শিক্ষকদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে শুক্রবার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের ঘরে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে। শিক্ষকদের দীর্ঘক্ষণ ঘেরাও করেও রাখা হয়।
ঘটনাটি বসিরহাট কলেজের। কলেজ সূত্রে এবং ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ একদল ছাত্র ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের ঘরে যায়। কেন পাস কোর্সের ক্লাস শুরু হচ্ছে না, এই অভিযোগে শুরু হয় চিৎকার-চেঁচামিচি। ফ্যান, চেয়ার উল্টে ফেলা হয় বলে অভিযোগ। বিক্ষোভকারীরা শিক্ষকদের বসার ঘরের সামনে বসে স্লোগান দিতে থাকে।
বেলা ২টো নাগাদ বসিরহাট কলেজে গিয়ে দেখা গেল, তখনও ঘেরাও চলছে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের। বিক্ষোভ চলাকালীন কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ পরিচালিত ছাত্রসংসদের সাধারণ সম্পাদক তুহিন দে বলেন, ‘‘শিক্ষকেরা সময় মতো কলেজে না আসায় পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে। পরীক্ষার ফল প্রকাশে ঢিলেমির জন্য ক্লাস শুরু হতে দেরি হচ্ছে। ভর্তি নিয়েও সমস্যা আছে। রেজিস্ট্রেশন নিয়েও হয়রান হতে হচ্ছে। এ সবের সমাধানের দাবিতেই এ দিনের অবস্থান-বিক্ষোভ।’’ ভাঙচুরের অভিযোগ অবশ্য মানেনি তিনি।
কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আমজাদ আলি, ওমর সরিফ বলেন, ‘‘২০১১ সাল থেকে ১০১৫ সাল পর্যন্ত কোনও পরীক্ষার শংসাপত্র দেওয়া হয়নি। তা ছাড়া, একটা গড় নম্বর দেওয়ার প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। কলেজে পর্যাপ্ত কর্মীর অভাব। অনুসন্ধান কেন্দ্র না থাকায় বড় রকম অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয় পড়ুয়াদের।’’ ওই ছাত্রদের আরও অভিযোগ, শিক্ষকেরা ট্রেনের সময় দেখে ক্লাস নেন। সেই সময় মতো কলেজ থেকে বেরিয়েও যান।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ খাইরুল আলম বলেন, ‘‘পদ্ধতিগত কিছু সমস্যার জন্য পঠন-পাঠনে অসুবিধা হচ্ছে। তবে শিক্ষকেরা সময় মতো কলেজে আসেন না এই অভিযোগ অসত্য। একে ছাত্রছাত্রীরা কম আসছে, তার উপরে এখনও অন লাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া চলার জন্য অনার্সের ক্লাস শুরু হলেও পাস কোর্সের ক্লাস শুরু করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি বারাসত স্টেট ইউনিভার্সিটিকে জানানো হয়েছে।’’ তিনি জানান, আগামী সোমবার থেকে পাস কোর্সের ক্লাস শুরু হবে। বসিরহাট কলেজের পরিচালন কমিটির সভাপতি ইদ্রিশ আলি বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের দাবিগুলি নিয়ে শিক্ষা দফতরের সঙ্গে আলোচনা করব। তবে কলেজের সম্পত্তি নষ্ট করা কিংবা শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্ন করা কখনই বরদাস্ত করা হবে না।’’