নিজেদের স্কুলের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলছেন তাঁরা। শিয়রে পরীক্ষা। আচমকা কোনও বিষয় নিয়ে আটকে গেলে তা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পাঠিয়ে দিচ্ছে পরীক্ষার্থী। সেই বিষয়ের শিক্ষকের কাছে প্রশ্ন পাঠালে সমাধান চলে আসছে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে।
কলকাতার মিত্র ইন্সস্টিটিউশনের প্রাক্তনীরা আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে এ ভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন বর্তমান পড়ুয়াদের দিকে। প্রাক্তনীদের তরফে পার্থ জানা জানান, স্কুলের টেস্ট পরীক্ষার পরে ছাত্ররা কতটা তৈরি হল, তা দেখার জন্য তাঁরা ‘মক টেস্ট’-ও নিচ্ছেন। স্কুলে সেই পরীক্ষায় পরিদর্শকের কাজ করছেন প্রাক্তনীরা। সেই পরীক্ষার খাতা প্রাক্তন মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষকদের কাছে পাঠানো হচ্ছে। তাঁরা দেখিয়ে দিচ্ছেন, কোন ছাত্রের কোথায়, কতটা উন্নতির প্রয়োজন।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুরের কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাইস্কুলেও তৈরি হয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। প্রধান শিক্ষক চন্দন মাইতি জানান, গ্রুপে শিক্ষক, প্রাক্তনীদের সঙ্গে রয়েছেন একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা। পড়ুয়ারা পাঠ্য বিষয় নিয়ে সেখানে জানতে চাইলে শিক্ষক, প্রাক্তনীরা উত্তর দেন।
এ রকম হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরিতে আগ্রহী হয়ে উঠছে অন্য বেশ কিছু স্কুল। সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পাপিয়া নাগ জানান, তাঁরাও এ ধরনের গ্রুপ তৈরিতে আগ্রহী। গার্ডেনরিচ নুটবিহারী গার্লস হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সঙ্ঘমিত্রা ভট্টাচার্য জানান, পড়ুয়া, শিক্ষিকা ও প্রাক্তনীদের নিয়ে হোয়্যাটসঅ্যাপ এবং ফেসবুক গ্রুপ তৈরি করতে চলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলের প্রায় সব পড়ুয়াই প্রথম প্রজন্ম স্কুলে আসছে। বাড়িতে পড়াশোনায় সাহায্য করার মতো কেউ নেই। অথচ অন্তত একটি স্মার্ট ফোন এদের পরিবারে থাকে। তাই এ ধরনের গ্রুপ থেকে এরা সাহায্য পাবে।’’
হিন্দু স্কুলের প্রধান শিক্ষক তুষারকান্তি সামন্ত বলেন, ‘‘ভাল তো! আমরাও পরের বছর থেকে এমনটা করতে পারি।’’ তবে, এ বছরে হিন্দু স্কুলে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের ডেকে ডেকে বলা হয়েছে, কারও কোনও সমস্যা থাকলে স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে।
লা মার্টিনিয়ার ফর গার্লস এর প্রধান শিক্ষিকা রূপকথা সরকার অবশ্য হোয়াটসঅ্যাপ মারফত ছাত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়টি নিয়ে ততটা উৎসাহী নন। তিনি জানান, কোনও ছাত্রীর কোনও অসুবিধা হলে সে স্কুলে চলে আসতে পারে। আর সন্ধ্যার পরে কোনও বিষয় আটকে গেলে? রূপকথাদেবীর কথায়, ‘‘শিক্ষিকাদের মোবাইল নম্বর রয়েছে। সরাসরি কথা বলে নিলেই হবে।’’