ট্রেনের অপেক্ষায় যাত্রীরা। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে তোলা ছবি। —ফাইল চিত্র।
করোনা সংক্রমণ বাড়ছে উত্তর পূর্ব ভারতে। আর তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বঙ্গের স্বাস্থ্য শিবির। তাঁদের এখন চিন্তার বিষয় একটাই, ‘উত্তরবঙ্গ দিয়েই কি রাজ্যে তৃতীয় ঢেউ প্রবেশ করবে?’
করোনার বিষয়ক ‘গ্লোবাল অ্যাডভাইজ়রি কমিটি’র সঙ্গে বৃহস্পতিবার বৈঠক করেন রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তারা। সূত্রের খবর, সেখানে এই আশঙ্কার কথাও বারবার করেই উঠে এসেছে। বিশ্বের ওই পরামর্শ কমিটির সদস্যরাও সতর্ক করেছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য মহলকে। কারণ, উত্তর পূর্ব ভারত থেকে সড়ক ও রেল পথে ভারতের যে কোনও প্রান্তে আসতে গেলে উত্তরবঙ্গ পার করতেই হবে। এছাড়াও প্রতিবেশী রাজ্য অসম থেকে যে কোনও পথ ব্যবহার করে উত্তরবঙ্গে যাতায়াত করা যায়। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের শেষ কয়েক দিনের দৈনিক পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, কলকাতার থেকে দার্জিলিং জেলাতে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি।
সূত্রের খবর, উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে যে সমস্ত লোকজন উত্তরবঙ্গে ঢুকবেন, তাঁদের উপর নজরদারি বাড়ানোর বিষয়ে এ দিন ‘গ্লোবাল অ্যাডভাইজ়রি কমিটি’ পরামর্শ দিয়েছে। স্বাস্থ্য শিবির সূত্রের খবর, বিমানে আরটিপিসিআর পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট বাধ্যতামূলক। কিন্তু সড়ক ও রেল পথেও প্রচুর লোকজন উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে এ রাজ্যে আসেন। তাই শিলিগুড়ি বাস টার্মিনাসে কড়া নজরদারির পরিকল্পনা করা হয়েছে। অসমের দিক থেকে বাসে আসা সমস্ত যাত্রীর আরটিপিসিআর পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট বা প্রতিষেধকের দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার শংসাপত্র থাকতে হবে।
যে যাত্রীর তা থাকবে না তাঁদের বাস টার্মিনাসেই আরটিপিসিআর কিংবা র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষার বন্দোবস্ত করা হবে। কিন্তু রেল পথে কোথায় কী ভাবে কী করা হবে সে বিষয়ে স্বাস্থ্য শিবির ভাবনা চিন্তা করছে বলেই সূত্রের খবর। তবে মূল পথ ছেড়ে এলাকার ভিতরের সংযোগকারী রাস্তার সীমানা এলাকাগুলিতেও স্থানীয় প্রশাসন যাতে কড়া নজরদারি চালায় সে দিকেও জোর দেওয়া হবে। পাশাপাশি রাজ্যে ‘সেন্টিনেল সার্ভেল্যান্স’-চালুর প্রশংসা করেন ‘গ্লোবাল অ্যাডভাইজ়রি কমিটি’র বিশেষজ্ঞ সদস্যরা। তবে সেটি ১৫ দিন অন্তর করার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা। তা মেনে নিয়েছে স্বাস্থ্য দফতরও।
অন্য দিকে দুই ২৪ পরগনা, কলকাতা, হাওড়া ছাড়া বাকি জেলার গ্রামাঞ্চলগুলিতে মাস্ক পরার বিষয়ে জোর দেওয়ার কথাও বলেছে ‘গ্লোবাল অ্যাডভাইজ়রি কমিটি’। শুধু স্বাস্থ্য দফতর নয়, স্থানীয় স্তরের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলিকে সচেতনা বৃদ্ধির কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।