মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে কেন লেখা জানালেন অজন্তা বিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের মুখপত্রে উত্তর সম্পাদকীয় লিখে অধ্যাপক ও গবেষকদের নিয়ে গঠিত সিপিএমের কমিটির শো-কজের মুখে পড়েছেন তিনি। এবার সেই প্রসঙ্গেই অনিল বিশ্বাসের কন্যাঅজন্তার একটি অডিয়ো-বার্তা প্রকাশ্যে এল। সেই অডিয়ো ক্লিপের সত্যতা অবশ্য আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি। সেখানে তৃণমূলের মুখপত্রে লেখা নিয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও, কেন তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে লিখেছেন, তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন অজন্তা। যে ভাবে এক জন নারী হিসাবে ‘অসম লড়াই’ করে মমতা নিজেকে বাংলার রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা করেছেন, তারই উল্লেখ নিজের লেখায় করেছেন বলে দাবি করেছেন অনিল-কন্যা।
ওই অডিয়ো-বার্তায় অজন্তাকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘একদিকে আমার লেখাটি প্রাক্-স্বাধীনতা পর্বে পশ্চিমবাংলার রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ। ইতিহাসের দৃষ্টিকোণ থেকে রচিত এই লেখাটির একদিকে যেমন স্বাধীনতা আন্দোলনে জড়িয়ে থাকা সব নেত্রীরা রয়েছেন। রয়েছে তাঁদের অবদানের কথা। এই লেখায় যেমন এসেছে কংগ্রেস নেত্রীদের কথা, তেমনই রয়েছে বামপন্থী নারীদের প্রসঙ্গও।’’ এরপরেই তাঁর মন্তব্য,‘‘বঙ্গের রাজনীতিতে নারীদের ভূমিকা নিয়ে লিখতে গেলে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর প্রসঙ্গ আসাটাই স্বাভাবিক। তিনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। মহিলা নেত্রী হিসেবে বাংলার রাজনীতিতে অসম লড়াইয়ে নিজেকে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন। আমার প্রয়াস, দলমত নির্বিশেষে বঙ্গের রাজনীতিতে সব মহিলা নেত্রীর সদর্থক দিকগুলি তুলে ধরা।’’
গত বুধবার তৃণমূলের মুখপত্রে অজন্তার ‘বঙ্গ রাজনীতিতে নারীশক্তি’ শীর্ষক বিশেষ নিবন্ধের প্রথম কিস্তি প্রকাশিত হয়। তার পরেই রাজ্য সিপিএমের অন্দরে আলোড়ন পড়ে যায়। শনিবার ওই লেখার চতুর্থ তথা শেষ কিস্তি প্রকাশিত হয়েছে। একে তৃণমূলের মুখপত্রে অনিল-কন্যার লেখা, তার উপর মমতার গুণগান— সব মিলিয়ে বেজায় বিড়ম্বনায় পড়ে যায় আলিমুদ্দিন ষ্ট্রিট। তবে যাবতীয় বিতর্ক এড়াতে সিপিএমের সর্বস্তরের নেতাদের এ বিষয়ে মুখ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় আলিমুদ্দিন। পরে ঠিক হয়,অধ্যাপক ও গবেষকদের দলীয় কমিটি এ বিষয়ে অজন্তার কাছে জবাব চাইবে। কারণ, অজন্তা সিপিএমের পার্টি সদস্য। সঙ্গে দলের অধ্যাপক সংগঠনের সক্রিয় সদস্যও বটে। আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের নির্দেশ পেয়ে ওই কমিটি অজন্তার কাছে তাঁর অবস্থান লিখিত ভাবে জানতে চায়।বৃহস্পতিবার তাঁকে জানানো হয়, সাতদিনের মধ্যে অজন্তাকে ওই জবাব দিতে হবে। কিন্তু তাঁর আগেই অডিয়ো-বার্তায় নিজের অবস্থান খানিকটা হলেও স্পষ্ট করলেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা।
বিরোধী দলের মুখপত্রে কোনও লেখা বা নিবন্ধ প্রকাশিত হলে তা দলবিরোধী কাজেরই শামিল সিপিএমের মতো দলে। দলেরকোনও সদস্য এমন কাজ করলে তাঁর বিরুদ্ধে ক়ড়া অবস্থান নেওয়ার কথা। সম্ভবতঅনিল বিশ্বাসের মেয়ে বলেই অজন্তার বিরুদ্ধে এখনও প্রকাশ্যে কোনও কড়া অবস্থান নিয়ে উঠতে পারেনি সিপিএম। সিপিএম শীর্ষ নেতৃত্ব এই মুহূর্তে শুধু অস্বস্তিতেই নেই, চরম বিভ্রান্তও।