কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ফাইল চিত্র।
রাজ্য বিজেপি যা ভাবছে, তৃণমূলের হাল আগামী দিনে তার চেয়েও ‘খারাপ হবে’ বলে দলকে আশ্বস্ত করে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। সূত্রের খবর, সফরের দ্বিতীয় দিন সকালে দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে এই আশ্বাসবাণী শুনিয়েছেন তিনি। তৃণমূল অবশ্য মনে করছে, এই আস্ফালন আসলে চক্রান্তের ইঙ্গিত।।
সম্প্রতি দু’দিনের রাজ্য সফরে এসেছিলেন শাহ। প্রথম দিন সিউড়িতে জনসভায় বঙ্গ বিজেপিকে আগামী লোকসভা নির্বাচনে ৩৫ আসনের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেন। এর পর দক্ষিণেশ্বরে পুজো দেওয়া ছাড়াও বঙ্গ বিজেপির কোর কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। পরের দিন আলাদা ভাবে কথা বলেন শুভেন্দু ও সুকান্তর সঙ্গে। সূত্রের খবর, শাহের ৩৫ আসনের দাবি শুনে দৃশ্যতই হতবাক ছিলেন বিজেপি নেতারাই। তাঁদের মনের অবস্থা কিছুটা আঁচ করতে পেরেই শাহ নিজে থেকেই রাজনৈতিক পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন। সেই প্রসঙ্গেই তিনি ওই কথা বলেন।
সূত্রের খবর, বৈঠকের জন্য রাজ্য বিজেপির কোর কমিটির সদস্যদের ডাকা হলেও বৈঠকের তাঁদের সঙ্গে খুব কম সময়েই কাটিয়েছেন তিনি। প্রথমেই শাহ নিজের ঘরে ডেকে নেন রাজ্য বিজেপির ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসলকে। দীর্ঘক্ষণ তাঁর সঙ্গে কথা বলে বুথ স্বশক্তিকরণ এবং বর্তমান পরিস্থিতির আঁচ পাওয়ার চেষ্টা করেন। এর পর বনসল ডেকে নিয়ে যান শুভেন্দু, সুকান্ত এবং কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক মঙ্গল পাণ্ডেকে। তাঁদের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন। সেখানে বেশ কিছু ইঙ্গিতবহ কথা বলেন। পরে কোর কমিটির বৈঠকে শাহ জানান, বুথকে শক্তিশালী করতে হবে। তা হলেই বাকি কাজ হবে।
সূত্রের খবর, পরের দিন সকালের বৈঠকে ছিলেন, মঙ্গল, শুভেন্দু, সুকান্ত ও সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী। পরে আসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক। সূত্রের দাবি, সেখানে শাহ নেতাদের জানান, পরিস্থিতি তৃণমূলের প্রতিকূলে যাবে। যতটা তাঁরা কল্পনা করছেন, তার চেয়েও খারাপ হবে। তাই ৩৫ আসনের কথা হওয়ায় ভাসিয়ে দেননি। যদি কোথাও গিয়ে আটকেও যায়। সেই সংখ্যাটাও ৩৫ থেকে খুব একটা কম হবে না।
এই প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “রাষ্ট্রবিজ্ঞানের নিয়ম মেনেই তৃণমূল অন্তর্জলি যাত্রার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। যে ভাবে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা ছাদ বেয়ে কার্নিশে নামছে, তাতে আর বেশি দিন অপেক্ষা করতে হবে না। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল বুথে বসানোর মতো লোক পাবে না।” তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ পাল্টা বলেন, “এজেন্সির অপব্যবহার, অর্থনৈতিক বৈষম্য, কুৎসার মধ্যে দিয়ে যে ওরা ঢুকতে চাইছে তা পরিষ্কার। কিন্তু অমিত শাহ বিধানসভা নির্বাচনের আগে যেমন ২০০ আসনের কথা বলেছিলেন, তা হয়নি। এ বারেও তাঁর আশা পূরণ হবে না।”