সোমবার উত্তর কলকাতায় সেন্ট্রাল এভিনিউয়ে সেই পোস্টার।
অতীতে কখনও এমন অস্বস্তিতে পড়তে হয়নি রাজ্য বিজেপি-কে। দলের সম্মানজনক পদ সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন)-কে লক্ষ্য করে কুরুচিকর পোস্টার চোখে পড়েছিল শনিবারই। সেটা ছিল ট্রেনের কামরায়। এ বার কলকাতার রাজপথে।
এর আগে এই পদে থাকা অমলেন্দু চট্টোপাধ্যায় বা সুব্রত চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে কিছু কিছু ক্ষোভ-বিক্ষোভ তৈরি হলেও সেটা ছিল দলের অন্দরে। এ ভাবে রাস্তায় নেমে আসেনি। কিন্তু অমিতাভ চক্রবর্তীকে নিয়ে ক্ষোভ ক্রমশই যেন বাড়ছে। সোমবার উত্তর কলকাতায় সেন্ট্রাল এভিনিউয়ে একটি পোস্টার চোখে পড়েছে যেখানে অমিতাভর সঙ্গে তৃণমূলের ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার যোগাযোগের অভিযোগ উঠেছে। ওই পোস্টারে লেখা হয়েছে, 'পিকে-র টিমের দালাল অমিতাভ চক্রবর্তী হঠাও, বিজেপি বাঁচাও।' এমন পোস্টার উত্তর কলকাতার একাধিক জায়গায় দেখা গিয়েছে। একটি ছিল দলের রাজ্য দফতরের একেবারে কাছে। পোস্টারের নীচে লেখা, 'সারা রাজ্যের বিজেপি বাঁচাও কর্মী এক হও।' প্রসঙ্গত রবিবার একটি ডাউন বনগাঁ লোকাল শিয়ালদহ স্টেশনে পৌঁছলে দেখা যায়, অমিতাভর বিরুদ্ধে কুরুচিকর পোস্টার। বিরোধীদের দাবি, এই সব পোস্টার গেরুয়া শিবিরের একাংশই দিয়েছে। যদিও দলের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য দাবি করেন, এটা বিজেপি-র সংস্কৃতি নয় এবং দলের কেউ এই পোস্টারের সঙ্গে যুক্ত নন।
কিন্তু কেন 'পিকে-র টিমের দালাল' অভিযোগ? বিজেপি সূত্রে খবর, কিছুদিন আগেই একটি সাংগঠনিক বৈঠকে অমিতাভ নাকি বলেছিলেন যে বিজেপি-র বর্তমান রাজ্য কমিটি নিয়ে দরাজ সার্টিফিকেট দিয়েছেন পিকে-র সংস্থা আই প্যাকের এক কর্তা। দলের একটি ভার্চুয়াল বৈঠকে অমিতাভকে বলতে শোনা গিয়েছিল, পিকে’র টিমের এক সদস্য তাঁকে ফোনে বলেছেন, দলের সংগঠন পোক্ত আছে। কিছু পরিবর্তন সেখানে প্রয়োজন। তাতেই চাঙ্গা হবে রাজ্য বিজেপি। এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই অভিতাভর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠতে শুরু করে। কিন্তু সেটা ছিল দলের ভিতরেই। এ বার তা প্রকাশ্যে। ইতিমধ্যেই সংগঠনের ‘একজন’ দলের ক্ষতি করার চেষ্টা করছেন বলে সরব হয়েছেন বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। এই ‘একজন’ যে অমিতাভকে উদ্দেশ্য করেই বলা তা বুঝতে কারও অসুবিধা হচ্ছে না। তারপর থেকেই নানা জায়গায় পোস্টার পড়তে শুরু করেছে। বনগাঁ লোকাল থেকে কলকাতার রাজপথ এখন অভিতাভের পোস্টারে ছয়লাপ। সোমবার বিজেপি-র পক্ষ থেকে কলকাতার বিভিন্ন জায়গা থেকে পোস্টার সরিয়ে নেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে।