University of Calcutta

উপাচার্যহীন সিইউ-এর অচলাবস্থা নিয়ে ক্ষোভ

কার্যত পাঁচ সপ্তাহ ধরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যহীন। এখনও উচ্চ শিক্ষা দফতরের তরফ থেকে নতুন উপাচার্য কে হতে চলেছেন তা জানানো হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২২ ০৬:৫৭
Share:

সোনালি চক্রবর্তী বন্দোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে সোনালি চক্রবর্তী বন্দোপাধ্যায়ের পুনর্নিয়োগ ১৩ সেপ্টেম্বর খারিজ করে দিয়েছিল হাই কোর্ট। সুপ্রিম কোর্ট ১১ অক্টোবর সেই রায়ই বহাল রেখেছে।

Advertisement

তারপর থেকে কার্যত পাঁচ সপ্তাহ ধরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যহীন। এখনও উচ্চ শিক্ষা দফতরের তরফ থেকে নতুন উপাচার্য কে হতে চলেছেন তা জানানো হয়নি। দফতর সূত্রের খবর, সোমবার পর্যন্ত এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে কোনও কিছু এগোয়নি। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি।

দেশের প্রাচীনতম ঐতিহ্যশালী এই বিশ্ববিদ্যালয় এত দিন উপাচার্যহীন থাকায় স্বভাবতই শিক্ষা মহলে বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেরই মত, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সুদীর্ঘ ইতিহাসে এ এক নজিরবিহীন ঘটনা। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্ম বিঘ্নিত হচ্ছে।

Advertisement

রাজ্যের ২৪ জন উপাচার্যের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তৎকালীন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। অভিযোগ করেছিলেন, সব ক’টি নিয়োগই আচার্য-হিসাবে তাঁর সম্মতি ছাড়া হয়েছে। তাঁদের অন্যতম কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য সোনালির পুনর্নিয়োগের সরকারি সিদ্ধান্ত আইনসঙ্গত নয় বলে আদালত জানিয়েছে। তাঁর পরিবর্ত হিসাবে কারও নাম এখনও জানাতে পারেনি রাজ্য। শিক্ষা মহলের একাংশের বক্তব্য, তালিকার অন্য উপাচার্যদেরও সরতে হলে তাঁদের বদলি উপাচার্যদের কথাও ভাবতে হবে সরকারকে।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির (কুটা) সভানেত্রী মহালয়া চট্টোপাধ্যায় এবং সাধারণ সম্পাদক সনাতন চট্টোপাধ্যায় সোমবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে পঠনপাঠন ও গবেষণার মতো দৈনন্দিন কাজ ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই ব্যাপারে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা এবং নীরবতা বিস্ময়কর। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সমস্ত বিধিনিষেধ মেনে অতি দ্রুত স্থায়ী উপাচার্যের নিয়োগ চাইছে কুটা।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এমপ্লয়িজ় অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুদীপ্ত বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে অভাবনীয় অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। শিক্ষক নিয়োগ থেকে কর্মচারীদের পদোন্নতি, বদলি-সহ নানা বিষয়ে আগেই বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গণতান্ত্রিক পদ্ধতি মেনে সেনেট ও সিন্ডিকেট নির্বাচনও জরুরি। শিক্ষাকর্মীদের আর এক সংগঠন ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটি এমপ্লয়িজ় ইউনিয়ন এতদিন উপাচার্য পদ শূন্য থাকার বিষয়টিকে নজিরবিহীন বলে বর্ণনা করেছে। তার সাধারণ সম্পাদক ললিতমোহন গায়েন বলেন, ‘‘এতে সমস্ত কাজে বিঘ্ন ঘটছে।’’

উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয়, দীর্ঘদিন ধরে সহ উপাচার্য (অর্থ) পদ ফাঁকা, একই ব্যক্তিকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্ব দেওয়া— বিশ্ববিদ্যালয়ের তফসিলি সম্প্রদায়ভুক্ত শিক্ষক, আধিকারিক ও শিক্ষাকর্মীদের সংগঠন এমন নানা বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজ্যপাল লা গনেশনকে চিঠি দিয়েছে। ‘ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটি এসসি, এসটি অ্যান্ড ওবিসি ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’ জানিয়েছে, সহ উপাচার্য (শিক্ষা)-কে যে ভাবে সহ উপাচার্য (অর্থ) পদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিরোধী। জানানো হয়েছে, বিশ্ববিদ্যায়ের সিন্ডিকেটে দীর্ঘদিন নির্বাচিত প্রতিনিধি নেই। নেই তফসিলি কোনও প্রতিনিধি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement