Bengali New Year

নববর্ষে ‘হাল ফেরানো’র ডাকে পথে বিরোধীরা, শাসক-তোপে বিভাজন

শাসক দলের তরফে উদযাপন করা হল ‘বাংলা (রাজ্য) দিবস’। সমাজমাধ্যমে রীতিমাফিক নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫ ০৫:৪০
Share:
নববর্ষে বিজেপির শোভাযাত্রা। কলকাতায়।

নববর্ষে বিজেপির শোভাযাত্রা। কলকাতায়। —নিজস্ব চিত্র।

বাংলা নববর্ষের দিনে নিজেদের মতো করে পথে নামল সব রাজনৈতিক দল। হাল খাতার সূচনা করে যে দিনটা পালন করা হয়, সেই দিনে রাজ্যের ‘হাল ফেরানো’র ডাক উঠে এল বিরোধীদের তরফে। আর শাসক দলের তরফে উদযাপন করা হল ‘বাংলা (রাজ্য) দিবস’। সমাজমাধ্যমে রীতিমাফিক নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী সবার ‘সুখ-সমৃদ্ধি’র প্রার্থনা করে এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করেছেন। ‘বাংলা দিবসে’ নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে মমতা সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘আরও বিকশিত হোক রাজ্যের ঐতিহ্যময় সংস্কৃতি, আরও সুদৃঢ় হোক রাজ্যবাসীর ভ্রাতৃত্ব-বন্ধন।’ তাঁর লেখা গানও এ দিন প্রকাশ হয়েছে। শুভেচ্ছা জানিয়ে ‘ঐক্যে’র বার্তা দিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘যাঁরা রাজনৈতিক মেরুকরণের মাধ্যমে বিভাজন চাইছেন, তাঁদের মোকাবিলায় শক্তির সন্ধান করতে হবে।’ রাজ্যের মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন জানিয়েছেন, পরের বছর থেকে পঞ্চায়েত স্তরে রাজ্যে ‘বাংলা দিবস’ পালন করা হবে।

মমতার ‘বাংলা দিবস’ সংক্রান্ত মন্তব্যকে হাতিয়ার করে সরব হয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর বক্তব্য, ‘ইতিহাস মুছে ফেলতে আপনার অভিপ্রায় পূরণ হবে না, রাজ্যের নাম পশ্চিমবঙ্গই থাকবে। কারণ, পশ্চিম শব্দটা রক্তাক্ত স্মৃতি বহন করে, যা আপনি ভুলিয়ে দিতে চাইছেন।’ তমলুকে মঙ্গলবার মহাপ্রভু মন্দিরে প্রণাম করে এবং শোভাযাত্রায় যোগ দিয়ে দিনটি পালন করেছেন শুভেন্দু। তমলুকের বর্গভীমা মন্দিরে ‘হালখাতা’র অনুষঙ্গে রাজ্যের ‘হাল ফেরানোর খাতা’র পুজো দিয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, “শুধু নিজের হাল ফেরানোর কথা নয়, বেহাল রাজ্যের হাল ফেরানোর কথা বলব। সবাইকে বলব ‘হালখাতা’ করুন। সেই সঙ্গে এই রাজ্যের হাল ফেরানোর খাতাতেও দেবীর কাছে প্রার্থনা করুন।”

Advertisement

রাজ্যে শিল্পের হাল ফেরানোর দাবিকে সামনে রেখে বৌবাজারের ফিরিঙ্গি কালীবাড়ি থেকে পোদ্দার কোর্টের ইন্ডাস্ট্রি হাউস পর্যন্ত মিছিলে ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার-সহ অন্যেরা। শুভঙ্করের বক্তব্য, ‘‘রাজ্যে শিল্প ও বিনিয়োগের হাল ফিরুক, কর্মসংস্থান হোক, এটাই আমরা চাই। তবে সেই পরিবেশ তৈরি করতে গেলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করতে হবে।’’ ‘বৈচিত্রের সংস্কৃতি’ রক্ষার ডাক দিয়ে গাঙ্গুলিবাগান থেকে সুকান্ত সেতু পর্যন্ত ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’য় ছিলেন সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য সৃজন ভট্টাচার্য এবং সংস্কৃতি জগতের নানা ব্যক্তিত্ব।

শিল্পের হাল ফেরানোর কামনা নিয়ে ফিরিঙ্গি কালীবাড়িতে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার ও অন্যান্য নেতৃত্ব। বৌবাজারে। —নিজস্ব চিত্র।

নববর্ষ উপলক্ষে বিজেপির সাংস্কৃতিক শাখা হিন্দ সিনেমা থেকে সিমলা স্ট্রিটে স্বামী বিবেকানন্দের বাড়ি পর্যন্ত শোভাযাত্রা করেছে। যোগ দিয়েছিলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিংহ, শমীক ভট্টাচার্য, তাপস রায়, তমোঘ্ন ঘোষ, রুদ্রনীল ঘোষ, ইন্দ্রনীল খাঁ প্রমুখ। জেলা ও ব্লক স্তরে ‘রাজ্য দিবস’ পালন করেছে তৃণমূল। মহিলা তৃণমূলের উদ্যোগে উত্তর কলকাতায় শোভাযাত্রায় যোগ দিয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য-সহ অন্যেরা। কসবায় শোভাযাত্রায় ছিলেন মন্ত্রী জাভেদ খান, বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। চন্দ্রিমার মন্তব্য, “পরিকল্পিত ভাবে অশান্তি করা হচ্ছে। ভোট এলেই এমন অনেক পরিকল্পনা যে তৈরি হয়, তা সামনে চলে আসে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement