প্রতীকী ছবি।
শিক্ষকতায় ও শিক্ষাকর্মে দীর্ঘ আঠারো বছরের অভিজ্ঞতার পরেও স্নাতক ডিগ্রিধারী শিক্ষক ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মীরা উচ্চতর বেতনের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠছে। শিক্ষা শিবিরের একাংশ জানাচ্ছেন, ‘রোপা ২০১৯’ অনুযায়ী স্নাতক-শিক্ষক ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের সংশোধিত বেতন সংক্রান্ত যে-আদেশনামা বেরিয়েছে, তাতে এই ধরনের বিস্তর অসঙ্গতি রয়েছে।
শিক্ষা শিবিরের বক্তব্য, শিক্ষকতায় ১৮ বছরের অভিজ্ঞতার পরে স্নাতক-শিক্ষকদের উচ্চতর বেতন প্রাপ্তি হত। কিন্তু সম্প্রতি প্রকাশিত রোপা ২০১৯ রিপোর্টে শিক্ষকতার ১৮ বছরের অভিজ্ঞতার পরে উচ্চতর বেতনের উল্লেখই নেই। এর ফলে স্নাতক-শিক্ষক-শিক্ষিকারা আর্থিক দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এ ছাড়া, ২০১৯ রোপায় প্রধান শিক্ষকের পদে নিয়োগের ১০ বছর পরে ইনক্রিমেন্টের কথা বলা হয়েছে। যার ফলে প্রধান শিক্ষকরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। শিক্ষকদের মতে, রোপা ২০১৯ অনুযায়ী কোনও সাধারণ শিক্ষক কয়েক বছর কাজ করার পরে যদি প্রধান শিক্ষক হয়ে যান, তা হলে পরবর্তী ইনক্রিমেন্ট পেতে তাঁকে প্রধান শিক্ষক হওয়ার দিন থেকে ফের ১০ বছর অপেক্ষা করতে হবে। প্রধান শিক্ষক হওয়ার আগে যে-ক’বছর তিনি সাধারণ শিক্ষক হিসেবে কাজ করলেন, সেই বছরগুলোকে আর হিসেবে ধরাই হচ্ছে না! এ-রকম হলে প্রধান শিক্ষক হওয়ার উৎসাহ কমতে থাকবে বলে শিক্ষকদের আশঙ্কা। তাঁদের দাবি, শিক্ষকতার প্রথম বছরকে ধরে প্রধান শিক্ষকদের ইনক্রিমেন্ট দিতে হবে।
অনেক রাজ্যে স্নাতক ডিগ্রিধারী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের গ্রেড পে পশ্চিমবঙ্গের স্নাতক পাশ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের তুলনায় অনেক বেশি। এই বেতনবৈষম্য দূর করার দাবিতে ধর্মতলায় অবস্থানে বসেছিলেন বঙ্গের স্নাতক-শিক্ষকেরা। তাঁদের অভিযোগ, রোপা ২০১৯-এ রাজ্যের স্নাতক-শিক্ষকদের গ্রেড পে সংক্রান্ত বৈষম্য দূর করার কেনও উল্লেখ নেই। পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নবকুমার কর্মকার ও শিক্ষক শিক্ষাকর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, ‘‘রোপা ২০১৯-এর এই সব অসঙ্গতির কথা স্কুলশিক্ষা দফতরের সচিব মণীশ জৈনের কাছে লিখিত ভাবে দিয়েছি। আশা করছি, বেতনবৈষম্য দূর করার বিষয়ে পুনরায় বিবেচনা করা হবে।’’ স্কুলশিক্ষকদের এই অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য স্কুলশিক্ষা দফতরের সচিবকে বার বার ফোন করা হয়, পাঠানো হয় এসএমএস-ও। উত্তর মেলেনি।