আজ যে সাত পুরসভায় ভোট তার ছ’টিই এখন শাসক দলের দখলে। বুনিয়াদপুরে ভোট এই প্রথম।
পাশা এ বার উল্টে যাবে এমন দাবি বিরোধীরাও করছে না। যেখানে তাদের ছিটেফোঁটা উপস্থিতি, সেটাই ধরে রাখার লড়াই চালাচ্ছে তারা। আর আত্মবিশ্বাসে ভরপুর তৃণমূলের বক্তব্য, সর্বত্রই জয় নিশ্চিত। যেখানে দরকার হবে, দল ‘জিতে নেবে’।
এই ‘জিতে নেওয়ার’ তত্ত্বেই আজ গোলমালের আশঙ্কা করছে বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, এই অবস্থায় যাদের উপর ভরসা করা উচিত, সেই রাজ্য নির্বাচন কমিশন কোনও আশ্বাস দিতে পারছে না।
কমিশনের এক মুখপাত্র অবশ্য বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনার সব কটি পুর এলাকা ঘুরে এসেছেন। পুলিশকে শান্তি বজায় রাখতে বলেছেন। এর বেশি আর কী করতে পারেন তিনি!’’ যদিও এই বক্তব্যকে কমিশনের অসহায়তার বহিঃপ্রকাশ হিসেবেই দেখছে বিরোধীরা। তাদের মতে, আজ শাসক দলের দাপট, মারপিট এবং বুথ দখলের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। যে অভিযোগ খণ্ডন করে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস শনিবার বলেন, ‘‘শান্তিপূর্ণ ভোট হবে। মানুষ উন্নয়নের জন্য আমাদেরই জেতাবে।’’
যে ক’টি পুরসভায় ভোট হচ্ছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বড় দুর্গাপুর। ৪৩ ওয়ার্ডের এই পুরসভায় গত বার তৃণমূল জিতেছিল ২৮টি আসনে। পরে দু’জন বিরোধী কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেন। কিন্তু গত বিধানসভা ভোটে মেয়র অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় ৪৮ হাজার ভোটে হেরেছেন। তৃণমূলও পিছিয়ে ছিল ৪০টি ওয়ার্ডে।
আরও পড়ুন:পুরভোটে আজ অশান্তির ভয়
এ বার মেয়র-সহ ১২ জন কাউন্সিলরকে টিকিট দেয়নি তৃণমূল। অন্য দিকে, ব্যাপক ভাবে রামনবমী পালন করে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিয়েছে গেরুয়া শিবির। বামেরাও উপস্থিত বন্ধ কারখানা-নগরীতে ।
গত বার ১৬টি ওয়ার্ডে জিতে হলদিয়া পুরসভা দখল করেছিল বামেরা। কিন্তু মাঝপথে ক্ষমতা হারায় তারা। ১১ জন বাম কাউন্সিলর নাম লেখান তৃণমূলে। তাঁদের সকলকেই টিকিট দিয়েছে শাসক দল। এ বার গোড়াতেই পুরসভা দখল করা যাবে বলে আশাবাদী হলদিয়ার দায়িত্বে থাকা পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর কথায়, ‘‘মানুষের সামনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিকল্প কোথায়?’’
পাঁশকুড়াতেও বোর্ড ধরে রাখার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী তৃণমূল। কিন্তু যে ভাবে বাম বা বিজেপি প্রার্থীদের সঙ্গে কিছু অংশে মানুষ সক্রিয় ভাবে নেমেছে, তা দেখে ‘চান্স’ নিতে চায় না শাসক দল। কুপার্স ক্যাম্পে শঙ্কর সিংহ দলে আসায় নিশ্চিন্ত তৃণমূল। নলহাটির ভোটের ভারপ্রাপ্ত অনুব্রত মণ্ডলের কথায়, ‘‘কেষ্ট মণ্ডল মাঠে নামলে ‘নিল’-এ গেম। জিতব আর কিছু জিতে নেব।’’
বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল বাইরের লোক এনে সন্ত্রাস চালাচ্ছে। অবাধ নির্বাচন কী ভাবে হবে?’’ বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘ভোটারদের ভয় দেখানো হচ্ছে। মানুষ ভোট দিতে পারলে সব উল্টে-পাল্টে যাবে।’’