পাহাড়ে অশান্তির জেরে ভাটা উড়ানে

বাগডোগরা বিমানবন্দরের অর্ধিকর্তা রাকেশ সহায় বলেন, ‘‘বিমান সংস্থা দুটির তরফে দিল্লির সিভিল এভিয়েশন পরিচালককে (ডিজিসিএ) চিঠি দিয়ে পরিষেবা তুলে নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। আশা করছি, পরিস্থিতি দ্রুত বদলাবে।’’

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৭ ০৩:৫৫
Share:

ছবি: সংগৃহীত

দার্জিলিং পাহাড়ের আন্দোলনের প্রভাব এবার এসে পড়ল বিমান পরিবহণেও। গত জুন মাসে পাহাড় অনির্দিষ্টকালের বনধ শুরু হতেই একাধিক বিমানের যাত্রী সংখ্যা কমতেই বাগডোগরা থেকে বিমান বাতিল হওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রথম ১ জুলাই থেকে একটি বেসরকারি বিমান সংস্থা তাঁদের বেঙ্গালুরুর বিমানটি বন্ধ করে দিয়েছে। তার পরেই আরেকটি সংস্থা আগামী ১৫ জুলাই থেকে বাগডোগরা থেকে সরাসরি মুম্বইয়ের বিমান আপাতত চালানো হবে না বলে ঘোষণা করেছে। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, বেঙ্গালুরুর বিমানটির পরিষেবা শুধুমাত্র গরমের মরশুমে চালু থাকবে বলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু মুম্বইয়ের বিমানটি পুজোর সময় তো বটেই আগামী অক্টোবর মাস অবধি চালানোর সময়সূচি জানিয়েও দিয়েছিল।

Advertisement

আরও পড়ুন: আধাসেনা নিয়ে তরজায় কেন্দ্র আর রাজ্য

বিমানবন্দরের অফিসারেরা জানিয়েছেন, গত ১৫ জুন পাহাড়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা অনির্দিষ্টকালের বনধের ঘোষণা করে। তার পর থেকেই মুম্বই, বেঙ্গালুরুর বিমানে যাত্রী সংখ্যা কমতে শুরু করে। জুনের প্রথমে পর্যটক থেকে ফিরে যাওয়ার হিড়িকে ১৮৮ আসনের বিমানগুলি প্রায় ভর্তিই ছিল। পাহাড়ের আঁচ সিকিমেও পড়া শুরু হতেই পরিস্থিতি আরও বদলায়। সপ্তাহে প্রতিদিন চলা বিমানের যাত্রী সংখ্যাটা ১২০/১২৫ থেকে নেমে একসময় ৯০/৯২ জন পর্যন্ত চলে এসেছিল। শনিবার, রবিবার ছুটির দিনেও ৯০ জনের বেশি যাত্রী হচ্ছিল না। শেষে, যাত্রী নেই বলে জানিয়ে প্রথমে বেঙ্গালুরু পরে মুম্বইয়ের বিমানটি আপাতত না চালানোর কথা জানিয়ে দেয় সংস্থা দুটি। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে দিল্লি বা গুয়াহাটি মতো একাধিক বিমানের সংখ্যা সংস্থাগুলি কমিয়ে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Advertisement

বাগডোগরা বিমানবন্দরের অর্ধিকর্তা রাকেশ সহায় বলেন, ‘‘বিমান সংস্থা দুটির তরফে দিল্লির সিভিল এভিয়েশন পরিচালককে (ডিজিসিএ) চিঠি দিয়ে পরিষেবা তুলে নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। আশা করছি, পরিস্থিতি দ্রুত বদলাবে।’’

বাগডোগরার এয়ারপোর্ট অথরিটির কয়েক জন অফিসার জানান, সিকিম ও দার্জিলিঙের বহু বাসিন্দা, তরুণ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা মুম্বই, বেঙ্গালুরুতে পড়াশুনো এবং কর্মসূত্রে থাকেন। বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, কর্পোরেট সংস্থা, হোটেল, চেন রেস্তোরাঁ, ফ্যাশন ইনস্টিটিউট, কলসেন্টারে তাঁরা কাজ করেন। পাহাড় অশান্ত হতেই তাঁরা নিয়মিত আসা-যাওয়া বন্ধ করেছেন। তেমনিই, মহারাষ্ট্র, গুজরাত, কর্নাটকের নিয়মিত পর্যটকেরাও উত্তরে আসছেন না। দার্জিলিং-সিকিম পাহাড়ের বদলে তাঁরা সিমলাকে বেছে নিয়েছেন। এতে সমস্যা বাড়ছে। দিল্লির ক্ষেত্রেও একই সমস্যার আশঙ্কা রয়েছে।

গত বছর জুন মাসে বাগডোগরার যাত্রী সংখ্যা ১,২৮,৫০৩ ছিল। গত এপ্রিলে রেকর্ড ভেঙে যাত্রী সংখ্যা ১৫ লক্ষ ছাড়ায়। বিমানের চলাচলের সংখ্যা দাঁড়ায় ১১৫৯৯টি। একটি আন্তর্জাতিক বিমান-সহ রোজ ২১টি চলাচল করছিল। কিন্তু পাহাড়ের এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে চলতি মরশুমে তো বটেই আগামী পুজোর মরশুমে পরিস্থিতি নিম্নমুখী হবে বলে অফিসারদের আশঙ্কা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement