প্রতীকী ছবি
একশোয় একশো পাশ তো হয়ইনি। উচ্চ মাধ্যমিকে তুলনায় নম্বরও কম পেলেন বিপুল সংখ্যক ছাত্রছাত্রী। গত বছরের সঙ্গে তুলনায় ‘ও’, ‘এ+’, ‘এ’ গ্রেড পাওয়া পড়ুয়ার সংখ্যাও বেশ কম। অন্য দিকে, গত বারের তুলনায় ৫৫ হাজারেরও বেশি ছাত্রছাত্রী পাশ করেছেন ‘বি’ গ্রেড পেয়ে।
‘ও’ গ্রেড অর্থাৎ ৯০% থেকে ১০০% পেয়েছেন ৯০১৩ জন পড়ুয়া। গত বছর সংখ্যাটা ছিল ৩০,২২০। ‘এ+’ গ্রেড অর্থাৎ ৮০% থেকে ৮৯% পেয়েছেন ৪৯,৩৭০ জন। গত বছর পেয়েছিলেন ৮৪,৭৪৬ জন। এ বার ‘এ’ গ্রেড অর্থাৎ ৭০% থেকে ৭৯% পেয়েছেন ৯৫,৭৫৮ জন। গত বছর পেয়েছিলেন ৯৬,৮২৫ জন। ‘বি+’ গ্রেড অর্থাৎ ৬০% থেকে ৬৯% পাওয়া পড়ুয়ার সংখ্যা এ বার ১,৬৫,১৮৬। গত বার ১,১০,২৬৫ পরীক্ষার্থী এই গ্রেড পেয়েছিলেন।
শিক্ষা শিবিরের মতে, এর ফলে কলেজে ভর্তির হাহাকার কিছুটা কমবে। রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর জানিয়ে দিয়েছে, অতিমারি আবহে কোনও রকম প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া যাবে না। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নিতে হবে শেষ পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে।
সর্বভারতীয় বোর্ডগুলির পড়ুয়ারা বরাবরই বেশি নম্বর পান। আশঙ্কা, এ বার সেই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে রাজ্যের তথাকথিত নামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগ আসন তাঁরাই ভরাবেন। তবে লেডি ব্রেবোর্ন কলেজের অধ্যক্ষা শিউলি সরকার জানান, যে-হেতু কোনও বোর্ডই এ বার চূড়ান্ত পরীক্ষা নেয়নি, তাই ভর্তির ক্ষেত্রে তাঁরা দশম শ্রেণির ফলকেই বেশি গুরুত্ব দেবেন।
মৌলানা আজাদ কলেজের অধ্যক্ষ শুভাশিস দত্ত জানান, ছাত্রছাত্রীরা অনলাইনে একসঙ্গে কয়েকটি কলেজে ভর্তির জন্য আবেদন করেন। পছন্দের কলেজ না-পেলে অন্য একটি বা দু’টি কলেজে ভর্তি হয়ে যান। পছন্দের কলেজে সুযোগ পাওয়ার অপেক্ষায় থাকেন। এ ভাবে একাধিক কলেজে তাঁরা আসন ‘ব্লক’ করে অর্থাৎ আটকে রাখায় অন্য অনেক পড়ুয়া ভর্তির সুযোগই পান না। এ বার সেই প্রবণতা কিছুটা কমবে বলে শুভাশিসবাবুর মত। তিনি বলেন, ‘‘যে-হেতু বেশি নম্বর পাওয়া পড়ুয়ার সংখ্যা তুলনায় কম, তাই সিট ব্লক করে রাখার প্রবণ তা কমবে বলেই মনে হয়।’’
ক্যানিং বঙ্কিম সর্দার কলেজের অধ্যক্ষ তিলক চট্টোপাধ্যায়ও জানান, প্রতি বছর তুলনায় কম নম্বর পাওয়া পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে পছন্দের কলেজে ভর্তি নিয়ে হাহাকার শুরু হয়। এ বার অন্য রকম ফলের জন্য সেটা কমবে। পড়ুয়ারা হয়তো সকলেই ভর্তির সুযোগ পেয়ে যাবেন। মহেশতলা কলেজের অধ্যক্ষা রুম্পা দাসেরও বক্তব্য, কম নম্বর পাওয়া পড়ুয়ারা এ বার কিছুটা সহজে কলেজে ভর্তির সুযোগ পাবেন। কারণ ‘ও’, ‘এ+’, ‘এ’ গ্রেড পাওয়া ছাত্রছাত্রীরা বিভিন্ন নামী কলেজে সুযোগ পেয়ে যাবেন।