মহম্মদ সেলিম। —ফাইল চিত্র
নতুন নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি ও আতঙ্কিত করার অভিযোগে বিজেপির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করার হুমকি দিলেন রায়গঞ্জের প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিম। ওই আইনের বিরুদ্ধে দলের তরফে বাড়ি বাড়ি প্রচারের কর্মসূচিও ঘোষণা করেন তিনি। সেলিম জানান, কেউ নাগরিকত্বের নথি দেখতে আসলে, বাসিন্দাদের তা না দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হবে। উল্টে বেকারদের শিক্ষাগত যোগ্যতার শংসাপত্রের প্রতিলিপি তাঁদের হাতে ধরিয়ে চাকরির দাবি জানানোর পরামর্শ দেওয়া হবে।
নতুন নাগরিকত্ব আইন, এনআরসি ও এনপিআর বাতিল এবং ‘জাতীয় বেকারপঞ্জির’ দাবিতে সোমবার দুপুরে রায়গঞ্জ স্টেশন লাগোয়া এলাকায় সমাবেশের আয়োজন করে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফ। সমাবেশে সেলিম ছাড়াও ডিওয়াইএফের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভয় মুখোপাধ্যায় বক্তব্য রাখেন।
সেলিম বলেন, ‘‘নতুন নাগরিকত্ব আইনের জেরে বাসিন্দারা নাগরিকত্ব হারানোর আশঙ্কায় ভুগছেন। আধার, রেশন বা ভোটার কার্ড, জমির নথি সংশোধনে হয়রানির শিকার হচ্ছেন তাঁরা।’’ তিনি জানান, তারই প্রতিবাদে দলের তরফে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ-সহ ওই দলের শীর্ষনেতাদের বিরুদ্ধে আদালতে শীঘ্রই মামলা দায়ের করা হবে।
সেলিমের দাবি, ‘‘বিজেপিকে দেশের এক জন বাসিন্দারও নাগরিকত্ব কেড়ে বাংলাদেশে পাঠাতে দেবে না সিপিএম। প্রয়োজনে দল রক্ত দিয়ে আন্দোলন করবে।’’ তাঁর দাবি, খুব শীঘ্রই সিপিএমের নেতা-কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করবেন।
সেলিমের অভিযোগ, রাজ্যে এনআরসি কার্যকর করতে তৃণমূল গোপনে বিজেপির সঙ্গে আঁতাত করেছে। তাঁর বক্তব্য, সংসদে নতুন নাগরিকত্ব আইন পাশের দিন তৃণমূল সাংসদেরা উপস্থিত ছিলেন না। তাতেই তৃণমূলের ভূমিকা স্পষ্ট হয়েছে। সেলিমের প্রশ্ন, ‘‘উদ্বাস্তুদের যদি নাগরিকত্ব না থাকে, তা হলে তাঁরা এত দিন কীসের ভিত্তিতে ভোট দিলেন?’’
জেলা বিজেপি সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ির বক্তব্য, ‘‘উনি বাসিন্দাদের ভুল বোঝাচ্ছেন। নতুন নাগরিকত্ব আইনের জেরে বৈধ বাসিন্দাদের কোনও সমস্যা হবে না।’’
জেলা তৃণমূল চেয়ারম্যান অমল আচার্যের কটাক্ষ, ‘‘রাজ্যের মানুষ সিপিএমকে প্রত্যাখান করেছে। তাই তৃণমূল সিপিএমের কোনও কথার গুরুত্ব দিচ্ছে না। সাড়ে তিন দশক ধরে রাজ্যে ক্ষমতায় থাকার পরেও কেনও রাজ্যে বেকারের সংখ্যা বেড়ে চলেছে, তা উনিই ভাল বলতে পারবেন।’’