শনিবার আরামবাগের তিরোল পঞ্চায়েতে দুর্গতদের ত্রাণ বিলি করলেন আরামবাগের সাংসদ অপরূপা পোদ্দার।
কার দোষে বন্যা সেই তরজা চলছিলই, এ বার তার সঙ্গে যুক্ত হল ত্রাণ বিলি নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগও।
বিরোধীদের অভিযোগ, সরকারি ত্রাণ কোথাও পর্যাপ্ত নয়। তার পরেও বিরোধীদের দুর্গত এলাকায় ত্রাণ নিয়ে যেতে বাধা দিচ্ছে শাসক দল ও প্রশাসন। শনিবার বিরোধী দলগুলির তোলা এই অভিযোগ শুনে সরকারের বক্তব্য, ওঁদের যাওয়ার কি দরকার। ত্রণা পৌঁছাতে হলে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জমা দিলেই তো হল।
ত্রাণ দিতে গিয়ে তারকেশ্বরে সিপিএম কর্মীদের মারধরও করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে বামেরা। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের অভিযোগ, ‘‘মানুষ ত্রাণ চাইছেন, জল চাইছেন। আর মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, ডিভিসি কেন জল ছাড়ছে। অন্যের দিকে আঙুল তুলে তিনি নিজের অপরাধ আড়াল করছেন।’’
শনিবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও একই অভিযোগ করে মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা খাতে রাজ্য সরকারের কাছে যথেষ্ট টাকা রয়েছে। কিন্তু সেই টাকা ব্যবহার না করে মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে অযথা কেন্দ্রকে দুষছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’ এই অভিযোগকে আমল না দিয়েই পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের অবশ্য বলেছেন, ‘‘বন্যায় কোনও কালেই ত্রাণ পর্যাপ্ত হয় না। সরকার সাধ্যমতোই চেষ্টা করছে। কিন্তু অনেক জায়গায় পৌঁছনোই তো যাচ্ছে না!’’
কেন্দ্র এ রাজ্যের সঙ্গে কথা বলেই বিভিন্ন বাঁধ থেকে জল ছেড়েছে বলে দাবি করেন অধীর। বরং তাঁর অভিযোগ, এ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় নিয়মিত নালা, নর্দমা ও নদীর সংস্কার না হওয়ায় জল দাঁড়িয়ে থাকছে। সে জন্য এ রাজ্যের বন্যাকে ‘উওম্যান মেড ফেলিওর’ বলে কটাক্ষ করেছেন অধীর। তাঁর কথায়, ‘‘বন্যাদুর্গতদের সাহায্য করতে গেলে তৃণমূলের হামলার মুখে পড়তে হচ্ছে।’’
রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষও বলেন, ‘‘আমাদের কর্মীদের বাধা দেওয়া হচ্ছে কেন? আমরা তো মানুষকে সাহায্যই করতে চাইছি। তৃণমূল ত্রাণ নিয়েও দলবাজি করছে।’’
দিলীপের আরও খোঁচা, ‘‘জল না হয় ডিভিসির, কিন্তু বাঁধ কার? কেন নদী বাঁধগুলি মেরামত হয়নি। হাজার হাজার কোটি টাকা কোথায় গেল?’’ এর জবাবে সুব্রতবাবুর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘বিরোধীরা ত্রাণ দেওয়ার নামে বন্যাদুর্গত এলাকায় গিয়ে গোলমাল করার ছক কষেছে। ওঁরা কেউ ত্রাণ নিয়ে গিয়েছেন বলে জানিও না। যদি সত্যিই ত্রাণ দিতে চান তা হলে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে গিয়ে দিয়ে আসুন না!’’