পার্থ চট্টোপাধ্যায়
সাতসকালে রাজ্যের শিল্পমন্ত্রীর বাড়িতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর একটি দল এসেছিল। মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের খোঁজে তারা বাড়ির ভিতরে ঢোকে। সারা দিন কেটে যাওয়ার পর সন্ধ্যা নামলেও ইডির ওই দলটি পার্থের বাড়ি থেকে বেরোয়নি। সর্ব ক্ষণ পার্থের সঙ্গেই দেখা যায় এমন এক নিরাপত্তাকর্মী শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ জানিয়েছেন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে গেলেও ইডি আধিকারিকেরা পার্থের নাকতলার বাড়ি থেকে বেরোননি।
ওই নিরাপত্তাকর্মী জানিয়েছেন সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ মন্ত্রীর বাড়ির কলিং বেল বাজে। তাঁর কথায়, ‘‘সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ কলিং বেল বাজে। বেল শুনে ঘরের দরজা খুলেছিলেন পার্থবাবুর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক হোমগার্ড। তিনি দরজা খুলতেই দেখেন বাইরে আট জন মতো দাঁড়িয়ে রয়েছেন। আগন্তুকেরা জানান, তাঁরা ইডির লোক। এর পর তাঁদের এক জন ওই হোমগার্ডকে বলেন, ‘সরুন, ভিতরে যেতে দিন।’ এই বলেই ভিতরে ঢুকে আসেন ইডির লোকেরা।’’
মন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, ঘরে ঢুকে তদন্তকারীরা পার্থবাবুর খোঁজ করতে থাকেন। নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁদের জানান, পার্থবাবু উপরে ঘুমোচ্ছেন। ওই নিরাপত্তাকর্মীর কথায়, ‘‘এই শুনে পার্থবাবুকে ডেকে দিতে বলেন ইডির আধিকারিকেরা। সেই মতো হোমগার্ডেরা পার্থবাবুকে ডাকতে যান। তাঁরা ফিরে আসতেই ইডির এক আধিকারিক হোমগার্ডদের বলেন, ‘আমরা এখন উপরে (উপর তলায়) যাব। আপনারা নীচেই থাকবেন। আমরা না বলা পর্যন্ত কেউ উপরে উঠবেন না।’ ওঁরা (ইডির আধিকারিকেরা) সেই যে তখন উপরে উঠেছেন, এখনও নামেননি।’’
ইডির তদন্তকারীরা উপরতলায় গিয়ে পার্থকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করার পরেই অনিন্দ্যকিশোর রাউত-সহ মন্ত্রীর অন্য আইনজীবীরা বাড়িতে এসেছেন। তাঁরা এখনও মন্ত্রী ও তদন্তকারীদের সঙ্গে উপরেই রয়েছেন বলে জানিয়েছেন ওই নিরাপত্তাকর্মী। বিভিন্ন সূত্র মারফত খবর, বাড়িতে ইডির তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন পার্থ। পরে ভবানীপুুর থানার পুলিশের সঙ্গে এসএসকেএম-এর তিন জন চিকিৎসক এসেছিলেন তাঁর বাড়িতে। এক জন অর্থোপেডিক, এক জন মেডিসিন আর এক জন কার্ডিয়োর চিকিৎসক। পরে বিকেল ৪টে নাগাদ মন্ত্রীর বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান চিকিৎসকেরা। পার্থের ওই নিরাপত্তাকর্মী আরও জানিয়েছেন, পার্থের বাড়ির নীচে এখনও কেন্দ্রীয় বাহিনী রয়েছে। তবে বাড়ির বাইরে রয়েছে নেতাজি নগর থানার পুলিশ।
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ পার্থের আইনজীবী অনিন্দ্যকিশোরকে এক বার বাইরে আসতে দেখা গিয়েছে। তিনি নাকতলা থানার পুলিশকর্মীদের সঙ্গে কিছু ক্ষণ নিভৃতে কথাও বলেন। তার পর ফের মন্ত্রীর বাড়ির ভিতরে ঢুকে যান অনিন্দ্যকিশোর।