প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল এবং বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র ।
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে চার ঘণ্টার সময় দিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তার মধ্যেই মামলাকারী টেট পরীক্ষার্থীর ইন্টারভিউ ও অ্যাপটিটিউড টেস্ট নিল পর্ষদ। শুক্রবার বেলা তিনটে পনেরো নাগাদ, অর্থাৎ বিচারপতির বেঁধে দেওয়া সময়ের পাঁচ মিনিট আগে ওই পরীক্ষার্থীর অ্যাপটিটিউড টেস্ট শুরু হয়। ইন্টারভিউ নেওয়া হয় ভিডিয়ো চালু করে। আগামী ১৮ ডিসেম্বর ওই পরীক্ষার্থীর ফলাফল এবং ভিডিয়োগ্রাফি আদালতকে জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
২০১৪ সালের ওই টেট পরীক্ষার্থীর নিয়োগ নিয়ে মামলা হয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে। তাঁর নাম পল্লব বারিক। তাঁর দাবি, পল্লব টেট পাশ করেননি বলে প্রথমে জানিয়েছিল পর্ষদ। কিন্তু গত বছর আবার তারা জানায়, পল্লব টেট পাশ করেছেন। শুধু তা-ই নয় ৯২ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন তিনি। পল্লব নিজের নম্বর জানতে পেরে এর পর চাকরির দাবিতে মামলা করেন কলকাতা হাই কোর্টে। আদালতের নির্দেশ ছিল, তাঁকে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। কিন্তু তার পরে দু’মাস পেরিয়ে গেলেও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ আদালতের সেই নির্দেশ কার্যকর করেনি।
শুক্রবার সেই কথা জানার পর দৃশ্যতই বিরক্ত হয়ে যান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি জানান, আদালতের নির্দেশ না মানলে অবমাননার মামলা করা হবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পালের বিরুদ্ধে। বিচারপতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘চার ঘণ্টার মধ্যে আদালতের নির্দেশ কার্যকর না করলে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পালের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করা হবে।’’
বিকেল ৩টে ২০ মিনিটের মধ্যে আদালতের পূর্ব নির্দেশ মানতে হবে বলেও নির্দিষ্ট করে দেন বিচারপতি। বিচারপতির দেওয়া সময়সীমার পাঁচ মিনিট আগেই পল্লবের অ্যাপটিটিউড টেস্ট এবং ইন্টারভিউ নেয় পর্ষদ।
তবে এই নির্দেশের পর পরীক্ষা দেওয়া নিয়ে সংশয়ে পড়তে হয় পল্লবকেও। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের পর পর্ষদের আইনজীবী পল্লবকে জানান, তৈরি থাকতে। আধ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর কাছে ফোন আসবে পর্ষদ থেকে। এর পরেই সংশয়ে পড়েন পল্লব। কারণ, পরীক্ষা দিতে যাওয়ার জন্য উপযুক্ত পোশাক নিয়ে আসেননি তিনি। সব কাগজপত্রও ছিল না। পল্লবের কাছে পর্ষদের তরফে ফোন আসার পর তিনি সে কথা পর্ষদকে জানান। কিন্তু তাঁকে বলা হয়, কোনও চিন্তা না করে সময় মতো সল্টলেকে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের দফতরে পৌঁছে যেতে। পোশাক বা কাগজপত্র নিয়েও চিন্তা করার দরকার নেই বলে পল্লবকে আশ্বস্ত করে পর্ষদ। এর পরেই কলকাতা হাই কোর্ট থেকে পর্ষদের উদ্দেশে রওনা হন পল্লব।