প্রতীকী ছবি।
নিয়ম আগেই ছিল। গত বছর কার্যত তা কেউ মানেনি। অভিযোগ, পুরসভার নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছিল কামারহাটির অধিকাংশ প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি। এ বার তাই কড়া নির্দেশিকা জারি করেছেন কামারহাটি পুর কর্তৃপক্ষ।
প্রতি দিন ল্যাবরেটরিগুলির ডেঙ্গি সংক্রান্ত রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা পুরসভায়। অভিযোগ, গত বছরে সে কাজই করেনি পুর এলাকার বেশির ভাগ ল্যাবরেটরি। সম্প্রতি রাজ্যের কয়েকটি পুরসভাকে ডেঙ্গি মোকাবিলায় কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
এর পরেই কয়েক দিন আগে একটি বৈঠক ডাকেন কামারহাটি পুর কর্তৃপক্ষ। এলাকার সব ল্যাবরেটরি, সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সেখানেই কড়া বার্তা শুনিয়েছেন কামারহাটির চেয়ারম্যান গোপাল সাহা। তাঁর কথায়, ‘‘ল্যাবরেটরিগুলির প্রতি দিন ডেঙ্গি সংক্রান্ত রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট পুরসভায় জমা দেওয়ার কথা। গত বছর দু’-একটি ল্যাবরেটরি ছাড়া কেউই সে নিয়ম মানেনি। তবে হাসপাতালগুলি নিয়মিত ডেঙ্গির রিপোর্ট পাঠাতো পুরসভায়।’’
যাঁরা এই নিয়ম মানবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে ওই বৈঠকে। এমনকী পুলিশেও অভিযোগ জানানো হবে। তবে পুরমন্ত্রীর চিঠির পরেই কি ডেঙ্গি মোকাবিলায় কড়া হচ্ছে পুরসভা? গোপালবাবুর দাবি, ‘‘কামারহাটি পুরসভা সম্পর্কে পুরমন্ত্রীর কাছে সুডার দেওয়া রিপোর্ট সন্তোষজনক। তা-ও মন্ত্রী যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। তবে মন্ত্রীর নির্দেশ আসার আগেই ডেঙ্গি মোকাবিলায় বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছি। নির্দেশের পরে আরও কড়া মনোভাব নেওয়া হচ্ছে।’’
কামারহাটি পুরসভার ৩৫টি ওয়ার্ডে ১৮টি ল্যাবরেটরি রয়েছে। পুরসভা সূত্রে খবর, ওই বৈঠকে কিছু ল্যাবরেটরির কর্তৃপক্ষ আসেননি। তাদের ফের চিঠি পাঠানো হয়েছে। চেয়ারম্যান পারিষদ (স্বাস্থ্য) বিমল সাহা বলেন, ‘‘যাঁরা বৈঠকে এলেন না তাঁরা অন্যায় করলেন। অসহযোগিতা করলে পুরসভা আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।’’ তিনি জানান, জেলাশাসকের নির্দেশে কামারহাটি ও বরাহনগর পুরসভার স্বাস্থ্য-কর্মীদের প্রশিক্ষণ শিবির শুরু হয়েছে।
কামারহাটি পুরসভা সূত্রের খবর, ২০১৬ সালে পুর এলাকায় ডেঙ্গিতে কোনও মৃত্যু হয়নি। আক্রান্ত ছিলেন ১৩০ জন। গত বছর ডেঙ্গি মোকাবিলায় যুক্ত ছিলেন ১৫ জন। এ বার আরও ৫০ জন কর্মী নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের ৬২টি দল ৩৫টি ওয়ার্ডে সমীক্ষা করছে। পুর এলাকার ডেঙ্গি পরিস্থিতি নজরে রাখতে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, স্যানিটারি ইনস্পেক্টর, চেয়ারম্যান পরিষদ, হেলথ অফিসারদের নিয়ে বিশেষ পর্যবেক্ষণ দলও তৈরি করা হয়েছে।