দুয়ারে রেশন নিয়ে ফের সম্মুখসমরে খাদ্য দফতর ও রেশন ডিলাররা। ফাইল চিত্র
দুয়ারে রেশন নিয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের সিদ্ধান্তের পর ফের সঙ্ঘাতের ইঙ্গিত দিলেন রেশন ডিলাররা। বৃহস্পতিবার নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, দুয়ারে রেশন প্রকল্প ভালো হওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত অর্থ, কমিশন হিসাবে দেওয়া হবে ২১ হাজার রেশন ডিলারদের। আগে প্রতি কুইন্টাল রেশন ডিলাররা ৯৫ টাকা কমিশন পেত। দুয়ারে রেশন চালু হওয়ায় আরও ৭৫ টাকা দেওয়া হত। এ বার সেই পাওনার সঙ্গে আরও ৫০০০ টাকা ফিক্সড কমিশন দেওয়া হবে। সঙ্গে ০.২ শতাংশ হারে হ্যান্ডলিং কস্ট দেওয়া হবে। হ্যান্ডলিং কস্ট অর্থাৎ রেশন বিলি করার সময় যে শস্য নষ্ট হয় তার কিছুটা ক্ষতিপূরণ হিসেবে মেটানো হবে।
মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর এমন সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন রাজ্যের রেশন ডিলারদের একাংশ। অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস ফেডারেশন রাজ্য সরকারের এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে। তাঁদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু বলেন, ‘‘মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, দুয়ারে রেশন প্রকল্পে কাজ করা হলে রেশন ডিলারদের পাঁচ হাজার টাকা করে অতিরিক্ত ফিক্সড কমিশন দেওয়া হবে। পাঁচ হাজার সঙ্গে হ্যান্ডলিং কস্ট ০.২ শতাংশ দেওয়া হবে। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের ও আশ্চর্যের বিষয় এই যে গত বছর ১৬ নভেম্বর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দুয়ারে রেশন প্রকল্পের সূচনার সময় তিনি ঘোষণা করেছিলেন, রেশন দোকান প্রতি ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। দু’টি কর্মচারী বাবদ।’’ ক্ষোভের সুরে তিনি আরও বলেন, ‘‘আজ খাদ্যমন্ত্রী ঘোষণা করলেন পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। প্রকল্প শুরুর নয় মাস পর বরাদ্দ ১০ থেকে কমে পাঁচ হয়ে গেল।’’
হ্যান্ডলিং কস্ট অর্থাৎ রেশন বিলি করার সময় রেশন ডিলাররা কুইন্ট্যাল পিছু ৬২৫ গ্রাম করে পেত। তাঁদের দাবি ছিল, কুইন্ট্যাল পিছু এক কেজি করে হ্যান্ডলিং কস্টের। কিন্তু তা কমে ০.২ শতাংশ হয়ে গিয়েছে। ২০১৬ সাল থেকে এই হ্যান্ডলিং কস্ট বন্ধ রাখা হয়েছিল। দীর্ঘ ছয় বছর এই হ্যান্ডলিং কস্ট বন্ধ রাখার পর আচমকাই তা ০.২ শতাংশ করে রেশন ডিলারদের ব্যাপক ক্ষতির মুখে ঠেলে দিয়েছে খাদ্য দফতর। তাই আগামী সোমবার অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস ফেডারেশন ডিলারদের নিয়ে আলোচনায় বসে এই সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কর্মসূচি নেবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।