শুভেন্দু অধিকারী এবং উদয়ন গুহ। —ফাইল চিত্র।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মোবাইল নম্বরে ‘একশো দিনের টাকা চাই’ বলে হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা পাঠিয়েছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তথা তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি উদয়ন গুহের পুত্রবধূ অপরূপা গুহ। অপরূপার অভিযোগ, তাঁর মোবাইল নম্বর সমাজমাধ্যমে ‘পোস্ট’ করে ওই বার্তার সমালোচনা করেন শুভেন্দু। অভিযোগ, তার পর থেকেই অপরূপার মোবাইল নম্বরে ফোন করে কটূক্তি করেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। মোবাইল ফোন ‘সুইচ অফ’ করতে বাধ্য হন তিনি। রবিবার সকালে বিষয়টি নিয়ে কলকাতার ফুলবাগান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মন্ত্রীর পুত্রবধূ।
এ দিন ওই ঘটনা নিয়ে অপরূপার বক্তব্যের ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ‘পোস্ট’ করেন মন্ত্রী উদয়ন। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি অসভ্য, অশিক্ষিতের দল। এক জন গৃহবধূর সঙ্গে কী ভাবে কথা বলতে হয়, জানে না। আসলে এদের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যাঁরা বলবেন, তাঁদের হয় সিবিআই-ইডি দিয়ে বা কুকথা বলে মানসিক ভাবে হেয় করাই এদের লক্ষ্য।’’
বিজেপি অবশ্য ওই অভিযোগে গুরুত্ব দিতে নারাজ। শুভেন্দু বলেন, ‘‘অনেক নম্বর থেকে আমার কাছে মেসেজ এসেছিল। আমি সে সব কিছু নম্বর দিয়েছি। যে সব নম্বর থেকে আমার কাছে মেসেজ এসেছিল সেই সব নম্বরের ছবি সমাজমাধ্যমে দেব। কাউকে ব্যক্তিগত ভাবে কিছু বলা হয়নি।’’ এ নিয়ে দু’পক্ষের চাপানউতোর শুরু হয়েছে। কিছু দিন আগে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছিলেন, যদি রাজ্য সরকারের কাছে ফাইলপত্র ঠিক থাকে তা হলে তিনি একটা ফোন করলেই কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দিয়ে দেবে। এর পরে রাজভবনের ধর্নামঞ্চ থেকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সুকান্তের ফোন নম্বর ঘোষণা করেন এবং সেই নম্বরে ফোন করে একশো দিনের কাজের টাকা চাওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করেন। একই ভাবে দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দুদের ফোন নম্বরও ছড়িয়ে দেওয়া হয় বলে বিজেপির অভিযোগ। বিজেপির আরও অভিযোগ, এই ফোন নম্বর ছড়ানোর কাজটা তৃণমূলই শুরু করেছিল। বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পদক দীপক বর্মণ বলেন, ‘‘তৃণমূলই চূড়ান্ত অসভ্যতা করেছে। ইট মারলে পাটকেল খেতে হয়।’’
অপরূপা জানিয়েছেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মঞ্চ থেকে ঘোষণা হওয়া দু’টি মোবাইল নম্বরের একটিতে তিনি ‘একশো দিনের টাকা চাই’ বলে লিখে পাঠান। সেই ফোন নম্বর ছিল শুভেন্দুর। তিনি সেই নম্বর-সহ আরও কয়েকটি মোবাইল নম্বর ফেসবুকে দিয়ে সমালোচনা করেন। অভিযোগ, সেখানে উল্লেখ করা হয়, ‘এরা ভাইপোর শাগরেদ’। অপরূপার অভিযোগ, শনিবার রাত সাড়ে ১০টার পর থেকে তাঁর মোবাইলে ফোন করে গালিগালাজ দেওয়া শুরু হয়। একের পর এক ফোনে একই ঘটনা ঘটতে থাকায় মোবাইল বন্ধ করে দেন তিনি। এ দিন সকালে ফের মোবাইল ‘সুইচ অন’ করার পরেও একই ঘটনাঘটতে থাকে।
অপরূপা বলেন, ‘‘কোনও খারাপ কথা উল্লেখ করিনি। ওই ঘটনার প্রতিবাদে এফআইআর করেছি, যাতে প্রশাসন শুভেন্দু অধিকারী ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় ।’’