ফাইল চিত্র।
সবুজ আবিরে পূজালি পুরসভার যাওয়ার কালো পিচের রাস্তা প্রায় সবুজ হয়ে গিয়েছে। পুরসভার দোতলায় চেয়ারে গায়ে এলিয়ে বসে এক নাগাড়ে মোবাইলে কথা বলে চলেছেন ‘ভোট ম্যানেজার’ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক গৌতম দাশগুপ্ত। তাঁকে ঘিরে রয়েছেন সবুজ আবির মাখা সমর্থকরা।
ফোন নামিয়ে রেখে একগাল হেসে গৌতমবাবু বলেন, ‘‘সরাসরি ১২টা আসনে বিজয়ী হয়েছি। এখানে শেষ নয়। তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন বিজয়ী এক নির্দল প্রার্থী ও বিজয়ী কংগ্রেস প্রার্থী। তাহলে আমাদের আসন সংখ্যা ১৪।’’
কথা শেষ হতেই পুরসভায় এসে পৌঁছলেন নির্দল প্রার্থী রিঙ্কু নস্কর। সটান নিচে নেমে গিয়ে নতুন সদস্যকে স্বাগত জানাতে ছুটলেন গৌতমবাবু। নতুন সদস্য ও সমর্থকদের নিয়ে তিনি ছুটলেন ছোট বটতলা দলীয় অফিসে। সেখানে বিদায়ী চেয়ারম্যান ফজলুল হকের পায়ে হাত ছুয়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন ১০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী রিঙ্কু নস্কর।
চুপ করে বসে নেই বিজেপির ‘ভোট ম্যানেজার’ও। পার্টি অফিসে বসে নির্বাচনের ফল নিয়ে কাঁটাছে়ড়া করছেন বিজেপির দক্ষিণ ২৪ পরগনার (পশ্চিম মণ্ডল) সভাপতি অভিজিৎ দাস। মোট ভোটের হার অনুয়ায়ী শতাংশের হিসেব জুড়ছেন। তৃণমূল না সিপিএম, কোন দলের ঘর
ভাঙল? এ প্রশ্নের উত্তর দিলেন বিজেপির সমর্থকরা। তাঁদের দাবি, সিপিএমের সব ভোটই বিজেপির ঝুলিতে গিয়েছে। তিন প্রার্থী মিলিয়ে সিপিএমের সর্ব সাকুল্যে ১৩৭টি ভোট পাওয়ার তথ্য তাঁদের হিসেব ঠিক প্রমাণ করছে বলে দাবি।
এ দিকে একটি আসনে জয়ী হলেও স্বস্তিতে নেই কংগ্রেসের দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা নেতা শেখ মুজিবর রহমান। দলীয় প্রার্থী নিরুফার গাজি তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ঘটনা শোনার পর মুষড়ে পড়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, জয়ী প্রার্থী তৃণমূলে যোগ দিলে কংগ্রেস কর্মী ও সমর্থকদের মনোবল ভেঙে যাবে। সংগঠন ধরে রাখা মুশকিল হবে। কারণ এই প্রার্থীকে সামনে রেখেই আগামী দিনের লড়াই করার পরিকল্পনা ছিল। ’’
প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার পরেও আপাত দৃষ্টিতে বিচলিত নন সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা সম্পাদক শমীক লাহিড়ী। মাত্র ১৩৭টি ভোট পাওয়ার অন্য হিসেব করেছেন তিনি। শমীকবাবু বলেন, ‘‘যেখানে ভোট লুঠ হয়েছে, সেখানে ফল নিয়ে মন্তব্য করা উচিত নয়।’’ কিন্তু লুঠের মধ্যেও বিজেপি কী ভাবে দুটি আসন পেল? শমীকবাবুর দাবি, সিপিএমকে নিশ্চিহ্ন করতে বিজেপি ও তৃণমূল গোপনে একজোট হয়ে লড়াই করেছে।