সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসির বিরুদ্ধে মিছিলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই
দুপুরে মহানগরে মিছিলের পর বলেছিলেন, নাগরিকত্ব আইন এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জি করতে হলে তাঁর লাশের উপর দিয়ে যেতে হবে। আর বিকেলেই কড়া সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্টার (এনপিআর)-এর সব রকম কাজ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। রাজ্য জুড়ে এনপিআর-এর প্রশিক্ষণের কাজ চলছিল। পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত সেই কাজ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত আরও তীব্র হল।
দেশে ১০ বছর অন্তর জনগণনা হয়। তার আগে তৈরি করা হয় এনপিআর। ২০১১ সালে শেষ জনগণনার পর আবার নির্ধারিত জনগণনার বছর ২০২১। এনপিআর হওয়ার কথা ২০২০ সালে। সেই কাজের জন্য রাজ্য জুড়েই প্রশিক্ষণ চলছিল। সেই প্রশিক্ষণের কাজই বন্ধের নির্দেশ দিল রাজ্য সরকার।
নবান্ন থেকে রাজ্যের সমস্ত জেলাশাসক, পুরসভা-সহ সংশ্লিষ্ট সব বিভাগে নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছে, ‘পশ্চিমবঙ্গে এনপিআর তৈরি বা আপডেট করার সব কাজ স্থগিত করে দেওয়া হল। রাজ্য সরকারের কাছ থেকে আগাম ছাড়পত্র না পাওয়া পর্যন্ত এই সংক্রান্ত কোনও কাজ করা যাবে না।’ অর্থাৎ, এত দিন রাজনৈতিক ভাবে বিরোধিতা করেছেন। এ বার প্রশাসনিক ভাবেও পদক্ষেপ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই এনপিআরের কাজ বন্ধ করার দাবিতে আগেই প্রতিবাদ বিক্ষোভ দেখিয়েছে কয়েকটি সংগঠন। তাদের অভিযোগ ছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, এনআরসি-র বিরোধিতা করছেন। অথচ এনপিআর-এর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে তাঁর সরকার। মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগও এনেছিলেন তাঁরা। অন্য দিকে, সোমবারই কলকাতায় নয়া নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি-র বিরুদ্ধে পথে নামেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মিছিল শেষে তিনি কেন্দ্র তথা বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেন। রাজ্যে কোনও ভাবেই এনআরসি করতে দেবেন না বলে হুঁশিয়ারি দেন। তার পর সন্ধ্যাতেই রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।