বন্দে ভারত মিশনে ব্যবহার করা হয়েছে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানগুলিকে। —ফাইল চিত্র।
রাজ্য সরকারের আপত্তিতে আপাতত পশ্চিমবঙ্গে বন্দে ভারত কর্মসূচির উড়ান বন্ধ থাকলেও কেন্দ্র নিয়মবিধি বদলানোয় এখানেও তার আসার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়েছে। বন্দে ভারত ও বুদবুদ উড়ানের জন্য শনিবার নতুন নিয়মবিধি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তাতে বলা হয়েছে, বিদেশ থেকে ভারতে আসার আগে সব যাত্রীকেই কোভিড পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। সেই পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এলেই ভারতে আসার উড়ান ধরা যাবে।
সংশ্লিষ্ট শিবিরের বক্তব্য, নতুন নিয়ম ঘোষণার পরে পশ্চিমবঙ্গে বন্দে ভারতের উড়ান আসার পথ অনেকটা প্রশস্ত হতে চলেছে মূলত দু’টি কারণে। প্রথমত, এখন রাজ্যে নেমে সরাসরি বাড়ি চলে যাওয়া যাচ্ছে। নিজের টাকা খরচ করে সরকারি ব্যবস্থাপনায় নিভৃতবাসে থাকতে হচ্ছে না। দ্বিতীয়ত, রাজ্য সরকারেরই দাবি অনুযায়ী বিদেশ থেকে ওই উড়ান ধরার আগেই সব যাত্রীর করোনা পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
গত ২৪ মার্চ ভারত থেকে সব ধরনের আন্তর্জাতিক যাত্রী-উড়ান বন্ধ করে দেওয়ার পরে বহু ভারতীয় বিদেশে আটকে পড়েন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই শ্রমিক শ্রেণির মানুষ, যাঁরা ইতিমধ্যে বিদেশের চাকরিও খুইয়েছেন। স্বল্পমেয়াদি ভিসা ফুরিয়ে গিয়েছে অনেকের। এ ছাড়াও ভারতে আত্মীয়বিয়োগ বা স্বজনের জরুরি চিকিৎসার কারণে অনেক প্রবাসীরই দেশে ফেরা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। তাঁদের কথা ভেবেই প্রথমে বন্দে ভারত কর্মসূচিতে উড়ান চালু করে কেন্দ্র। প্রধানত এয়ার ইন্ডিয়াকে দিয়েই এই উড়ান শুরু হয়। পরে এতে যোগ দেয় বেসরকারি উড়ান সংস্থাও।
সম্প্রতি বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে চুক্তি করে দু’দেশের মধ্যে বুদবুদ উড়ানও চালু করা হয়েছে। সেই বন্দোবস্তে দু’দেশেরই উড়ান সংস্থা দুই দেশের মধ্যে যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করছে। এর ফলে ভারত থেকে জরুরি কাজে যাঁদের বিভিন্ন দেশে যাওয়া প্রয়োজন, তাঁরাও যেতে পারছেন।
বন্দে ভারত কর্মসূচির প্রথম পর্বে বঙ্গেও সেই উড়ান চালু হয়েছিল। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে বিদেশ থেকে যাত্রীরা এসে বাধ্যতামূলক ভাবে হোটেলে নিভৃতবাসে থাকার নিয়ম না-মানায় রাজ্য সরকার শেষ পর্যন্ত সেই উড়ান বন্ধ করে দেয়। ফলে দেশের অন্যান্য শহরে বন্দে ভারতের উড়ান এলেও সরাসরি কলকাতায় তা আসছিল না। বিপাকে পড়েছিলেন বিভিন্ন দেশে আটকে পড়া যাত্রীরা। এখন অবশ্য নিভৃতবাসের নিয়ম বদলে গিয়েছে। এখন বিদেশ থেকে কোভিড নেগেটিভ শংসাপত্র নিয়ে এলে সোজা বাড়িতে চলে যেতে পারছেন যাত্রীরা। সেখানে ১৪ দিনের জন্য নিভৃতবাসে থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে তাঁদের।