TMC

‘চোখ তুলে নেবেন’, তৃণমূল সাংসদের মন্তব্যে বিতর্ক

‘চোখ তুলে নেওয়া, হাত-পা ভেঙে দেওয়া’র নিদান দিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুরের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ বাপি হালদার! তাঁর ওই মন্তব্যকে নিশানা করে সরব হয়েছে বিজেপি, সিপিএম-সহ বিরোধীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২৫ ০৫:৫৪
Share:
বাপি হালদার।

বাপি হালদার। ছবি: সংগৃহীত।

সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় রাজ্যের কিছু জয়াগায় যখন অশান্তির ঘটনা ঘটেছে, সেই আবহে এ বার ‘চোখ তুলে নেওয়া, হাত-পা ভেঙে দেওয়া’র নিদান দিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুরের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ বাপি হালদার! তাঁর ওই মন্তব্যকে নিশানা করে সরব হয়েছে বিজেপি, সিপিএম-সহ বিরোধীরা। অন্য দিকে, বিজেপির তিন সাংসদ রাজ্যের চার জেলায় সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন বা ‘আফস্পা’ (আর্মড ফোর্সেস স্পেশ্যাল পাওয়ার অ্যাক্ট) জারি করার দাবি জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লিখেছেন।

Advertisement

সংশোধিত আইনটির প্রতিবাদে রবিবার মথুরাপুরের লালপুরে একটি সভার ডাক দিয়েছিল তৃণমূল। সেখানেই সাংসদ বাপি বলেছেন, “ওয়াকফ একটা সম্প্রদায়ের সম্পত্তি। সেই সম্প্রদায়ের সম্পত্তির দিকে যদি কেউ চোখ তুলে তাকায়, তার চোখ তুলে নেবেন! হাত-পা ভেঙে দেবেন!”

বাপির এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সরব হয়েছে বিরোধীরা। নিয়োগ দুর্নীতি-সহ বিভিন্ন বিষয়ে এ দিন অশোকনগরে দলের একটি মিছিলে যোগ দিয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের অভিযোগ, তৃণমূলের কিছু বিধায়ক-সাংসদ এবং বিজেপির শুভেন্দু অধিকারীদের উস্কানিমূলক মন্তব্যের জন্য পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হচ্ছে। নিয়োগ-দুর্নীতি ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে। ওয়াকফ প্রতিবাদ এবং মুর্শিদাবাদে অশান্তি প্রসঙ্গে সেলিমের বক্তব্য, ‘‘মুসলিমদের বুঝতে হবে যে, এটা কোনও ধর্মযুদ্ধ নয়। এখানে সাংবিধানিক অধিকার হরণ করা হয়েছে। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলন করতে হবে। কিন্তু এখানে এমন শক্তি রয়েছে, যারা বিজেপি-কে সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছে। কারণ, বিজেপি চাইছে ওয়াকফ আইন নিয়ে হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে বিরোধ তৈরি করতে।’’

Advertisement

তৃণমূল সাংসদ বাপির মন্তব্য প্রসঙ্গে বিজেপির মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি অশোক পুরকাইত বলেছেন, “তৃণমূলের আসল লক্ষ্য, উস্কানি ছড়িয়ে গোলমাল পাকানো।” সাম্প্রতিক অশান্তির বিভিন্ন ঘটনাকে সামনে রেখে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে মুর্শিদাবাদ, মালদহ, নদিয়া এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় আফস্পা জারির আর্জি জানিয়েছেন বিজেপির তিন সাংসদ জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতো, রাজু বিস্তা এবং জগন্নাথ সরকার। রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম অবশ্য বলেছেন, “এখন রাজনীতির সময় নয়। পুলিশই অপরাধীদের ঠান্ডা করতে পারে। ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা করছে বিজেপি।”

দিল্লিতে এ দিন ওয়াকফ নিয়ে জমিয়তে উলেমায়ে হিন্দের একটি সভায় যোগ দিতে এসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের গ্রন্থাগারমন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। পশ্চিমবঙ্গের হিংসা প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘‘রাজ্যে যা কিছু হচ্ছে, তা ষড়যন্ত্র ও রাজনীতির কারণে হচ্ছে।’’

মুর্শিদাবাদ-সহ রাজ্যে সম্প্রীতি বজায় রাখার ডাক দিয়েছে কংগ্রেস-সহ বিভিন্ন দল। মুর্শিদাবাদের সুতিতে গুলিবিদ্ধ এবং বর্তমানে কলকাতায় চিকিৎসাধীন এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার। তাঁর অভিযোগ, “থানাকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। শাসক দল এবং তাদের স্বীকৃত বিরোধী দল মিলে রাজনীতি করছে। মেরুকরণের মাধ্যমে বিধানসভা নির্বাচন উতরে দিতে চাইছে।” অশান্তির জন্য দায় স্বীকার করে মৃত ও জখমদের রাজ্য যাতে ক্ষতিপূরণ ও নিরাপত্তা দেয়, সেই দাবি তুলেছে সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement