খড়্গপুর আইআইটি-র বিভিন্ন স্কুলের পড়ুুয়া-অভিভাবক-শিক্ষকদের বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
করোনাকালে স্কুল চালু হলেও খোলেনি ক্যাম্পাসের কয়েকটি গেট। এর জেরে ঘুরপথে স্কুলে যেতে গিয়ে হয়রান পড়ুয়ারা। তাই বিক্ষোভের পথ বেছে নিল খড়্গপুর আইআইটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্কুলের পড়ুুয়ারা। ওই বিক্ষোভে শামিল হলেন পড়ুয়াদের মা-বাবা-অভিভাবকেরা। এমনকি, স্কুলের শিক্ষক-সহ প্রাক্তনীরাও তাতে যোগ দিলেন।
শুক্রবার সকাল থেকেই খড়্গপুর আইআইটি-র প্রধান গেটের সামনে বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখায় পড়ুয়ারা। ফ্লেক্স-পোস্টার হাতে দেখা যায় প্রতিবাদী মঞ্চকেও। যদিও এ বিষয়ে প্রথমে কোনও মন্তব্য না করলেও পরে আইআইটি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন ২৩ ফেব্রুয়ারি সমাবর্তনের পরে এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
করোনার আবহে রাজ্যের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতোই আইআইটি ক্যাম্পাসের ভিতরের বিভিন্ন স্কুল বন্ধ ছিল। এর পর স্কুল খুলে গেলেও প্রধান গেটটি ছাড়া আইআইটি-র সমস্ত গেট খোলেনি। আইআইটি-র ভিতরের একটি স্কুলের শিক্ষক অমিতাভ দাসের অভিযোগ, “আইআইটি কর্তৃপক্ষ নিজেদের মতো করে একটি গেট খুলে রেখেছেন। তবে ক্যাম্পাসে প্রবেশের আরও ৫-৬টি গেট রয়েছে। সেগুলি লকডাউনের সময় থেকে বন্ধ করে রাখা হয়েছে। ক্যাম্পাসের ভিতরে হিন্দি, বাংলা এবং ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল রয়েছে। সে সমস্ত স্কুলের পড়ুয়াদের যাতায়াতের জন্য ক্যাম্পাসের চারদিকে যে গেটগুলি রয়েছে, সেগুলি খুলে দিলে কম সময়ে স্কুলে পৌছতে পারবে পড়ুয়ারা। কিন্তু ঘুরপথ দিয়ে মূল গেট হয়ে প্রবেশ করতে হচ্ছে।”
বিক্ষোভকারীদের দাবি, আইআইটি ক্যাম্পাসের সমস্ত গেট খুলে দেওয়া হলে শুধু পড়ুয়া নয়, অভিভাবক, প্রাক্তনী, পেনশনপ্রাপক-সহ স্থানীয় ব্যবসায়ীদেরও যাতায়াতে সুবিধা হবে।
শুক্রবার সকালে আইআইটি-র সামনে বেশ কিছুক্ষণ বিক্ষোভ চলার পর অবশেষে পুলিশি হস্তক্ষেপে অবরোধ উঠে যায়। এ বিষয়টি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। শুক্রবারের বিক্ষোভ নিয়ে প্রাথমিক ভাবে আইআইটি কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে পরে আইআইটি-র রেজিস্ট্রার তমাল নাথ বলেন, “কোন নোটিশ ছাড়া শুক্রবার প্রধান গেট বন্ধ করে কয়েক জন বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। ক্যাম্পাসে যে ৪টি স্কুল রয়েছে, তার প্রিন্সিপাল এবং প্রধান শিক্ষকদের নিয়ে দু’দিন আগেই বৈঠক করেছেন আইআইটি-র ডিরেক্টর। ২৩ ফেব্রুয়ারি সমাবর্তন অনুষ্ঠান রয়েছে। তার পরে অন্যান্য গেটগুলি খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” তিনি আরও জানিয়েছেন, কোন কোন গেট দিয়ে ওই স্কুলগুলির পড়ুয়াদের ঢুকতে সুবিধা হবে, তা নিয়েও খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া, কোন সময়ে গেট খোলার ব্যবস্থা করলে সুবিধা হয়, তার সময়সূচি জানতে চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেজিস্ট্রার। যদিও তাঁর কটাক্ষ, “বিক্ষোভকারীরা কেন কেন বিক্ষোভ দেখালেন, তা তাঁরাই বলতে পারবেন। শুক্রবার একটি স্কুলের পরীক্ষা ছিল, সে সময় প্রধান গেটে বিক্ষোভ হওয়ায় অন্য গেট দিয়ে পরীক্ষার্থী এবং স্কুল কর্তৃপক্ষকে ঢোকানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।”