তাঁর ছেলেকে কয়েক জন বন্দি খুনের হুমকি দিচ্ছে, জেল কর্তৃপক্ষও যথাযথ চিকিৎসা করছে না। সারদা-কাণ্ডে অভিযুক্ত কুণাল ঘোষ প্রেসিডেন্সি জেলে অনশন করার সময় হেস্টিংস থানায় এমনই অভিযোগ করেছিলেন কুণালের মা। শুক্রবার সারদা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস মামলায় কলকাতা নগর দায়রা আদালতে হাজির হয়ে সেই একই অভিযোগ জানালেন তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়া এই সাংসদ। বিচারকের কাছে তাঁর আর্জি ছিল, খুনের চেষ্টা ও হুমকির অভিযোগ নিয়ে মামলা করার জন্য তিনি যেন হেস্টিংস থানার ওসি-কে নির্দেশ দেন। বিচারক অরবিন্দ মিশ্র অবশ্য তাঁর লিখিত নির্দেশে জানিয়েছেন, জেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কুণালের অভিযোগ ভিত্তিহীন।
এ দিন শুনানির শুরুতেই কারা দফতরের আইনজীবী তরুণ চট্টোপাধ্যায় জানান, জেল সুপারের রিপোর্ট আদালতে জমা পড়েছে। এর পরে কুণাল নিজের সওয়াল করতে উঠে অভিযোগ করেন, তাঁকে আদালতে আনার আগে জেলের মধ্যে তল্লাশির নামে হেনস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি, খুনের হুমকি ও চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ করেন তিনি। বিচারক তাঁর লিখিত নির্দেশে জানান, জেল সুপারের পাঠানো রিপোর্ট পড়েছেন। তাতে জেলের তরফে কোনও গাফিলতি খুঁজে পাওয়া যায়নি।
শুনানির সময় কারও নাম না করে কুণাল বলেন, জেল কোড অনুযায়ী অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত কেউ প্রথম সারির বন্দির মর্যাদা পেতে পারে না। অথচ কাউকে কাউকে সেই সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। বিচারক তাঁকে বলেন, এ সব কথা মামলা সংক্রান্ত নয়। কুণালের প্রশ্ন ছিল, ডেলোর বৈঠকে উপস্থিত রাজ্যের এক প্রাক্তন সচিবকে ডেকে কেন জেরা করছে না সিবিআই? বিচারক বলেন, তদন্ত কী ভাবে এগোবে, তা কুণাল ঠিক করে দিতে পারেন না।
মামলা সংক্রান্ত নথি না থাকায় এ দিন পুরোদস্তুর শুনানি হয়নি। ফলে সুদীপ্ত সেন, কুণাল ঘোষ এবং দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে ফের ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। ৩ ডিসেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি। সে দিন কলকাতা নগর দায়রা আদালতে রোজভ্যালি মামলায় হাজির করানো হবে ওই অর্থলগ্নি সংস্থা কর্ণধার গৌতম কুণ্ডুকে। একই দিনে আলিপুর আদালতে হাজির করানো হবে প্রাক্তন পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্রকেও।