প্রশাসন সাধারণ মানুষের কথা ভাবছে না বলে মন্তব্য করলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর। হুগলি জেলায় বেআইনি টোটো গাড়ি চলাচল সংক্রান্ত আদালত অবমাননার একটি মামলায় বৃহস্পতিবার ওই মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি।
আইনজীবী রামেশ্বর ভট্টাচার্য জানান, ২০০৪ সালে চুঁচুড়ায় তাঁর মক্কেল গৌতম মিশ্র-সহ কয়েক জন অটোরিকশা মালিক জনস্বার্থে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার আবেদনে তাঁরা জানান, চুঁচুড়া ও লাগোয়া এলাকায় কমবেশি চার হাজার টোটো চলাচল করছে। পরিবহণ দফতর থেকে ওই সব টোটো-র লাইসেন্স দেওয়া হয়নি। তাদের নথিভূক্তকরণও হয়নি। টোটো-র যাত্রীরা দুর্ঘটনায় পড়লে তাঁরা কোনও ক্ষতিপূরণ পাবেন না বিমা সংস্থাগুলি থেকে।
কলকাতা হাইকোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র হুগলির জেলাশাসক ও পরিবহণ দফতরকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, বেআইনি টোটো-র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। সেই সময় হুগলির জেলাশাসক ছিলেন সঞ্জয় বনশল। কিন্তু আদালতের নির্দেশ হুগলি জেলা প্রশাসন কার্যকর করেনি বলে আইনজীবী রামেশ্বরবাবু জানান। সেই কারণে আদালত অবমাননার একটি মামলা দায়ের হয় প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুরের ডিভিশন বেঞ্চে।
আইনজীবী জানান, দু’সপ্তাহ আগে মামলাটি শুনানির জন্য উঠলে প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দেন, হুগলির প্রাক্তন জেলাশাসক সঞ্জয় বনশলকে আদালতে হাজির হতে।
সেইমতো এ দিন ওই আইএএস অফিসার আদালতে হাজির হন। তাঁর আইনজীবী অমল সেনের কাছে প্রধান বিচারপতি জানতে চান, কী কারণে আদালতের নির্দেশ কার্যকর হয়নি। অমলবাবু জানান, আদালতের নির্দেশ কার্যকর করা হবে। তা শুনে প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘‘প্রশাসনের লজ্জিত হওয়া উচিত।’’ একই সঙ্গে প্রধান বিচারপতি জানান, আদালতের নির্দেশ কার্যকর করতে গিয়ে প্রশাসন কিছু টোটো বাজেয়াপ্ত করবে। তার পরে ফের সেই সব টোটো রাস্তায় চলাচল করবে। টোটো দুর্ঘটনায় পড়লে যাত্রীরা বিমার টাকাও পাবেন না বলে আদালত এ দিন পর্যবেক্ষণ করে।
প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন, মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২৮ এপ্রিল।