—প্রতীকী ছবি।
নতুন করে ‘বঙ্গভঙ্গ’ ঘিরে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বাংলা ভাগের চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। স্বশাসনের দাবি এই আবহে উঠছে জঙ্গলমহলেও।
জঙ্গলমহলের জেলাগুলিতে এ বার লোকসভা ভোটে তৃণমূল বড় জয় পেয়েছে। তার পরেই স্বশাসনের দাবি তুলেছে ঝাড়খণ্ড অনুশীলন পার্টি (জেএপি)। এ নিয়ে বার কয়েক দলীয় বৈঠক করেছেন জেএপি নেতৃত্ব। কথা হয়েছে প্রথমে আবেদন-নিবেদন এবং দরকারে আন্দোলনে যাওয়া নিয়েও।
জেএপি সূত্রের দাবি, জঙ্গলমহলের চার জেলা ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরে জনজাতি, তফসিলি, কুড়মি-সহ অনগ্রসর শ্রেণির বাস, যাঁদের অধিকাংশই ছোটনাগপুর মালভূমির ঝাড়খণ্ডী সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত। তাই নির্বাচিত স্বশাসিত পরিষদের মাধ্যমেই এই মূলবাসীদের প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব বলে মনে করছে এই দল। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময়েও জঙ্গলমহলের স্বশাসনের দাবি তুলেছিল এরা। দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অসিত খাটুয়া বলছেন, “আমরা রাজ্য সরকারের উন্নয়নের সঙ্গে আছি। তবে জঙ্গলমহলের মাটি, ভাষা ও সংস্কৃতি একেবারেই ভিন্ন। পাহাড়ের মতো জঙ্গলমহলের বাসিন্দাদের সামগ্রিক উন্নয়নের স্বার্থে স্বশাসন প্রয়োজন। এ নিয়ে কেন্দ্রের কাছে দরবার করা হবে। প্রয়োজনে জোরদার আন্দোলন হবে।”
সম্প্রতি দলের বৈঠকে অসিতরা জানান, স্বশাসনের দাবিতে কেন্দ্রের কাছে দাবিসনদ পেশ করা হবে। সূত্রের খবর, অগস্টে মুখ্যমন্ত্রীর সম্ভাব্য ঝাড়গ্রাম সফরের আগেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে বিষয়টি জানানো হবে।
জেএপি-র সঙ্গে আবার তৃণমূলের সখ্য রয়েছে। ওই দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আদিত্য কিস্কু এবং কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অসিত খাটুয়া দু’জনেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আদিবাসী উন্নয়ন ও সাংস্কৃতিক পর্ষদের সদস্য। ওই পর্ষদের চেয়ারপার্সন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে। প্রশ্ন উঠছে, কেন্দ্রকে চাপে রাখতে জঙ্গলমহলে স্বশাসনের দাবি তোলার পিছনে কি তৃণমূলের প্রচ্ছন্ন সমর্থন আছে? তবে ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মুর দাবি, “কেন্দ্রের এক্তিয়াভুক্ত বিষয়ে কেউ দাবি করতেই পারেন। তার সঙ্গে তৃণমূলকে জড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে বিজেপি অস্থিরতা তৈরি করতে চাইছে।”
মালদহ-মুর্শিদাবাদকে পৃথক করার দাবি তুলেছেন বিজেপির দুই বিধায়ক। সেই দলের রাজ্য কমিটির সদস্য সুজিত অগস্তী আবার বলছেন, “আমরা বাংলা ভাগের বিরোধী। জঙ্গলমহলে স্বশাসন যাঁরা চাইছেন, সেই দাবি তাঁদের না, তাঁদের দিয়ে বলানো হচ্ছে?”