দিলীপ ঘোষের দলিলের প্রসঙ্গ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের দলিলের প্রসঙ্গ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। দিলীপের নাম না করে তাঁর প্রশ্ন, কেন এ ক্ষেত্রে বিজেপি নেতাকে গ্রেফতার করা হবে না?
বুধবার ঝাড়গ্রাম থেকে কলকাতা রওনা হওয়ার পথে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ঘর থেকে কারও দলিল পাওয়া গিয়েছিল। তখন তাঁকে গ্রেফতার করে নেওয়া হয়েছে। ঠিকই করেছে। কিন্তু এ বার বিজেপি নেতার দলিল কেন এমন একটা প্রতারকের ঘরে পাওয়া গেল? এ ক্ষেত্রে কেন ওই নেতাকে গ্রেফতার করা হবে না?’’
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে ধৃত ‘মিডলম্যান’ প্রসন্ন রায়ের বাড়ি থেকে দিলীপের বাড়ির দলিল উদ্ধার হয়েছে। সূত্রের খবর, শৌভিক মজুমদার নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় একটি জমি কিনেছেন দিলীপ। সেই দলিল পাওয়া গিয়েছে প্রসন্নর বাড়িতে। দিলীপ নিজেও বাড়ি কেনার বিষয়টি অস্বীকার করেননি। ওই খবর প্রকাশ্যে আসতেই মেদিনীপুরের বিজেপি সাংসদকে গ্রেফতারের দাবি তুলেছে তৃণমূল। বুধবার মমতার মুখেও একই দাবি শোনা গেল।
মঙ্গলবার একই প্রশ্ন তুলেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতিকে গ্রেফতারির দাবি তুলেছিলেন তিনি। এ প্রসঙ্গে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণও করেছিলেন অভিষেক। নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ টেনে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ বলেছিলেন, ‘‘পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে তল্লাশি অভিযানের সময় অর্পিতার নামে দলিল পাওয়া গিয়েছে। সে কারণে অর্পিতার বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। প্রসন্ন রায়ের বাড়িতেও দিলীপ ঘোষের দলিল পাওয়া গিয়েছে। তা হলে দিলীপের বাড়িতে কেন তল্লাশি চালানো হল না?’’
অভিষেক আরও বলেন, ‘‘কিছু দিন আগে এক সাক্ষাৎকারে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন, যাঁরা দোষী, তাঁরা শাস্তি পাবেন। তা হলে তা সুনিশ্চিত করুন। দিলীপকে কেন গ্রেফতার করা হবে না? আদালতের কাছে প্রশ্ন রাখছি।’’
বুধবার মমতার বক্তব্য প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমি তো লুকিয়ে কিছু করিনি। ব্যাঙ্ক থেকে লোন নিয়েছি। ব্যাঙ্কে আমার বাড়ির দলিল রয়েছে। ওঁর (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) নেতাদের মতো লুকিয়ে করিনি। পার্থবাবু কি জানিয়েছিলেন কাউকে, তিনি কোথায় ফ্ল্যাট কিনেছেন?’’ একই সঙ্গে দিলীপ ঘোষ জানান, তাঁর বিরুদ্ধে চাইলে রাজ্য সরকার তদন্ত করতে পারে। তাঁর কথায়, ‘‘ওঁর হাতে তো ক্ষমতা আছে। আমার পিছনে সিআইডি লাগান, তা হলেই দুধ আর জল পরিষ্কার হয়ে যাবে।’’