ভাঙচুর হওয়া গাড়ি। নিজস্ব চিত্র।
বিজেপি নেতা রাহুল সিংহের গাড়িতে শনিবার সন্ধ্যায় হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। তাঁর গাড়ির কাচ ভেঙেছে তবে তাঁর শরীরে কোনও আঘাত লাগেনি। এ দিন কল্যাণীতে একটি কালীপুজোর মণ্ডপে যাওয়ার পথে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে চাকদহ চৌমাথার কাছে এই ঘটনা ঘটে। এর জন্য সিপিএম এবং তৃণমূলকে দায়ী করেছে বিজেপি। ঘটনার পরে বিজেপি ও সিপিএম কর্মীদের মধ্যে কিছু ক্ষণ ধাক্কাধাক্কিও হয়। যদিও হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ সিপিএম ও তৃণমূল অস্বীকার করেছে।
এ দিন চাকদহের বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করেছিলেন। সেখানে যোগ দিয়ে তার পর কল্যাণী যাওয়ার কথা ছিল রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি রাহুল সিংহের। কিন্তু সেই সময় জাতীয় সড়কে সিপিএমের পথ অবরোধ চলছিল। অভিযোগ, সিপিএম কর্মীরা রাহুল সিংহের গাড়িতে হামলা চালান। উভয় পক্ষের হাতাহাতি শুরু হয়। পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। রাহুল সিংহের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের মদতে এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন সিপিএম কর্মীরা।’’ রাহুল সিংহের কথায়, ‘‘আমি আসছি শুনে তৃণমূল কংগ্রেস তাঁদের দোসর সিপিএমকে দিয়ে ওখানে পথ অবরোধ করায়। আমার গাড়ি পৌঁছনো মাত্র একটি ছেলে লাঠি দিয়ে গাড়ির কাচে মেরে ভেঙে দিয়ে ওখান থেকে চলে যায়। পুলিশ কোথায় গেল? হঠাৎ করে একটা অবরোধ হল এবং আমি যেই অবরোধ পার করে গেলাম সঙ্গে-সঙ্গে অবরোধ বন্ধ হয়ে গেল? পুলিশ প্রশাসন বলতে এ রাজ্যে কিছু নেই। জঙ্গলের রাজত্ব চলছে।’’ আবার সিপিএমের চাকদহ ১ এরিয়া কমিটির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সুব্রত কর পাল্টা অভিযোগ করেন, ‘‘আমাদের পথ অবরোধ ভেঙে গাড়ি চালিয়ে চলে যাচ্ছিলেন রাহুল সিংহ। বাধা দিতে গেলে আমাদের কর্মীদের মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওঁর গাড়িতে আমাদের কেউ হামলা চালায়নি।’’ চাকদহ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি দিলীপ সরকারও দাবি করেন, ‘‘আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। এ ধরনের কাজের সঙ্গে আমাদের দলের কেউ যুক্ত থাকেন না।’’
প্রসঙ্গত, কল্যাণী শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে মাঠে স্থানীয় ক্লাবের কালীপুজো হলেও সেই পুজো পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন বিজেপির কর্মকর্তারাই। শুক্রবার ওই পুজোর উদ্বোধন করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার সন্ধ্যায় সেখানেই যাচ্ছিলেন রাহুল সিংহ। চাকদহের ঘটনার জেরে নির্দিষ্ট সময়ের বেশ কিছুটা পরে তিনি সেখানে পৌঁছন। রাজনৈতিক মহলের খবর, কল্যাণী শহর গত পুর-নির্বাচনে বিরোধী শূন্য করে জয়লাভ করে তৃণমূল। বিজেপির অনেক কর্মী সমর্থক এখনও সেখানে ঘরে বসে আছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তাঁদের চাঙ্গা করে ময়দানে নামাতে চাইছে বিজেপি। এই পুজোয় তাঁদের যুক্ত করে মনোবল বাড়াতে চাইছে, সেইসঙ্গে জনসংযোগও করতে চাইছে। পঞ্চায়েত এলাকার কর্মী, সমর্থকদেরও এই পুজোয় নিমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে যাতে রাজ্য নেতৃত্বকে এখানে দেখে তাঁরা উৎসাহিত হন।