প্রতীকী ছবি।
বাংলায় বামেদের সঙ্গে নির্বাচনী জোটের পক্ষেই আনুষ্ঠানিক সিলমোহর দিল কংগ্রেস হাইকম্যান্ড। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের চূড়ান্ত সম্মতি পাওয়ার পরে এ বার আসন-ভাগের আলোচনা শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে কংগ্রেস।
কেন্দ্রের কৃষি আইনের প্রতিবাদ জানাতে রাষ্ট্রপতির কাছে যাওয়ার আগে বৃহস্পতিবার রাহুল গাঁধী কথা বলেন বাংলায় এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক জিতিন প্রসাদ ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর সঙ্গে। কয়েক দিন আগেই কলকাতা ঘুরে গিয়ে এআইসিসি-কে রিপোর্ট দিয়েছিলেন জিতিন। রাহুলের এ দিনের আলোচনার কিছু ক্ষণ পরেই বামেদের সঙ্গে জোটের পক্ষে আনুষ্ঠানিক ছাড়পত্র দিয়ে দেয় এআইসিসি। সেই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে অধীরবাবু বলেছেন, ‘‘রাজ্যে বামেদের সঙ্গে নিয়েই আমাদের যৌথ কর্মসূচি চলছে। এ বার এআইসিসি-র আনুষ্ঠানিক সম্মতির পরে নির্বাচনী জোটের প্রক্রিয়া শুরু হবে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘গত বছরের লোকসভা নির্বাচন এবং ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন কিন্তু এক নয়। বিজেপি যদি ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের ভিত্তিতে মনে করে থাকে বিধানসভায় তারা জিতে যাবে, তা হলে ভুল করছে! বাংলায় তৃণমূল ও বিজেপির বিকল্প হিসেবে উঠে আসবে কংগ্রেস-বাম জোটই।’’
কংগ্রেসের ঘোষণাকে প্রত্যাশিত ভাবেই স্বাগত জানিয়েছে সিপিএম। আসানসোলে এ দিন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, ‘‘বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়েই সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়ব আমরা। কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের সিদ্ধান্ত ও অধীরবাবুর ঘোষণার ফলে বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ মানুষকে একজোট করার প্রক্রিয়া আরও শক্তিশালী হবে। দু’দলের বিরুদ্ধেই জোরদার আন্দোলন গড়ে তুলব।’’
জোটে সম্মতির পরে এ বার কংগ্রেস কত আসন দাবি করবে, সেটাই বড় প্রশ্ন। অধীরবাবু এ দিন ইঙ্গিত দিয়েছেন, আগের বারের চেয়ে কংগ্রেস কিছু বেশি আসন চাইতে পারে। সিপিএমের মত, শুধু সংখ্যার পিছনে না গিয়ে এলাকা বুঝে ‘ভাল’ আসন দেওয়া হোক কংগ্রেসকে। তাতে ‘স্ট্রাইক রেট’-এ সমস্যা হবে না। আবার এই সূত্র মানতে গেলে মুর্শিদাবাদ, মালদহ বা উত্তর দিনাজপুরে বেশি আসন দিতে হবে কংগ্রেসকে, যাতে আপত্তি তুলতে পারে বাম শরিকেরা। ফলে, আসন-ভাগের পর্বে এখনও অনেক ধাপ পেরোনো বাকি।
আরও পড়ুন: ব্রিটেনের পরে দক্ষিণ আফ্রিকার স্ট্রেন নিয়ে আতঙ্ক
আরও পড়ুন: পাল্টা কৃষক জমায়েতে আজ বক্তৃতা মোদীর
এআইসিসি-র ঘোষণার পরেই এ দিন কংগ্রেস বিধায়ক নেপাল মাহাতো ফের দাবি তুলছেন, এই জোটের ‘মুখ’ করা হোক প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে। নিজের ঘনিষ্ঠ, পুরুলিয়ার কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায় বিজেপিতে চলে যাওয়ায় কয়েক দিন আগেই ক্ষমা চাইতে দেখা গিয়েছিল নেপালবাবুকে। তাঁদের ওই দাবির প্রেক্ষিতে স্বয়ং অধীরবাবু অবশ্যে বলেছেন, দলে এই নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। তাই এই বিষয়ে কিছু বলার সময় আসেনি। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানও হাইকম্যান্ডের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ‘‘আমরা মুখ্যমন্ত্রী-মুখ হিসেবে কাউকে সামনে রেখে লড়ব কি না, সেটা এআইসিসি-র উপরেই নির্ভর করছে।’’