ভেজাল ঘি বিপজ্জনক: রিপোর্ট

নামেই গাওয়া ঘি। তাতে যে ঘি নেই, গোদুগ্ধের নামগন্ধও নেই, সে-কথা আগেই মৌখিক ভাবে জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় গবেষণাগার। এ বার তাদের লিখিত রিপোর্টে জানানো হল, ওই ঘি ‘বিপজ্জনক’, ওই ঘি ‘নিম্ন মানের’।

Advertisement

সুরবেক বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৭ ০২:৫৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

নামেই গাওয়া ঘি। তাতে যে ঘি নেই, গোদুগ্ধের নামগন্ধও নেই, সে-কথা আগেই মৌখিক ভাবে জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় গবেষণাগার। এ বার তাদের লিখিত রিপোর্টে জানানো হল, ওই ঘি ‘বিপজ্জনক’, ওই ঘি ‘নিম্ন মানের’। গবেষণায় প্রমাণিত, ওটা ‘ভেজাল ঘি’। ওতে ঘি নেই, আছে বনস্পতি।

Advertisement

কিড স্ট্রিটের ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অব ইন্ডিয়ার সেন্ট্রাল ফুড ল্যাবরেটরির অধিকর্তা অমিতাভকৃষ্ণ অধিকারীর সই করা রিপোর্ট ১৮ মে ইবি-র দফতরে পাঠানো হয়েছে। ওই ঘিয়ের নমুনা নদিয়ার ফুলিয়ার ঘোষপাড়ার একটি কারখানা থেকে সংগ্রহ করেছিল রাজ্য পুলিশের এনফোর্সমেন্ট শাখা (ইবি)। দু’টি নামী সংস্থা ওই কারখানার ঘি কিনে নিজেদের মোড়কে বাজারে বিক্রি করে বলে ইবি জেনেছে। দোকানে ওই দু’টি ব্র্যান্ডের ঘিয়ের দাম ৫০০-৫২০ টাকা কিলোগ্রাম। রোজ আড়াইশো-তিনশো কেজি ঘি তৈরি হয় ফুলিয়ার ওই কারখানায়।

কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের রিপোর্ট বলছে, তথাকথিত ওই গাওয়া ঘি শুধু ভেজালই নয়, বিপজ্জনকও। অর্থাৎ যে-কোনও সময়ে ওটা খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা প্রবল।

Advertisement

রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১১ সালের খাদ্য সুরক্ষা ও গুণমান বিধিতে যে-মান নির্দিষ্ট করা আছে, ওই ঘিয়ের মান তার চেয়ে খারাপ। এ ক্ষেত্রে প্রধান মাপকাঠিগুলির পরীক্ষায় অস্বাভাবিক ফল বেরিয়ে এসেছে। যাতে বোঝা যাচ্ছে, ওটা ভেজাল ঘি। ২০০৬ সালের খাদ্য সুরক্ষা ও গুণমান আইন অনুযায়ী ওই ঘি নিম্ন মানের এবং বিপজ্জনক।

পরীক্ষায় ভেজাল ঘিয়ের বিপদ ধরল কেন্দ্রীয় গবেষণাগার। রিপোর্টের অংশ।

ইবি সূত্রের খবর, এ বার ফুলিয়ার ওই কারখানার মালিকদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট আইনে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হবে। যে-দু’টি নামী সংস্থা ওই কারখানার ঘি কিনে নিজেদের মোড়কে বাজারে বিক্রি করছে, তাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। ইবি-র বক্তব্য, ঘিয়ের উৎপাদক ঘোষপাড়ার ওই কারখানা হলেও ওই দু’টি সংস্থার মোড়কে বিক্রি হচ্ছে বলে তারা দায় অস্বীকার করতে পারে না। এ-সব ক্ষেত্রে অন্য জায়গা থেকে ঘি কিনলেও পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করে সন্তুষ্ট হলে তবেই নিজেদের মোড়কে সেটা বাজারে আনার কথা।

গত ৩ মে ঘোষপাড়ায় ঘিয়ের ওই কারখানায় হানা দেয় ইবি। অবশ্য সেখানে একটি পরীক্ষাগার দেখে কিছুটা চমকেও যান দুই অফিসার। তাঁদের বলা হয়, উৎপাদিত ঘি পরীক্ষা করে দেখে তবেই বিক্রি করা হচ্ছে। তাঁরা কেবল এক কেজি ঘি ভর্তি দু’টি শিশি বাজেয়াপ্ত করে ফিরে আসেন। ইবি এখন বুঝতে পারছে, ওই পরীক্ষাগার লোকদেখানো।

সেই ঘিয়ের নমুনা ৩ মে কেন্দ্রীয় গবেষণাগারে পাঠানোর সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যের গবেষণাগারেও পাঠিয়েছিল ইবি। তার রিপোর্ট এখনও আসেনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement