Agnimitra Paul

সায়ন্তনের পর অগ্নিমিত্রাকেও শো-কজ, কড়া বার্তা বিজেপি-র

অগ্নিমিত্রাকে শো-কজটি ধরিয়েছেন রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়। দিলীপ ঘোষকেও শো-কজের একটি কপি পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২০ ১২:১৩
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

সায়ন্তন বসুদের পর এ বার অগ্নিমিত্রা পাল। রাজ্যে দলের মহিলা মোর্চার সভাপতিকেও এ বার শো-কজ নোটিস ধরাল বিজেপি।

ঠিক কী কারণে অগ্নিমিত্রাকে শো-কজ ধরানো হল, তার উল্লেখ যদিও নেই চিঠিতে। তবে ১৮ ডিসেম্বর সংবাদমাধ্যমের সামনে যে মন্তব্য করেছিলেন, তার প্রেক্ষিতেই তাঁকে শো-কজ করা হয়েছে বলে চিঠিতে জানানো হয়েছে। ওই দিন আসানসোলের তৃণমূল বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারির পদ্মশিবিরে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বর উদ্দেশে কটাক্ষ করতে দেখা গিয়েছিল অগ্নিমিত্রাকে। তার পরই শো-কজ নোটিস পেলেন তিনি। তবে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি অগ্নিমিত্রা। আনন্দবাজার ডিজিটালের তরফে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে অগ্নিমিত্রা বলেন, ‘‘এটা দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলব না আমি।’’

জিতেন্দ্রকে দলে নেওয়ার বিরোধিতায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ই প্রথম সরব হন। সেইসময় তাঁর সমর্থনে এগিয়ে আসেন অগ্নিমিত্রা। গত শুক্রবার সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘‘উনি বাবুলদার ওপর দিনের পর দিন অত্যাচার করে গিয়েছেন। কাজ করতে দেননি। আজ ভোটের চার মাস আগে ওঁর উন্নয়নের কথা মনে পড়েছে? আসানসোলের মানুষ ওঁকে চান না। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। আমাদের দলে যে কেউ আসতে পারেন। কাকে কতটা দায়িত্ব দেওয়া হবে তা-ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের হাতেই। তবে কে, কতটা দায়িত্ব পাবেন, সেটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: অপেক্ষা ছাড়পত্রের, নতুন বছরের শুরুতেই দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত চলবে মেট্রো​

এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতেই অগ্নিমিত্রাকে শো-কজ ধরানো হয়েছে বলে জল্পনা। তাঁকে শো-কজটি ধরিয়েছেন রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়। চিঠিটি যদিও ২২ ডিসেম্বর লেখা হয়েছিল। অর্থাৎ একই দিনে সায়ন্তন এবং অগ্নিমিত্রাদের উদ্দেশে ওই চিঠি লেখা হয়েছিল। তবে সায়ন্তনদের মঙ্গলবারই চিঠি ধরানো হলেও, অগ্নিমিত্রাকে শো-কজ ধরানো হয় বুধবার সকালে।

ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ১৮ ডিসেম্বর সংবাদমাধ্যমের সামনে অগ্নিমিত্রা যে মন্তব্য করেছেন, তা দলের পক্ষে অপমানজনক এবং দলবিরোধীও বটে। তাতে দলীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে সংগঠন বিরোধী মনোভাব প্রকাশ পেয়েছ। দলীয় সংবিধান অনুযায়ী অগ্নিমিত্রাকে দল অবিলম্বে বহিষ্কার করা যেতে পারে। কেন তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে না, আগামী ৭ দিনের মধ্যে তা জানাতে বলা হয়েছে অগ্নিমিত্রাকে।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকেও ওই শো-কজের একটি কপি পাঠানো হয়েছে। এমনকি তাঁর নির্দেশেই অগ্নিমিত্রাকে শো-কজ করা হল বলে স্পষ্ট লেখাও রয়েছে চিঠিতে। কিন্তু দিলীপ নিজেই যেখানে জিতেন্দ্রর দলে যোগদানের বিরোধিতায় প্রকাশ্যে মুখ খুলেছিলেন, তিনি কোন যুক্তিতে অগ্নিমিত্রাকে শো-কজ ধরানোর নির্দেশ দিলেন, তা নিয়ে অন্দরেই প্রশ্ন উঠছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: আগামী সপ্তাহেই অক্সফোর্ডের কোভিড টিকার অনুমোদন দিতে পারে ভারত​

তবে গেরুয়া শিবিরের একাংশের দাবি, জিতেন্দ্রকে দলে নেওয়ার বিরোধিতায় প্রথম বাবুল সুপ্রিয়ই সরব হয়েছিলেন। সেইসময় দিলীপ জানিয়েছিলেন, বাবুলের যুক্তি সঙ্গত। দিলীপের এই মন্তব্য ভাল ভাবে নেননি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তাই বঙ্গ সফরে এসে অমিত শাহ বুঝিয়ে দেন, দলে কাকে নেওয়া হবে, আর কাকে নেওয়া হবে না, তা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বই ঠিক করবেন। আর তার পরেই দিলীপের নাম করে রাজ্যের একের পর এক নেতাকে শো-কজ ধরানো হয়।

বিজেপি সূত্রে খবর, সায়ন্তন-অগ্নিমিত্রাদের কড়া চিঠি দিয়ে আসলে বাবুল এবং দিলীপকে বার্তা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। যাতে তাঁরা সতর্ক হয়ে যান এবং রাজ্যের নেতারাও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলার সাহস না পান। অগ্নিমিত্রাকে শো-কজ ধরানোর আগে মঙ্গলবার সায়ন্তন এবং নাগরাকাটার মণ্ডল প্রেসিডেন্ট সন্তোষ হাতি, গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা আলিপুরদুযারের জেলা সভাপতিকেও শো কজ নোটিস ধরায় বিজেপি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement