মেদিনীপুর শহরে অধীর চৌধুরী। নিজস্ব চিত্র
মেদিনীপুরে এসে একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীকে বিঁধলেন লোকসভার কংগ্রেস দলনেতা অধীর চৌধুরী। পাশের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দুই তৃণমূল সাংসদ যে নতুন নাগরিকত্ব আইনের ভোটাভুটিতে যোগ দেননি সেটাও মনে করিয়ে দিলেন তিনি।
শুক্রবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা যুব কংগ্রেসের ডাকে মেদিনীপুরে শহরের সভায় এসেছিলেন অধীর। তাঁর বক্তৃতা বড় অংশ জুড়েই নিশানায় ছিল তৃণমূলের দিদিকে বলো কর্মসূচি। অধীরের দাবি, দিদিকে বলোকে সামনে রেখে প্রতারণা করছে রাজ্যের শাসক দল। দিদিকে বলে সমস্যার সমাধান হয়েছে, তাঁর কাছে এমন কোনও প্রমাণ কেউ দিলে তিনি সাংসদ পদ থেকে পদত্যাগ করবেন বলেও দাবি করেন অধীর। সভায় তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘জঙ্গলমহল হাসছে স্লোগান এখন বাদ হয়েছে। এখনকার স্লোগান দিদিকে বলো। দিদি বলেছে, আমাকে বলো। দিদি কিন্তু এ কথা বলেনি, আমাকে বললে আমি শুনব।’’ তৃণমূলের পঞ্চায়েতগুলি দুর্নীতির আখড়া হয়ে গিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন এই কংগ্রেস সাংসদ।
শুক্রবার শহরের গাঁধীমূর্তির পাদদেশের সভায় এসে মেদিনীপুরের ইতিহাসও স্মরণ করিয়ে দেন অধীর। তাঁর কথায়, ‘‘মেদিনীপুর মানেই বিপ্লব, বিদ্রোহ, প্রতিবাদ, আন্দোলন। এখানেই ক্ষুদিরাম বসু, এখানেই মাতঙ্গিনী হাজরা। মেদিনীপুরের মানুষকে আন্দোলন কী, আন্দোলন কেন, এ সব শেখাতে হয় না।’’ লোকসভার কংগ্রেস দলনেতার দাবি, ‘‘দিদির মতো নরেন্দ্র মোদীও মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে। প্রতিদিন ৩১ জন চাষি আত্মহত্যা করছে ভারতে। বেকারত্বের হার বেড়ে চলেছে। সরকার বলছে, অনুপ্রবেশকারী চিহ্নিত করব। অনুপ্রবেশকারী চিহ্নিত করে কোথায় পাঠাবে, কোথায় রাখবে, কি খাওয়াবে, তা সরকার বলছে না। কেউ জানেও না।’’ কংগ্রেস যতদিন ক্ষমতায় ছিল ভারতে সংখ্যালঘুদের জীবনে কোনও উপদ্রব আসেনি বলেও দাবি করেন অধীর।
পূর্ব মেদিনীপুরের অধিকারী- পরিবারও এই কংগ্রেস সাংসদের নিশানায় ছিল। অধীরের খোঁচা, ‘‘সংসদে ভোট হচ্ছে এনআরসি- র বিরুদ্ধে। দিদির দলের ৮ জন সাংসদ সেখানে নেই। এরমধ্যে মেদিনীপুরের এক বিপ্লবী (শিশির অধিকারী), তার ব্যাটাও (দিব্যেন্দু অধিকারী) আছে। তারা সেখানে হাজির হয়নি। হাজির না হয়ে তারা নরেন্দ্র মোদীর হাত শক্ত করেছে।’’ প্রধানমন্ত্রীকে ‘চা-কুমার’, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে ‘চপ- কুমারী’ বলেও কটাক্ষ করেছেন তিনি।