেশের সব রাজ্যে কর্মরত আইপিএস পুলিশ আধিকারিকদের হিসাব চেয়ে পাঠাল অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সব রাজ্যের মতোই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অধীন কর্মরত আইপিএস আধিকারিকদেরও এই হিসেব দাখিল করতে বলা হয়েছে। সেই মর্মে দিল্লির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে। চিঠিতে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আগামী ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের ৩১ তারিখের মধ্যে সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে কর্মরত সব আইপিএস পুলিশ আধিকারিককে নিজেদের আয়-ব্যয়ের হিসেব জমা দিতে হবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে। হিসাব জমা দেওয়ার জন্য একটি পোর্টালের ঠিকানাও দেওয়া হয়েছে ওই চিঠিতে। এই পোর্টালে গিয়ে নিজেদের আয়-ব্যয়ের হিসেব দাখিল করতে পারবেন আইপিএস আধিকারিকরা। ইমেল মারফতও প্রশাসনের শীর্ষ পুলিশ আধিকারিকের আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দিতে পারবেন বলে জানানো হয়েছে। আয়-ব্যয়ের হিসাব দাখিলের ক্ষেত্রে কোনও রকম গড়িমসি যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বরদাস্ত করবে না, তা-ও এই চিঠিতে সোজা ভাষায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এই চিঠিই পৌঁছেছে নবান্নে।
‘অল ইন্ডিয়া সার্ভিসেস কন্ডাক্ট রুলস ১৯৬৮’-র ‘ইমমুভেবল প্রপার্টি রিটার্ন’-এর রুল ১৬-র অধীনে আইপিএস আধিকারিকদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে তাঁদের সম্পত্তি পরিমাণ জানানো যে বাধ্যতামূলক, তা-ও এই চিঠিতে উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে। যদি কোনও আইপিএস পুলিশ আধিকারিক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাঁর আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা না করতে পারেন, তা হলে তাঁকে ভিজ়িল্যান্স বিভাগের তরফ থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে না বলেও ওই চিঠিতে উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে ডিরেক্টর (পুলিশ) সুষমা চৌহান এই চিঠিটি পাঠিয়েছেন মুখ্যসচিবদের। এই চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়, সিবিআই দফতর, ক্যাবিনেট সচিব, দেশের বিভিন্ন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ডিজি-সহ আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিভাগকে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত আইপিএস পুলিশ আধিকারিকের আয়-ব্যয়ের হিসাব জানাতে বলা হয়েছে।
তবে রাজ্য প্রশাসনের একাংশ জানাচ্ছে, দেশের শীর্ষ পুলিশ মহলে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে প্রতি বছর নিয়ম করে আইপিএস আধিকারিকদের আয়-ব্যয়ের হিসাব নেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সেই পর্যায়ে দেশের সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের শীর্ষ পুলিশ আধিকারিকদের থেকে আয়-ব্যয়ের হিসাব তলব করেছে শাহের মন্ত্রক। কিন্তু প্রশাসনের অন্য অংশের মতে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সিবিআই, ইডি এবং আয়কর দফতরের হানায় যে ভাবে বেশ কিছু ক্ষেত্রে কোটি কোটি টাকার নগদ-সহ বিরাট সম্পত্তির হদিস পাওয়া গিয়েছে, তাতেই নড়েচড়ে বসেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এ ক্ষেত্রে দেশের পুলিশ প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা যে এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নন, তা তাঁদের আয়-ব্যয়ের হিসাব খতিয়ে দেখে নিশ্চিত হতে চাইছে শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।