শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের আগে ১০০ দিনের প্রাপ্য নিয়ে ফের রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়াচ্ছে রাজ্যে। ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’য় টাকা বন্ধের অভিযোগে সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। পাল্টা ‘দুর্নীতি’র অভিযোগ তুলে টাকা বন্ধ করার কারণ হিসেবে তৃণমূলকেই দায়ী করেছে বিজেপি।
বকেয়া আদায়ের লক্ষ্যে আগামী সপ্তাহেই দিল্লি যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ২০ তারিখে নতুন সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি থাকার কথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ আরও কয়েক জন সাংসদের। তার আগেই শনিবার উত্তরবঙ্গে ১০০ দিনের বকেয়া টাকা নিয়ে বিক্ষোভ হল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পথে। জলপাইগুড়িতে এক রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যাওয়ার পথে শুভেন্দুর উদ্দেশে বিক্ষোভ দেখানো হয়। পরে শুভেন্দু বিক্ষোভকারীদেরই পাল্টা ‘চোর’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
রাজ্যের প্রতি বঞ্চনার প্রমাণ হিসেবে ১০০ দিনের কাজে বকেয়া টাকা নিয়ে ফের পথে নামছে তৃণমূল। এই দাবিতে মুখ্যমন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রীর বৈঠককে রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার করতে চাইছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের এই ‘বঞ্চনা’র জন্য এ রাজ্যের বিজেপি নেতাদের দায়ী করে সরব হয়েছে তারা। সেই লক্ষ্যেই এ দিন চালসায় একটি কর্মসূচিতে যাওয়ার পথে শুভেন্দুর উদ্দেশে টাকা চেয়ে বিক্ষোভ দেখান কিছু মানুষ। তাঁদের দাবি, ১০০ দিনের টাকা তাঁদের ন্যায্য প্রাপ্য। রাজ্যের বিজেপি নেতাদের চাপেই কেন্দ্রীয় সরকার তা আটকে রেখেছে।
বিজেপিও এই প্রশ্নে তৃণমূলের বিরুদ্ধে চুরি ও দুর্নীতির অভিযোগই সামনে রেখেছে। এ দিন দলীয় সভায় শুভেন্দু বলেন, ‘‘দেখলাম, ৩০ জন চোর দাঁড়িয়ে আছে। হাতে লেখা ছিল, ‘একশো দিনের কাজের টাকা দিতে হবে।’ আমরা টাকা দেব। গিরিরাজ সিংহও টাকা দিতে তৈরি আছেন। টাকা দেব তখন, যখন চোরেরা জেলে যাবে।’’ উত্তরঙ্গের এই সীমান্ত জেলায় দাঁড়িয়ে শুভেন্দু এ দিন অভিযোগ করেন, ‘‘ভুটান থেকে আসা পাথর থেকে শুরু করে গন্ডারের খড়গ, সাপ, বাঘের চামড়া, বালি, পাথর সব চুরি করছে তৃণমূল।’’
রাজ্যের প্রতি বঞ্চনার অভিযোগে তৃণমূলকে মাঠ ছেড়ে দিতে নারাজ বিজেপি। তাই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠককে কেন্দ্র করে যাতে তৃণমূল বাড়তি রাজনৈতিক সুবিধা না পায়, সে দিকে নজর রাখছে তারা। দিল্লিতে ১০০ দিনের বকেয়ার দাবিতে সম্প্রতি তৃণমূল যখন কর্মসূচি নিয়েছিল, সেই সময়েই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুকে দিল্লিতে ডেকে পাল্টা সরব হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিল বিজেপি। এ বারও মোদী-মমতা বৈঠকের সময় প্রয়োজনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে চুরি ও দুর্নীতির অভিযোগে প্রচার ও পাল্টা চাপের কৌশল নিতে পারে তারা।