আইনি পরিষেবা বিষয়ক সভায় আদিবাসী নাচ। হুগলির ইটাচুনা কলেজে। সুশান্ত সরকারের তোলা ছবি।
গুরুত্বপূর্ণ সেমিনারের দিন টিএমসিপি-র বিরুদ্ধে মূল গেটে তালা ঝোলানোর অভিযোগ উঠল হুগলির মহসিন কলেজে। যদিও ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে ওঠা শুক্রবারের ওই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। দলের জেলা নেতারা জানিয়েছেন, ওই দিন কলকতায় দলের বড় কর্মসূচি নিয়ে সবাই ব্যস্ত ছিল। ওই ধরনের কোনও ঘটনার সঙ্গে সংগঠনের কেউ জড়িত নয়। কলেজ কতৃর্পক্ষ অবশ্য ওই ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
কলেজ সূত্রের খবর, ২৭ এবং ২৮ তারিখ কলেজের বাণিজ্য বিভাগের গুরুত্বর্পূণ সেমিনার ছিল। প্রথম দিন কোনও সমস্যা না হলেও দ্বিতীয় দিন কলেজে এসে দেখা যায় গেটে তালা। সেমিনার উপলক্ষে বাইরের অনেক অধ্যাপক-শিক্ষক ওই দিন কলেজে আমন্ত্রিত ছিলেন। ওই ঘটনায় বাইরের বিভিন্ন কলেজে থেকে অতিথি হয়ে আসা অধ্যাপকেরা কিছুটা হকচকিয়ে যান। গেটে তালা ঝোলায় কলেজের বাইরে তাঁদের অনেককেই অপেক্ষা করতে হয়। পরে অবশ্য বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ করে গেটের তালা খোলানো হয়। ওই তালা দেওয়ার ঘটনায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নাম জড়িয়ে গিয়েছে।
ওই সংগঠনের সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক মাস ধরেই কলেজের ক্যাম্পাস এবং শৌচাগার যথাযথ ভাবে পরিষ্কার হচ্ছিল না। সেই নিয়ে সংগঠনের পক্ষ থেকে অধ্যক্ষকে বার বার বলা হচ্ছিল। কিন্তু তাতে কাজ না হওয়ায়, অধ্যক্ষের সঙ্গে ছাত্র সংগঠনের চাপান-উতোর চলছিল। সংগঠনের এক নেতা বলেন, ‘‘কলেজে এমন পরিস্থিতি যে, জঞ্জাল পরিষ্কার না হওয়ায় বিষধর সাপ পর্যন্ত বের হচ্ছিল কলেজে। কলেজে ক্লাস করাই ঝুঁকির ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এর পর বার বার বলার সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিচ্ছিলেন না। আমাদের বলা হচ্ছিল, পূর্ত দফতর কাজ করছে না। কলেজের নিজস্ব কোনও টাকা নেই ভিতর পরিষ্কার করার।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এর পর দেখা যায়, কলেজে সেমিনারের আয়োজন করা হচ্ছে। তখন আমরা বলি, কলেজ পরিষ্কারের টাকা নেই, অথচ সেমিনারের টাকা আসছে কোথা থেকে ? সেমিনার খুব ভাল, কিন্তু তার সঙ্গে কলেজও পরিষ্কার করা হোক জরুরি ভিত্তিতে। বাইরের লোকজন এসে কী দেখবেন কলেজে?’’ যদিও কলেজ সূত্রের খবর, সেমিনারটি ইউজিসির টাকায় আয়োজন করা হয়েছিল।
এর পর সেমিনারের দিন কলেজের গেটে নির্দিষ্ট সময়ের পরও তালা ঝুলতে থাকে। গেটে তালা থাকায় সবাই বাইরে দাঁড়িয়ে থাকেন। কলেজ কতৃর্পক্ষ গেটের তালা খুলতে নাজেহাল হন। শেষ পর্যন্ত তালা না খোলার বিষয়টি নিয়ে পুরো সন্দেহ গিয়ে পড়ে তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের দিকে। যদিও বিষয়টি সরাসরি অস্বীকার করা হয়েছে সংগঠনের পক্ষ থেকে। উল্টে ছাত্র সংগঠনের নেতারা বলেন, ‘‘আমরা বিষয়টি জানার পর গেটের চাবি খোলার ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করি।’’ ওই ঘটনার দিন উপস্থিত কলেজের অধ্যাপকেরা অবশ্য বিষয়টি নিয়ে কেউই মুখ খুলতে রাজি হননি।