Amit Shah

Amit Shah: লোকসভা ভোটে আসন বাড়বে বিজেপির, বাংলা দখলই আসল লক্ষ্য নয়, মন্ত্র দিয়ে গেলেন শাহ

শুক্রবারের বৈঠকে উপস্থিত বিজেপি নেতারা জানিয়েছেন, শাহের বক্তব্যে অতীতের ভোটের ফল নিয়ে কথার তুলনায় আগামী দিনের জন্য পরামর্শই ছিল বেশি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০২২ ১৬:৪৯
Share:

রাজ্য দলকে হাল না ছাড়ার পরামর্শ দিয়ে গেলেন শাহ। ফাইল চিত্র

বিধানসভা নির্বাচনে হারের পর এক বছর তিনি বাংলায় আসেননি। অমিত শাহ অবশেষে এলেন এবং বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়ে দিয়ে গেলেন, আগামী দিনে তিনি বার বারই আসবেন এই রাজ্যে। জানিয়ে দিয়ে গেলেন, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাংলা থেকে ভাল ফলের লক্ষ্যে তিনিই দায়িত্ব নেবেন আবার। ঠিক যেমন ভাবে গত লোকসভা এবং বিধানসভা ভোটের সময়ে রাজ্যকে বেশি সময় দিয়েছিলেন, তেমনটাই। বিজেপি সূত্রে খবর, তিনিই যে বাংলার হাল ধরতে চান তা স্পষ্ট করেই রাজ্য নেতৃত্বকে বুঝিয়ে দিয়েছেন শাহ। সেই সঙ্গে দাবি করেছেন, তাঁর হিসেবে ২০১৯ এর থেকেও ২০২৪ সালে বাংলা থেকে বেশি আসন পাবে বিজেপি।

Advertisement

২০১৮ থেকেই রাজ্যে নিয়মিত যাতায়াত শুরু করেন শাহ। গত লোকসভা নির্বাচনে ১৮ আসনে জয়ের পরে তিনিই আওয়াজ তুলেছিলেন— বিধানসভা ভোটে বাংলায় দু’শোর বেশি আসন পাবে বিজেপি (তাঁর স্লোগান ছিল: ইস বার দোশো পার)। কিন্তু সেই লক্ষ্যের থেকে অনেকটা দূরে থমকে যেতে হয় গেরুয়া শিবিরকে। এমন ফল কেন হয়েছিল তার কোনও বিশ্লেষণ না দিলেও, এই সফরে তিনি রাজ্য নেতাদের উদ্বুদ্ধ করেন এই বলে যে, বাংলায় বিজেপির খারাপ ফল হয়েছে বলে মনেই করে না দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ির জনসভাতেও আসনসংখ্যা তিন থেকে ৭৭-এ পৌঁছনো বড় ব্যাপার বলে দাবি করেন শাহ। এর পরে শুক্রবার বিজেপির সাংগঠনিক বৈঠকেও শাহ একই কথা বলেন দলের নেতা এবং জনপ্রতিনিধিদের। নিরাশ না হয়ে কী ভাবে শূন্য থেকে শুরু করা যায় তার পরামর্শও দিয়েছেন। বিজেপি সূত্রে খবর, রাজ্যের শীর্ষনেতাদের কিছু হোমটাস্কও দিয়ে গিয়েছেন তিনি।

শুক্রবারের বৈঠকে উপস্থিত একাধিক বিজেপি নেতা জানিয়েছেন, শাহের বক্তব্যে অতীতের ফল নিয়ে কথার থেকে আগামীতে কী কী করা দরকার সেই পরামর্শই ছিল বেশি। বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনের ফলের কথা আলোচনা করতে গিয়ে শাহ বলেন, ‘‘এই রাজ্যে ক্ষমতা দখল করাটাই আমাদের উদ্দেশ্য নয়। আসলে দেশের স্বার্থে বাংলায় দলের শক্তিবৃদ্ধি দরকার। এ রাজ্যের লাগোয়া তিনটি প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ, নেপাল, ভূটান। কাছেই চিন। এমন এক ভৌগোলিক অবস্থানে থাকা বাংলাতে দেশের স্বার্থেই জাতীয়তাবাদী শক্তির উত্থান দরকার। সেই লক্ষ্য নিয়েই আগের মতো আগামী দিনেও সবসময় রাজ্য বিজেপির পাশে থাকবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।’’ সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারীদের উপস্থিতিতে দলীয় বৈঠকে অমিত আরও বলেন, ‘‘তৃণমূল নামক পাপকে বাংলার ক্ষমতা থেকে সরাতেই হবে। এর জন্য চাই নিরন্তর লড়াই। অনেক বলিদান দিতে হবে। কিন্তু হাল ছাড়লে চলবে না।’’

Advertisement

বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে ভাল ফল করতে কী কী করতে হবে, তার রূপরেখাও দিয়েছেন শাহ। বলেছেন, এখন থেকেই বুথ কমিটি গঠনে জোর দিতে হবে। সাংসদ, বিধায়ক-সহ সব জনপ্রিতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে নিরন্তর কর্মসূচি নিতে হবে রাজ্য নেতৃত্বকে। এই ক্ষেত্রে তৃণমূলের উদাহরণও টানেন তিনি। সিপিএমের বিরুদ্ধে কী ভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লড়াই করেছিলেন তা স্মরণ করান। সঙ্গে বলেন, ‘‘আমি যখন দলের সভাপতি ছিলাম তখন বাংলায় নজর দিয়েছি। কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পরেও বারবার বাংলায় এসেছি। আগামী দিনে হয়তো মন্ত্রী না-ও থাকতে পারি কিন্তু একজন বিজেপি কর্মী হিসেবে বাংলায় বারবার আসব।’’ নিজে বার বার রাজ্যে আসবেন জানানোর পাশাপাশি বার বার শাহ এটাও বুঝিয়ে দেন যে, বাংলার লড়াই রাজ্যের শক্তি দিয়েই লড়তে হবে। দিল্লির মুখাপেক্ষী হলে হবে না। তবে রাজ্য লড়াইয়ে থাকলে দিল্লি অবশ্যই পাশে থাকবে বলে কথা দিয়ে যান অমিত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement