Panihati Municipality Chairman Row

‘মমতা যখন বলেই দিয়েছেন...’, ববির সঙ্গে দেখা করে ইস্তফার ঘোষণা পানিহাটির পুরপ্রধানের

তৃণমূল সূত্রে খবর, পানিহাটি পুর এলাকার অমরাবতী মাঠ অবৈধ ভাবে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে মলয়ের বিরুদ্ধে। এই মর্মে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী একটি অভিযোগ পান।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৫ ২২:৪১
Share:
Malay Roy and Firhad Hakim

(বাঁ দিকে) মলয় রায়। ফিরহাদ হাকিম (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

‘মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছা’র কথা জানিয়ে পানিহাটি পুরসভার চেয়ারম্যানের পদ থেকে মলয় রায়কে ইস্তফা দিতে বলেছিলেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। মঙ্গলবার সেই নির্দেশ পাওয়ার পরেও ভেবেছেন মলয়। রাতে ফিরহাদের চেতলার বাড়িতে গিয়ে দেখা করে ইস্তফা দেওয়ার ঘোষণা করলেন তিনি। মন্ত্রীর বাড়ি থেকে বেরিয়ে পানিহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান জানান, দলের সর্বোচ্চ নেত্রীর নির্দেশই শিরোধার্য। তিনি তাঁর পদত্যাগপত্র মন্ত্রীকে দিয়েছেন। এসডিও-কেও পাঠিয়ে দেবেন।

Advertisement

নাগরিক পরিষেবা-সহ বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে পানিহাটি পুরসভার ভূমিকায় প্রশ্ন উঠছিল। সম্প্রতি স্থানীয় অমরাবতী মাঠের বড় অংশ আবাসন প্রকল্পের জন্য বিক্রির পরিকল্পনা নিয়ে বিতর্ক তীব্র হয়। শেষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেন। প্রায় ৮৫ বিঘার ওই মাঠ অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। এই সবের মধ্যে শাসকদলের শীর্ষ স্তর থেকে পানিহাটির পুরপ্রধানকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয় গত শনিবার। সূত্রের খবর, সেই নির্দেশ আসার পরেও সোমবার পর্যন্ত পদত্যাগ করতে রাজি হননি পুরপ্রধান মলয়। মঙ্গলবার বিধানসভায় তৃণমূলের মুখ‍্যসচেতক তথা পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষের ঘর থেকে মলয়কে ফোন করেন ফিরহাদ। জানান, তাঁকে দ্রুত পদত্যাগ করতে হবে। এর পর বেশ কয়েক ঘণ্টা পেরিয়ে যায়।

রাতে ফিরহাদের চেতলার বাড়িতে যান মলয়। মন্ত্রীর বাড়ি থেকে বেরিয়ে মলয় বলেন, ‘‘মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী পানিহাটির প্রধান হিসাবে আমার পদত্যাগপত্র চেয়েছেন। সেটা নিয়ে আমার সঙ্গে মন্ত্রীর (ফিরহাদ) কথা হয়েছে। মন্ত্রীও আজ (মঙ্গলবার) আমাকে ফোন করেছিলেন। তখন বলেছিলাম, সন্ধ্যাবেলায় (ফিরহাদের বাড়িতে) যাব।’’ মলয় জানিয়েছেন, মন্ত্রীর সঙ্গে প্রায় আধ ঘণ্টা কথা হয়েছে তাঁর। তার পর ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘দলের সর্বোচ্চ নেত্রী যখন বলেই দিয়েছেন, তখন স্বাভাবিক ভাবেই আমাকে তাঁর নির্দেশ পালন করতে হবে। মন্ত্রীকে পদত্যাগপত্র দিয়েছি। এসডিও-কেও পাঠিয়ে দেব (পদত্যাগপত্র)।’’

Advertisement

তৃণমূল সূত্রে খবর, পানিহাটি পুর এলাকার অমরাবতী মাঠ অবৈধ ভাবে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে মলয়ের বিরুদ্ধে। এই মর্মে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী একটি অভিযোগ পান। রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। ঘটনাক্রমে প্রশাসনের দেওয়া রিপোর্ট মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দেন মুখ্যসচিব। তার পরেই পুরপ্রধানের পদ থেকে মলয়কে সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মলয় জানাচ্ছেন, এই নির্দেশে তিনি ক্ষুব্ধ নন। আবার তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়েও বিস্তারিত কোনও ব্যাখ্যায় যাননি। তিনি বলেন, ‘‘ক্ষোভের কিছু নেই। এই যে তিন বছর পুরপ্রধানের কাজ করলাম, তাতে ববিদার (ফিরহাদ) অনেক সহযোগিতা আছে। আমাদের রাস্তাঘাট, আলো, সব কিছুর ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। ওঁর আশীর্বাদ নিয়ে যদি চলতে পারি, তা হলে পানিহাটি ভাল ভাবেই চলবে।’’

অন্য দিকে, শাসকদল সূত্রে জানা যাচ্ছে, মলয়ের জায়গায় পানিহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান হতে পারেন সোমনাথ দে। তিনি বর্তমানে পূর্ত দফতরে কাজ করছেন। এর আগে পানিহাটি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব সামলেছেন। অভিজ্ঞতা এবং প্রশাসনিক কাজের দক্ষতার বিচার করে তাঁকেই পরবর্তী পুরপ্রধান করা হতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement