দিঘা উপকূলে প্রশাসনের তরফে মাইকে চলছে প্রচার। — নিজস্ব চিত্র।
সমুদ্রের বুক চিরে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’। ঝড়ের সম্ভাব্য গতিবেগ বাংলাদেশের অভিমুখে হলেও তার প্রভাব পড়বে এই বাংলার উপকূল এলাকাতে। সে জন্যই সতর্ক রয়েছে বাংলার প্রশাসন। শুক্রবার দিনভর পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার বকখালিতে সমুদ্রস্নানে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। যাতে কেউ সমুদ্রে নেমে পড়তে না পারেন, সে জন্য উপকূলে চলছে নজরদারি। করা হচ্ছে মাইক প্রচার।
শুক্রবার সকাল থেকেই মেঘে ঢাকা আকাশ দিঘায়। তবে সমুদ্র অপেক্ষাকৃত শান্ত। যে রূপ দেখে অনেকেই বলছেন, ঝড়ের আগের নিস্তব্ধতা। তবে কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নয় প্রশাসন। তাই চলছে নাগাড়ে মাইক প্রচার। কোনও পর্যটককেই সমুদ্রে নামতে দেওয়া হচ্ছে না। দিঘায় দিনভর সেই নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। সকালে বাতাসে হাওয়ার বেগ ছিল এলোপাথাড়ি। গতিবেগ ছিল ভালই। কিন্তু বেলা বাড়তেই বাতাসের গতি স্তিমিত হয়ে এসেছে বলে জানা যাচ্ছে।
বিকেলে দিঘা-সহ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অধিকাংশ এলাকায় আকাশ সামান্য মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়া থাকলেও ভারী বৃষ্টিপাতের কোনও খবর নেই। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক বলেন, “আবহাওয়া দফতরের আগাম সূচনা পেয়েই দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা প্রশাসন। ভারী বৃষ্টি-সহ যে কোনও রকম প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য জেলা প্রশাসন পুরোদস্তুর তৈরি। তবে এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও বিপর্যয়ের খবর নেই।”
শুক্রবার ভোর থেকে কয়েক দফায় বৃষ্টি হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ-সহ সুন্দরবন উপকূলীয় এলাকায়। সকাল থেকে দমকা বাতাস বইছে। এই জেলাতেও মৎস্যজীবীদের জন্য সতর্কতা জারি করেছে মৎস্য দফতর। আগামী দু’দিন এই এলাকায় জলে নামবে না কোনও জলযান। পূর্ব মেদিনীপুরে সমুদ্রে অপেক্ষাকৃত শান্ত থাকলেও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় উত্তাল হয়ে উঠছে নদী, সমুদ্র। উপকূলীয় জেলাগুলিতে বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। জারি হয়েছে কমলা সতর্কতা। যদিও কোথাওই ভারী বৃষ্টির খবর নেই। বিক্ষিপ্ত ভাবে ভিজছে কাকদ্বীপ, বকখাল-সহ বিভিন্ন এলাকা। বইছে ঝোড়ো হাওয়াও।
অন্য দিকে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্যোগ মোকাবিলার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সেচ দফতরের আধিকারিকদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, ব্লক অফিস এবং পঞ্চায়েতগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে। নদী ও সমুদ্র বাঁধগুলির উপর নজর রাখা হচ্ছে। পরিস্থিতির উপর প্রতিনিয়ত নজর রাখছে প্রশাসন।