বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অমৃতা সিংহ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
আরও একটি বাড়ি ভাঙার নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। এ বার খাস কলকাতা শহরেই।
গত দেড়মাসে বিধাননগর পুরসভা এবং বালি পুরসভার কয়েকটি বাড়ি ভাঙার নির্দেশে দিয়েছিল হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এমনই একটি নির্দেশ দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘আমার বাড়িও হাওড়ায়, সেই বাড়ি বেআইনি হলে সেটিও ভেঙে দেওয়া হোক।’’ তার ২৪ ঘণ্টা পরেই হাই কোর্টের আর এক বিচারপতি অমৃতা সিংহও একই নির্দেশ দিলেন। শুক্রবার কলকাতায় একটি বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলতে বলেছেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, বিচারপতি সিংহ নির্দেশ দিয়েছেন, বাড়িটি ভেঙে ফেলার জন্য যত পুলিশ প্রয়োজন, তত পুলিশ নিয়ে যেতে হবে বাড়িটি ভাঙতে। যাতে কোনও ভাবেই কাজে বাধা না পড়ে।
কলকাতা পুরসভা এলাকার যে বাড়িটি ভাঙার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সিংহ সেই বাড়িটি একবালপুর এলাকার ৭৭ নম্বর ওয়ার্ডে। নির্মাণটি বেআইনি বলে জানিয়ে বিচারপতি সিংহ নির্দেশ দেন, ‘‘১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে ওই বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে হবে। যত পুলিশ প্রয়োজন, তত পুলিশ নিয়ে নিয়ে যেতে হবে ওই নির্মাণ ভাঙতে। প্রয়োজনীয় বাহিনী দিতে হবে বন্দর এলাকার ডিসিকে।’’
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার কিছুটা একই ধরনের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাই কোর্টের বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ও। লিলুয়ার একটি বাড়ি ভাঙার মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘একটিও বেআইনি নির্মাণ থাকা উচিত নয়। হাওড়ায় আমার বাড়ি রয়েছে। সেটিও যদি বেআইনি হয়, বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দিতে হবে।’’ একই সঙ্গে নির্মাণটি ভাঙার নির্দেশও দেন বালি পুরসভাকে। ২৯৫ স্কোয়ার মিটারের ওই বেআইনি নির্মাণ ২৯ নভেম্বরের মধ্যে ভেঙে ফেলতে বলে বিচারপতি বলেছিলেন, ভাঙার কাজে কেউ বাধা দিলে গ্রেফতার করবে লিলুয়া থানার পুলিশ।
এর আগেও পুজোর সময় বিধাননগর পুরসভার একটি বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। তবে বৃহস্পতিবারের নির্দেশটি প্রথমে দিয়েছিলেন বিচারপতি সিংহই। লিলুয়ার ওই নির্মাণ ভেঙে ফেলার মামলায় বিচারপতি সিংহের সিঙ্গল বেঞ্চের ওই নির্দেশ বহাল রেখেছিল ডিভিশন বেঞ্চও। কিন্তু পরে গত ৪ সেপ্টেম্বর ওই নির্মাণ ভাঙতে গিয়ে বাধা পান বালি পুরসভার লোকজন। পুলিশের সাহায্য ছাড়া ওই নির্মাণ ভাঙা সম্ভব নয় জানিয়ে এর পর আবার মামলা হয় কলকাতা হাই কোর্টে। বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানি হয় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে।
তিনি বিচারপতি সিংহের নির্দেশ বলবৎ করার বন্দোবস্ত করেছিলেন। এ বার বিচারপতি সিংহও বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মতোই আরও একটি বেআইনি নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ দিলেন।