ভোটে ‘টিকিটের নামে ‘টাকা’, পোষ্টার নবারুণের বিরুদ্ধে

খোদ জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে অন্য দলের লোকজনদের মণ্ডল সভাপতি পদ দেওয়া এবং আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে দলের একাংশের এমন পোস্টার ঘিরে জেলার রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:১১
Share:

এই পোস্টার ঘিরেই দেখা দিয়েছে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র

দলের মণ্ডল সভাপতি নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে বিজেপির তমলুক জেলা সভাপতি নবারুণ নায়েকের বিরুদ্ধে দলেরই একাংশের ক্ষোভ প্রকাশ্যে এসেছিল আগেই। এ বার তৃণমূলের লোকজনকে মণ্ডল সভাপতি পদে বসানো, আসন্ন পুরসভা ও বিধানসভার ভোটে ‘টিকিট’ দেওয়ার নামে টাকা তোলার অভিযোগ তুলে তাঁর বিরুদ্ধে পোস্টার পড়ল তমলুক শহরে।

Advertisement

রবিবার তমলুকে জেলা প্রশাসনিক অফিসের সামনে বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে এই পোস্টার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। ‘বিজেপি কর্মীবৃন্দ’ ও ‘আমরা বিজেপি সৈনিক’নামে দেওয়া পোস্টারে নবারুণ ও দলের জেলা কোষাধ্যক্ষ বিজন মিত্রের বিরুদ্ধে লোকসভা ভোটে বিপুল টাকা আত্মসাৎ ও তৃণমূলের লোকজনকে মণ্ডল সভাপতি পদে বসানোর অভিযোগ তুলে দু’জনেরই পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে। খোদ জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে অন্য দলের লোকজনদের মণ্ডল সভাপতি পদ দেওয়া এবং আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে দলের একাংশের এমন পোস্টার ঘিরে জেলার রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়েছে।

দলীয় ও স্থানীয় সূত্রের খবর, চলতি বছর লোকসভা নির্বাচনের পরেই গত জুন মাসে বিজেপির সাংগঠনিক পদে রদবদলের সময় তমলুক জেলা সভাপতি পদে নিযুক্ত হন নবারুণ নায়েক। তবে তিনি জেলা সভাপতি পদে বসার কিছুদিন পরেই তাঁর বিরুদ্ধে ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগ তুলে পোস্টার পড়েছিল মেচেদা এলাকায়। ওই ঘটনায় তৃণমূলের লোকজন জড়িত বলে পাল্টা অভিযোগ তুলে পোস্টার দিয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলেন নবারুণ। তবে সম্প্রতি বিজেপির বুথ সভাপতি ও মণ্ডল সভাপতি পদের নির্বাচন ঘিরে তাঁর বিরুদ্ধে দলের একাংশ নেতার ক্ষোভ প্রকাশ্যে আসে। বুথ সভাপতিদের মতামত অগ্রাহ্য করে পছন্দের ব্যক্তিকে মণ্ডল সভাপতি পদে বসানোর অভিযোগ তুলে তমলুকে বিজেপি জেলা কার্যালয়ের সামনে জমায়েত হয়ে নবারুণের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান বিভিন্ন ব্লকের নেতা-কর্মীদের একাংশ। এমনকী ৯ জন জেলা কমিটির পদাধিকারী মণ্ডল সভাপতি নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে নবারুণের বিরুদ্ধে রাজ্য নেতৃত্বকে চিঠি দেন।

Advertisement

সেই ঘটনার রেশ কাটার আগেই ফের নবারুণের বিরুদ্ধে এমন পোস্টার জেলায় দলের সাংগঠনিক দুর্বতাকেই প্রকট করছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের। দলের জেলা কমিটির সদস্য এক নেতা বলেন, ‘‘মণ্ডল সভাপতি নির্বাচন নিয়ে দলের কোন্দল প্রকাশ্যে আসায় সমর্থকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হচ্ছিল। আর জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে বার বার পোষ্টার পড়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে।’’ তাঁর বিরুদ্ধে এমন পোস্টার পড়ার ঘটনা স্বীকার করলেও নবারুণ বলেন, ‘‘আমি জেলা সভাপতি পদে বসার পরেই প্রথমে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ তুলে পোস্টার দিয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু তাতে সুবিধা করতে না পেরে এবার অন্য ইস্যুতে পোষ্টার দিয়েছে। আর তৃণমূলের লোককে মণ্ডল সভাপতি করার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। পুরভোটের আগে বিভ্রান্তি ছড়াতেই তৃণমূল এই পোষ্টার দিয়েছে।’’

বিজেপির রাজ্য সাধারণ (সাংগঠনিক) সুব্রত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যারা এ সব করছে তারা অন্য দলের হতে পারে। কারও বিরুদ্ধে টাকা নেওয়া বা অন্য অভিযোগ থাকতেই পারে। কিন্তু দলে তা জানানো জন্য নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে। কিন্তু তা না করে যারা এ সব করছে তারা দলের কেউ হতে পারে না।’’

জেলা তৃণমূল সভাপতি শিশির অধিকারী বলেন, ‘‘পূর্ব মেদিনাপুরে বিজেপির সংগঠন নেই। ওদের জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে পোষ্টার দেওয়ার বিষয়ে কিছু জানা নেই। আমাদের দলের কেউ এ সবের সঙ্গে জড়িত নয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement