Akhil Giri Comment on President

মন্ত্রী অখিলকে বরখাস্তের দাবি, মুলতুবি প্রস্তাব খারিজ হওয়ায় বিধানসভা থেকে বিজেপির ওয়াকআউট

আদিবাসীদের পাঞ্চি উত্তরীয় পরে এবং দ্রৌপদী মুর্মুর স্টিকার জামায় সেঁটে বিধানসভা কক্ষে প্রবেশ করেন বিজেপি বিধায়করা। সেখানে পৌঁছেই তাঁরা বিধানসভায় মুলতবি প্রস্তাব জমা দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২২ ১১:৩৫
Share:

কারামন্ত্রী অখিল গিরি এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র ।

দেশের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে নিয়ে তৃণমূল সরকারের মন্ত্রী অখিল গিরির মন্তব্যের জেরে বিধানসভায় মুলতুবি প্রস্তাব জমা দিল বিজেপি পরিষদীয় দল। আদিবাসীদের পাঞ্চি উত্তরীয় পরে এবং দ্রৌপদী মুর্মুর স্টিকার জামায় সেঁটে বিধানসভা কক্ষে প্রবেশ করেন বিজেপি বিধায়করা। সেখানে পৌঁছেই তাঁরা বিধানসভায় মুলতবি প্রস্তাব জমা দেন। পাশাপাশি মন্ত্রী অখিলকে পদ থেকে অপসারণের দাবিতেও সোচ্চার হন বিজেপি বিধায়করা।

Advertisement

তবে আদালতের বিচারধীন বিষয় বলে অখিল গিরির বিরুদ্ধে আনা মুলতুবি প্রস্তাব বাতিল করে দেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পর বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপি বিধায়করা বিধানসভার কক্ষে চিৎকার করে স্লোগান দিতে শুরু করেন। তৃণমূলের মহিলা বিধায়কদের তরফে বিজেপির এই আচরণের প্রতিবাদ জানানো হয়। অধিবেশনের প্রথমার্ধ শেষের সঙ্গে সঙ্গেই বিজেপি বিধায়করা স্লোগান দিতে দিতে বাইরে বেরিয়ে যান।

বিধানসভার বাইরে এসে শুভেন্দু বলেন, ‘‘মন্ত্রী অখিল রাষ্ট্রপতিকে আক্রমণ করেছেন। এই ঘটনায় সারা ভারত উত্তাল হয়েছে। আমরা তাঁকে বরখাস্ত করার এবং গ্রেফতার করার দাবি করছি। আমরা মুলতুবি প্রস্তাব জমা গিয়েছিলাম। আমাদের সেই মুলতুবি প্রস্তাব বাতিল করেছেন বিধানসভার স্পিকার। আলোচনার সুযোগও দেওয়া হয়নি। সেই কারণে আমরা প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং স্পিকার বাধ্য হয়েছেন সভা মুলতুবি করতে।’’

Advertisement

বিধানসভায় পৌঁছে বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপতি আমাদের গর্ব। তাঁকে নিয়ে কুমন্তব্য করা হয়েছে। তাই তার প্রতিবাদে আমরা মুলতুবি প্রস্তাব এনেছি।’’

প্রসঙ্গত, এর আগেও অখিলকে মন্ত্রিত্ব থেকে অপসারণের দাবি নিয়ে রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়েছিলেন শুভেন্দু।

১১ নভেম্বর নন্দীগ্রামের একটি জনসভায় রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে কুমন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছিল কারামন্ত্রী তথা পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরের বিধায়ক অখিলের বিরুদ্ধে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুকে আক্রমণ করতে গিয়ে অখিল বলেন, ‘‘আমরা রূপের বিচার করি না। তোমার রাষ্ট্রপতির চেয়ারকে আমরা সম্মান করি। তোমার রাষ্ট্রপতিকে কেমন দেখতে বাবা?’’ সেই সভার ভিডিয়ো (যদিও ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন) ভাইরাল হতেই গোটা দেশ জুড়ে শোরগোল পড়ে যায়। প্রশ্ন ওঠে দেশের সাংবিধানিক প্রধানকে কী ভাবে অপমান করতে পারেন এক জন বিধায়ক? আর তার পর থেকে এই বিষয় নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে কম জলঘোলা হয়নি।

পঞ্চায়েত ভোটের আগে অখিলের এই মন্তব্য ঘিরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে আসরে নামে বিজেপি। অখিলের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় নালিশ থেকে আদালতে মামলা রুজু— সবই করা হয়েছে বিরোধী শিবিরের তরফে। দলীয় ভাবে এই মন্তব্য তৃণমূল সমর্থন করে না জানালেও বিতর্ক থেমে থাকেনি। অখিল ক্ষমাপ্রার্থনা করলেও উল্টে তাঁর বিরুদ্ধে বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে নিন্দা প্রস্তাব আনবেন বলে জানিয়েছিলেন বিজেপি বিধায়কেরা। এই আবহে ১৪ নভেম্বর দলের তরফে প্রকাশ্যে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাঁর মতে, ‘‘কোনও মানুষের রূপ-রং নিয়ে তাঁকে বিচার করা যায় না।’’ রাষ্ট্রপতিকে উদ্দেশ করে যে মন্তব্য করেছেন অখিল, তার জন্য দলের তরফে ক্ষমা চেয়ে নেন তিনি। খোদ মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর কৃতকার্যের জন্য ক্ষমা চাইতে হয়েছিল বলে তিনি ‘অত্যন্ত লজ্জিত’ বলেও মন্তব্য করেন অনুতপ্ত অখিল। তবে তাতেও বিতর্ক থামেনি। ১০ দিন পেরিয়েও অখিলের মন্তব্য নিয়ে সরব। আর তার জেরেই এই মুলতুবি প্রস্তাব।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement