Al Qaeda

Al Qaeda: দু’পারের যুবক নিয়ে সক্রিয় আল-কায়দার বাংলা শাখা

গোয়েন্দাদের অভিযোগ, এই বাংলাদেশি যুবকেরা মূলত ত্রিপুরা ও মেঘালয়ের সীমান্ত দিয়ে এ দেশে ঢুকছে।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২২ ০৬:৩১
Share:

প্রতীকী ছবি।

ভারতে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আল-কায়দার শাখা আনসার-উল-বাংলার সক্রিয়তার কথা আগেই জেনেছিলেন গোয়েন্দারা। সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের সহারানপুর থেকে জঙ্গি সন্দেহে এক যুবককে গ্রেফতার করার পরে জানা গিয়েছে, ওই সংগঠনের সদস্য হিসেবে ভারত থেকে যেমন যুবকদের নেওয়া হচ্ছে, ভুল বুঝিয়ে যুবকদের নিয়ে আসা হচ্ছে বাংলাদেশ থেকেও।

Advertisement

গোয়েন্দাদের অভিযোগ, এই বাংলাদেশি যুবকেরা মূলত ত্রিপুরা ও মেঘালয়ের সীমান্ত দিয়ে এ দেশে ঢুকছে। মেঘালয়ের তুরার কাছে এজেন্টরা তাদের আধার কার্ড-সহ বিভিন্ন ভারতীয় পরিচয়পত্র আগে থেকেই তৈরি করে রাখছে। বরপেটার ঢাকালিয়া পাড়ার একটি ধর্মস্থানে তাদের প্রশিক্ষণ চলছে এবং পরবর্তী কাজের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। তার পরে তারা পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশের কোথাও না কোথাও আশ্রয় নিচ্ছে লিঙ্কম্যানের সাহায্যে। এ রাজ্যের বাঁকড়া থেকে ধৃত আমিরুদ্দিন আনসারি এবং পলাতক মইনুদ্দিন বাংলাদেশি যুবকদের থাকার ব্যবস্থা করে দিত বলে স্বাকীর করেছে ধৃত জঙ্গিরা। আমিরুদ্দিনকে গ্রেফতারের পরে কেটে গিয়েছে প্রায় দু’মাস। এখনও খোঁজ নেই মইনুদ্দিনের।

গোয়েন্দা সূত্রের খবর, বাংলাদেশ থেকে নিয়ে আসা যুবকদের বলা হচ্ছে, সহারানপুরে একটি বিখ্যাত ধর্মীয় স্থানে লেখাপড়ার ব্যবস্থা করা হবে। সেখানে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করলে তবেই উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাওয়া যাবে। আর ওই পরীক্ষার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়ার নাম করে চলছে মগজধোলাই। চলতি মাসের গোড়ায় ওই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান থেকে তালহা বিন ফারুখ নামে এক বাংলাদেশি ছাত্রকে গ্রেফতারের পরে এই সব তথ্য সামনে এসেছে বলে গোয়েন্দাদের দাবি। অভিযোগ, প্রশিক্ষণের নামে পাকিস্তানের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখে ওই সংগঠনের সদস্যেরা। ওই মডিউলের সদস্যেরা নিজেদের মধ্যে কথা বলার জন্য একটি বিশেষ ধরনের অ্যাপ ব্যবহার করে। ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নেমেছে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। এ রাজ্যের ঘটনার তদন্ত করছে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ।

Advertisement

তালহাকে গ্রেফতার করার পরে পশ্চিমবঙ্গে আনসার-উল-বাংলার অস্তিত্বের বিষয়েও নিশ্চিত হয়েছেন গোয়েন্দারা। তা ছাড়াও ত্রিপুরা, অসম, উত্তরপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশে জঙ্গি মডিউল কয়েক বছর ধরে সক্রিয় বলে জানাচ্ছে পুলিশ। অভিযোগ, বাংলাদেশ থেকে এখানে এসে সংগঠনের পাকাপাকি সদস্য হওয়ার পরে তালহা-রা এ দেশে সংগঠনের সদস্য-সংখ্যা বাড়িয়েছিল। মগজধোলাই চলছিল ভারতীয় যুবকদের।

পুলিশের দাবি, অসমের বরপেটা, উত্তরপ্রদেশের সহারানপুর, মধ্যপ্রদেশের ভোপাল, পশ্চিমববঙ্গের বাঁকড়ায় রীতিমতো শাখা বিস্তার করেছিল ওই সংগঠনের সদস্যেরা।

গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, মার্চের গোড়ায় অসমের বরপেটায় এক বাংলাদেশি-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করে সেখানকার পুলিশ। তাদের জেরা করে ভোপাল থেকে তিন বাংলাদেশি-সহ সাত জনকে গারদে পোরা হয়। পরে পশ্চিমবঙ্গ থেকে এক জন এবং ত্রিপুরা থেকে তিন জনকে ধরা হয়েছে। অসমে পরে ধরা পড়ে আরও আট জন। এক গোয়েন্দাকর্তা জানান, এ-পর্যন্ত ওই মডিউলের ২৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১০ জনই বাংলাদেশের নাগরিক।

এক গোয়েন্দা অফিসার জানান, ওই মডিউল বঙ্গে কতটা জাল বিছিয়েছে, তা জানার জন্য মইনুদ্দিনকে দরকার। বছর পাঁচেক আগে আনসার-উল-বাংলার কয়েক জন সদস্য গ্রেফতার হওয়ার পরে এ রাজ্যে তাদের কোমর ভেঙে গিয়েছিল। কিন্তু তারা আবার নতুন করে সদস্য সংগ্রহ করেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement