মঙ্গলবার একমঞ্চে বিমল গুরুং, বিনয় তামাং এবং অজয় এডওয়ার্ড একযোগে দাবি করেছেন, পাহাড়ের গণতন্ত্র বিপন্ন। —নিজস্ব চিত্র।
ডিসেম্বরের কনকনে ঠান্ডায় রাজনৈতিক উত্তাপে ফুটছে পাহাড়। মঙ্গলবার একই মঞ্চে দেখা গেল বিমল গুরুং, বিনয় তামাং এবং অজয় এডওয়ার্ডকে। যা দেখে রাজ্য জুড়ে প্রশ্ন— পাহাড়ের রাজনীতিতে কি নতুন সমীকরণ?
পাহাড়ের ‘গণতন্ত্র বাঁচাতে’ মঙ্গলবার হামরো পার্টির সভাপতি অজয়ের আন্দোলনে যোগ দিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সুপ্রিমো বিমল এবং তৃণমূলের বিনয়। মঙ্গলবার একমঞ্চে ওঠার পর তিন জনেই একযোগে দাবি করলেন, পাহাড়ে গণতন্ত্র বিপন্ন। দার্জিলিঙের ক্যাপিটাল হলে ‘গোর্খা স্বভিমান সংঘর্ষ’ মঞ্চ তৈরি করে অজয় তা ভাগাভাগি করে নিলেন বিমল এবং বিনয়ের সঙ্গে। সেখানেই চলেছে আন্দোলন, গণস্বাক্ষর গ্রহণ।
বুধবার দার্জিলিং পুরসভায় অনাস্থা নিয়ে ভোটাভুটি। সেই সময় ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে পুলিশ। এই আবহে তৃণমূল ছাড়ার ইঙ্গিতও দিয়েছেন বিনয়। তিনি বলেন, ‘‘দার্জিলিং পুরসভার অনাস্থা ভোটে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সঞ্জয় গুরুংকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে। যদি তা না হয়, তা হলে আমি দল ছাড়তেই পারি, তা কলকাতায় হাইকম্যান্ডকে জানিয়ে দিয়েছি। আর পাহাড়ের গণতন্ত্র রক্ষার স্বার্থেই আমি এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছি।’’
দার্জিলিং পুরসভায় ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা যে অনৈতিক ভাবে বোর্ড দখল করতে চাইছে, বুধবারের অনাস্থা ভোটাভুটির আগে বিমল এবং বিনয়কে ডেকে তা প্রমাণে মরিয়া অজয়। তাঁর দাবি, ‘‘পাহাড়ে এখন কোনও অনুশাসন নেই। চোখের সামনে গণতন্ত্র হত্যা করা হয়েছে। অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে কাউন্সিলর কেনাবেচা চলছে। আমরা এই রাজনীতির বিরুদ্ধেই সকলে এক হয়েছি। শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতে আমরা সকলে মিলে পৃথক রাজ্য নিয়ে আন্দোলনের রূপরেখাও তৈরি করব।’’ হুমকিও দিয়েছেন অজয়। তিনি স্পষ্ট বলেন, ‘‘১৪৪ ধারা জারি হলেও আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলছে, চলবে। যদি কেউ বাধা দিতে আসে, তা হলে আমাকে গ্রেফতার করতে হবে। আমরা অশান্তির বিরুদ্ধে বলেই গান করে, ছড়া লিখে আন্দোলন করছি।’’
যদিও অনীতের ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা ইতিমধ্যে নতুন বোর্ড গড়ার প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে। বুধবার প্রজাতান্ত্রিক মোর্চাই বোর্ড দখল করবে বলে এক প্রকার নিশ্চিত তারা। দলের মুখপাত্র কেশবরাজ পোখরেলের দাবি, ‘‘ওরা হারার ভয়ে শঙ্কিত। নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য এ সব ভুলভাল আন্দোলন করছে। শুধু তা-ই নয়, শান্তিপূর্ণ পাহাড়কে অশান্ত করার চেষ্টা করছে। আমাদের দেশে নেতারা দল পরিবর্তন করেই থাকেন। এতে কোনও দোষ দেখতে পাচ্ছি না। আর ওদের এই আন্দোলনকে গুরুত্ব দিচ্ছে না গোটা পাহাড়।’’