বিবেকানন্দ-নেতাজির জন্মজয়ন্তী উদ্যাপন ‘উপলক্ষ’ মাত্র, আসলে অমিতের প্রতিটি বঙ্গসফরের লক্ষ্য ‘নীলবাড়ি’ দখলের লড়াইকে গতি দেওয়া। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
আগামী ১২ জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে আবার বাংলায় আসতে পারেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে ওই দিনই হাওড়ায় জনসভা করার কথা তাঁর। সেই সভায় কে কে থাকতে পারেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। সম্প্রতি দু’দিনের বঙ্গসফর সেরে ফিরেছেন অমিত। তবে জানুয়ারির এই সফরে তিনি বাংলায় কত দিন থাকবেন, তা এখনও নির্ধারিত হয়নি। যদিও বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, এর পর অমিতের বাংলায় থাকার দিনের সংখ্যা বাড়বে।
সম্প্রতি অমিতও জানিয়েছিলেন, জানুয়ারি থেকে প্রতি মাসে রাজ্যে আসবেন তিনি। এর পর দিলীপ জানান, রাজ্যে অমিতের থাকার সময়সীমা বাড়তে চলেছে। কোনও কোনও সফরে ৩ দিন, ৪ দিন, এমনকি ৭ দিনও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলায় থাকতে পারেন। বিবেকানন্দের জন্মদিনটি মাথায় রেখেই ১২ জানুয়ারি অমিত তাঁর পরবর্তী বঙ্গসফরের দিন নির্ধারণ করে থাকতে পারেন বলে সূত্রের খবর।
সোমবারই নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫ তম জন্মজয়ন্তী উদযাপন নিয়ে বাংলায় টুইট করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আগামী ২৩ জানুয়ারি দিনটি বিশেষ ভাবে পালন করার কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। নেতাজির জন্মজয়ন্তী উদযাপনে একটি কমিটি তৈরির কথাও জানান তিনি। তার মাথায় থাকছেন অমিত। ১২ জানুয়ারি অমিত রাজ্যে এলে নেতাজির জন্মজয়ন্তী উদযাপন নিয়েও তিনি পৃথক বৈঠক করতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। তবে বিবেকানন্দ-নেতাজির জন্মজয়ন্তী উদ্যাপন ‘উপলক্ষ’ মাত্র, আসলে অমিতের প্রতিটি বঙ্গসফরের লক্ষ্য ‘নীলবাড়ি’ দখলের লড়াইকে গতি দেওয়া।
শুধু অমিতই নন, পশ্চিমবঙ্গে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের লক্ষ্যে তাঁর ‘সপ্তরথী’ও বঙ্গসফরের সময়সীমা বাড়াবেন বলেই সূত্রের খবর। এই ‘সপ্তরথী’র মধ্যে রয়েছেন উত্তর প্রদেশের উপ-মুখ্যমন্ত্রী কেশবপ্রসাদ মৌর্য-সহ আরও ৬ নেতা। তাঁদের মধ্যে পাঁচজনই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। অর্জুন মুন্ডা, সঞ্জীবকুমার বালিয়ান, গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত, মুকেশ মাণ্ডবিয়া এবং প্রসাদ সিংহ পটেল। এ ছাড়াও রয়েছেন মধ্যপ্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র।
বিজেপি সূত্রের খবর, এই ৭ জনের উপর রাজ্যের ৬টি করে লোকসভা কেন্দ্রের দায়িত্ব দিয়েছেন অমিত। অমিতের সঙ্গে এঁদেরও বাংলায় সময়সীমা বাড়ানোর কথা।
গত শনিবার রাতে রাজারহাটের হোটেলে নির্বাচনী কৌশল নিয়ে যে বৈঠক করেন অমিত, সেখানে বিজেপি-র রাজ্য নেতৃত্বের পাশাপাশি এই নেতারাও হাজির ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। এ ছাড়াও ছিলেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। ধর্মেন্দ্র ওই ৭ জনের তালিকায় না থাকলেও নির্বাচনের আগে তাঁকে ঘনঘন বাংলায় আসতে বলেছেন অমিত। আর মূল দায়িত্বপ্রাপ্ত ৭ জনকে বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে বাংলায় আসতে বলা হয়েছে। অমিতের নির্দেশমতো, সপ্তাহের বাকি দিন দিল্লি বা নিজের রাজ্যে কাজ থাকলেও প্রতি শনি ও রবিবার ওই ৭ নেতা বাংলায় সফর করবেন। রাজ্য বিজেপি-কে সেইমতোই কর্মসূচি ঠিক করতে হবে।
নিজের বাছাই-করা সেনানীদের সঙ্গে নিজেও বাংলায় বেশি সময় দিতে চান অমিত। সে জন্যই বিবেকানন্দের জন্মদিনে তিনি আবার বাংলায় আসতে পারেন বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন:আল কায়দা জঙ্গি যোগ সন্দেহে এনআইএর হাতে ধৃত ১ জলঙ্গিতে
আরও পড়ুন:হাথরস কাণ্ডে গাফিলতি ছিল পুলিশের, দাবি সিবিআই চার্জশিটে