মুখ্যমন্ত্রীকে রাজভবনে আলোচনায় বসার প্রস্তাব জগদীপ ধনখড়ের।
সকালের তীব্র ক্ষোভ বিকেলে বদলে গেল আলোচনার প্রস্তাবে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তনে ‘ধাক্কা’ খেয়ে, এ বার মুখ্যমন্ত্রীকে রাজভবনে এসে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বসার জন্য অনুরোধ জানালেন ‘ব্যথিত’ রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। শিক্ষা ক্ষেত্রে ‘জরুরি অবস্থা’ চলছে বলে আগেই অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। মঙ্গলবার যাদবপুরের ঘটনার পর সেই অভিযোগ ফের এক বার তুলে ধরেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করেন জগদীপ ধনখড়। সেখানেই, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজভবনে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।কেন তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে চান তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন সাংবাদিক বৈঠকে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘রাজ্যে শিক্ষা ক্ষেত্রে জরুরি অবস্থা চলছে। নৈরাজ্য দেখা দিয়েছে। কোনও নিয়ম মানা হচ্ছে না।’’ কী দেখে এমন সিদ্ধান্তে এলেন তিনি? যাদবপুরের ঘটনা উল্লেখ করে ধনখড় বলেন, ‘‘গত ২ দিন ধরে যে ধরনের ঘটনা ঘটছে তাতে আমি দুঃখিত ও ব্যথিত। এটা হওয়া উচিত ছিল না। বিশেষ সমাবর্তনে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সে জন্যই আমি গিয়েছিলাম। কিন্তু, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীদের একাংশ আমাকে ঢুকতেই দিলেন না। বিষয়টিতে আমি গভীর ভাবে ব্যথিত।’’
জগদীপ ধনখড়ের দাবি, শুধুমাত্র যাদবপুর নয়, এর আগে বর্ধমান-সহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়েও একই ঘটনা ঘটেছে। তাঁর অভিযোগ, সমাবর্তন-সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান থেকে নাম বাদ গিয়েছে স্বয়ং আচার্যেরই। এ দিন যাদবপুরের ঘটনাকে জুড়ে তাঁর অভিযোগের ওজনও বাড়ানোর চেষ্টা করেছেন তিনি। ‘সঙ্কট’ কাটানোর জন্য এ বার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকেই আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিলেন ধনখড়। মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি, আগামী ১৩ জানুয়ারি সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদেরও ডেকে পাঠিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: বিজেপি শাসিত কর্নাটকেই ‘ডিটেনশন ক্যাম্প’! মোদীর দাবি নস্যাৎ
আরও পড়ুন: বিক্ষোভের মুখে যাদবপুর ছাড়লেন রাজ্যপাল, আচার্যকে ছাড়াই সমাবর্তন
সোমবার ঘেরাওয়ের মুখে পড়ে ‘কাল সমাবর্তনে ফের আসব’ বলে জানিয়েছিলেন রাজ্যপাল। কিন্তু, পরিস্থিতির বদল হয়নি চব্বিশ ঘণ্টা পরেও। এ দিন তিনি ক্যাম্পাসে ঢুকতেই পাঁচ নম্বর গেটের কাছে তাঁর গাড়ি ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তৃণমূল সমর্থিত শিক্ষক ও কর্মী সংগঠনের সদস্যরা।কালো পতাকা হাতে নিয়ে ‘গো ব্যাক’ স্লোগানও দিতে শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা। অন্য দিকে পড়ুয়াদের একাংশও রাজ্যপালকে বয়কটের সিদ্ধান্ত নেন। ঘণ্টা দেড়েক পর ক্যাম্পাস ছাড়েন রাজ্যপাল। তবে, ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়েই গোটা বিষয়টিকে ‘প্রশাসনিক ব্যর্থতা’ ও ‘পরিকল্পিত’ বলে ব্যাখ্যা করেন তিনি।