—ফাইল চিত্র
শনিবার থেকে ফের ফুলবাড়ি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পাথর বাংলাদেশে যাওয়া শুরু হল।
ফুলবাড়ি ওয়েলফেয়ার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন ও শুল্ক দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বেশ কয়েক গাড়ি ভারতীয় পাথর বোঝাই ট্রাক বাংলাদেশে গিয়েছে। যদিও ভারতীয় ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা তাঁদের কাছ থেকে পাথর নিতে চাইছেন না। তুলনায় ভুটানের পাথরের প্রতি তাঁরা বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বাংলাদেশের পঞ্চগড় আমদানি-রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদি হাসান বাবলা। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ভারতীয় পাথর আমদানিতেই বেশি আগ্রহী। অনেক ব্যবসায়ীকেই অগ্রিম অর্থ দিয়ে রেখেছি।’’
একই সঙ্গে অবশ্য ভারতীয় পাথরের দাম কমানোর আবেদন জানান বাবলা। তিনি বলেন, ‘‘ভুটানের পাথর আমদানি করলে আমাদের বাংলাদেশ সরকারকে কোনও আমদানি শুল্ক দিতে হয় না। অথচ ভারতীয় পাথর আমদানি করলে টন প্রতি শুল্ক দিতে হয়। ফলে সেই পাথরের দাম বেশি পড়ে। তাই ভারতীয় ব্যবসায়ীরা দাম কমালে আমাদের সুবিধে হয়।’’
বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা ভারতের পাথর নিতে চাইছে না কেন? ভারত ও বাংলাদেশ দুই দেশের ব্যাবসায়ীদের একাংশ জানায়, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা ভারতীয় পাথরের দাম দেন প্রতি টন ১০ ডলার।
ফুলবাড়ি ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রসেনজিৎ দাস জানান, তবে ওই ১০ ডলারের সঙ্গে আলাদা করে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা আরও ৪ ডলার বাড়তি দেন। অর্থাৎ এক টন পাথরের জন্য ভারতের ব্যবসায়ীরা পান ১৪ ডলার বা প্রায় ৯৮০ টাকা। ভারত থেকে আমদানি করা পাথরের জন্য বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের প্রতি টন পাথরে ৫৩ শতাংশ কর দিতে হয়। সেই হিসেবে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের প্রতি টন ভারতীয় পাথরের জন্য ১৪৯৯ টাকা খরচ হয়।
পঞ্চগড় আমদানি-রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের এক কর্তা জানান, ভুটান ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বৈত কর পরিহার চুক্তি কার্যকর আছে। ফলে ভুটান থেকে পাথর আমদানি করলে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের কোনও কর দিতে হয় না। ভুটান থেকে পাথর কিনলে টন প্রতি ১৯ ডলার বা ১৩৩০ টাকা দাম দেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। তাই খরচ কম পড়ে। ফুলবাড়ি ওয়েলফেয়ার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক রূপম ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আশা করছি সমস্যা মিটিয়ে সোমবার থেকে বন্দর স্বাভাবিক হবে।’’ জলপাইগুড়ির জেলাশাসক অভিষেক তিওয়ারি বলেন, ‘‘অতিরিক্ত পাথর নিয়ে যাতে কোনও ট্রাক বাংলাদেশে যেতে না পারে, সে জন্য পদক্ষেপ করা হয়েছে। সমস্যা মেটাতে আমরা সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছি।’’