ফাইল চিত্র।
শেষ পর্যন্ত ছয় মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হল সিপিএমের প্রয়াত প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক অনিল বিশ্বাসের কন্যা অজন্তা বিশ্বাসকে। অধ্যাপক এবং শিক্ষকদের নিয়ে গঠিত সিপিএমের যে এরিয়া কমিটির সদস্য অজন্তা, সেই কমিটি তাঁকে ছয় মাসের জন্য নিলম্বিত করার সুপারিশ করেছিল। কলকাতা জেলা সিপিএম নেতৃত্বের একাংশ এই শাস্তির মেয়াদ কমিয়ে তিন মাস করার পক্ষপাতী ছিলেন। কিন্তু ধারাবাহিক ভাবে তৃণমূলের নানা নেতৃত্ব এবং তাঁদের মুখপত্র যে ভাবে অজন্তার হয়ে সওয়াল করে গিয়েছে এবং স্বয়ং অজন্তা তার কোনও প্রতিবাদ করেননি, এই প্রেক্ষিত সামনে রেখে তাঁর শাস্তির মেয়াদ কমানোর বিরুদ্ধে শনিবার সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটির বৈঠকে জোরালো আপত্তি ওঠে। তার পরে এরিয়া কমিটির ওই ছয় মাস সাসপেনশনের সুপারিশেই সিলমোহর দেন কলকাতা জেলা নেতৃত্ব।
তবে এই বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আগাম নানা রকমের খবর ও জল্পনা তৈরি হওয়া নিয়ে এ দিনের বৈঠকে যথেষ্ট জলঘোলা হয়েছে। তার প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে, দলের কলকাতা জেলা নেতৃত্বের কেউ এখন প্রকাশ্যে এই বিষয়ে মুখ খুলবেন না।
তৃণমূলের মুখপত্রে ‘বঙ্গ রাজনীতিতে নারীশক্তি’ বিষয়ে কয়েক কিস্তিতে অজন্তার প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল। তার শেষ পর্বে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশস্তিও ছিল। দলের সদস্য হয়ে প্রতিপক্ষ দলের মুখপত্রে লেখা যে মেনে নেওয়ার মতো কাজ নয়, তখনই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব। অধ্যাপকদের জন্য নির্দিষ্ট কমিটি অজন্তাকে কারণ দর্শানোর চিঠি দিয়েছিল। অজন্তা যে ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন, তাতে এরিয়া কমিটি সন্তুষ্ট হয়নি। তখন তাঁকে নিলম্বিত করার সুপারিশ করেছিল তারা। সিপিএম সূত্রের বক্তব্য, শৃঙ্খলাভঙ্গের এমন ঘটনা অগ্রাহ্য করলে ‘নজির’ তৈরি হয়ে থাকবে, যা বাঞ্ছনীয় নয়। তাই কলকাতা জেলা সিপিএম এরিয়া কমিটির সুপারিশ অনুমোদন করেছে।
তৃণমূলের মুখপত্রের দায়িত্বে থাকা দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ এ দিন সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটির বৈঠক হওয়ার আগেই কটাক্ষ করে টুইট করেন, ‘‘আজ অজন্তা বিশ্বাসকে সাসপেন্ড করবে সিপিএম। ২০০৮ থেকে যারা দল ডোবাল, শূন্যতে নামাল, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেই। অজন্তাকে শাস্তির নামে কিছু অপরিচিত অপ্রাসঙ্গিক নেতা নিজেদের সাময়িক প্রচার চান। শাস্তি দিয়ে মন পাওয়া যায় না কমরেড। শূন্য থেকে মহাশূন্যের পথে।’’ প্রতিক্রিয়ায় সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর পাল্টা মন্তব্য, ‘‘ওঁর সব কথার জবাব দেওয়ার মানে হয় না। তবে উনিও তৃণমূলে সাসপেন্ড হয়েছিলেন। সাসপেনশন নিয়ে তখন ওঁর মনের কথা নিশ্চয়ই একই ছিল!’’